ঈদ ও পূজায় তিন স্তরের নিরাপত্তা

আসন্ন দুর্গাপূজা ও ঈদুল আজহা উপলক্ষে বন্দরনগরে তিন স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করছে পুলিশ। পূজা ও ঈদের ছুটিতে বাসাবাড়িতে নিরাপত্তার জন্য পাড়া-মহল্লায় থাকবে পুলিশের টহল। যানজট নিরসনের জন্য রাস্তায় থাকবে অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশ। পাশাপাশি চামড়া পাচার রোধেও থাকবে টহল। পুলিশ কর্মকর্তাদের দাবি, ঈদুল ফিতরের সময়ও নগরে বড় ধরনের অঘটন ঘটেনি। এবারের ঈদেও সাফল্যের সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখবে পুলিশ প্রশাসন।

এদিকে যুদ্ধাপরাধের মামলার রায়, সরকারের শেষ সময়, লালখান বাজার মাদ্রাসায় বোমা বিস্ফোরণ, জামায়াত শিবিরের তাণ্ডবসহ নানা ইস্যুতে দুর্বৃত্তরা সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছে। এ কারণেও এবার নিরাপত্তা জোরদার করছে পুলিশ।

মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) বনজ কুমার মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, পূজা ও ঈদকে ঘিরে নগরে তিন স্তরের নিরাপত্তাবলয় তৈরি করা হচ্ছে। নিয়মিত বাহিনীর পাশাপাশি অতিরিক্ত পুলিশ থাকবে টহলে। প্রত্যেক আবাসিক এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। কোনো অঘটন নজরে এলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানাবেন তাঁরা।

বনজ কুমার আরও বলেন, ঈদে রাস্তার ওপর পশুর হাট বসানোয় যানজট লেগে থাকে। এ যানজট নিরসনের জন্যও ট্রাফিক পুলিশ কাজ করবে। এ ছাড়া চামড়া পাচার রোধে মহাসড়ক ও সীমান্ত এলাকায়ও পুলিশের টহল থাকবে।

পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদে প্রায় ছয় থেকে সাত লাখ লোক নগর ছেড়ে যান গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে। বাসাবাড়ি থাকে ফাঁকা। এ সুযোগে চোর, ডাকাত, ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যায়। বিশেষ করে গ্রিলকাটা চোর চক্র সক্রিয় হয়ে ওঠে। এ ছাড়া ঈদে ছিনতাইকারী, মলম পার্টি, অজ্ঞান পার্টি ও জালনোট কারবারিরাও সক্রিয় হয়। গত সেপ্টেম্বর মাসে হালিশহর থানা পুলিশ চার মলম পার্টির সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। ঈদ সামনে রেখে তাঁরা হাতিয়া ও ভোলা থেকে চট্টগ্রাম এসেছেন বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার অনিন্দিতা বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঈদ ও পূজাকে ঘিরে নগরে গোয়েন্দা পুলিশের বিশেষ দল মাঠে থাকবে। সাদা পোশাকেও পুলিশের দল ছিনতাইকারীদের ধরতে ফাঁদ পাতবে। এ ছাড়া ঘুরমুখো যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য রেল ও বাস স্টেশনেও সাদা পোশাকের পুলিশ থাকবে।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বনজ কুমার আরও বলেন, প্রত্যেক পূজামণ্ডপে ৫০০ করে পুলিশ ও আনসার সদস্য থাকবে সার্বক্ষণিক। এ ছাড়া নগরীর বন্দর, কাস্টমস, আদালত ভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। তিন স্তরের নিরাপত্তার মধ্যে নগরীর প্রবেশপথ, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নজরদারিতে রাখা হবে।