হাজি সেলিমকে দায়মুক্তি দিল দুদক

হাজি সেলিম
হাজি সেলিম

সরকারি সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করে বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ থেকে ঢাকা-৭ আসনের স্বতন্ত্র সাংসদ ও মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক হাজি মো. সেলিমকে দায়মুক্তি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা না পেয়ে অভিযোগটি নথিভুক্তির (অব্যাহতি) মাধ্যমে নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
দুদক সচিব মাকসুদুল হাসান খানের সই করা এক চিঠিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন ও সংসদ সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের অব্যাহতির বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘ চার বছরের অনুসন্ধান শেষে সম্পত্তি দখলের অভিযোগ থেকে দায়মুক্তি পেলেও এ সাংসদের বিরুদ্ধে দুদকের করা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলা চলছে।
দুদক সূত্র জানিয়েছে, রাজধানীর গ্রিন রোডে (৫ গ্রিন স্কয়ার) অবস্থিত একটি ভবনের মালিক সৈয়দ কাসেম আলীর কাছ থেকে তার একমাত্র মেয়ে সৈয়দা নাহিদা কাসেম আলী ওয়ারিশসূত্রে মালিকানা পান। স্বাধীনতার পর ভবনটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিশ্রামাগার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। পরবর্তী সময়ে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ১৯৮৬ সালে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে।
সূত্র আরও জানায়, ভবনটির মালিকানা দাবি করে ১৯৯২ সালে এ বিষয়ে মামলা দায়ের করেন জনৈক মো. শফিকুল্লাহ। তার দাবি ছিল, নাহিদা কাসেম তাঁর কাছে সম্পত্তি বিক্রির কথা বলে বেশ কিছু টাকা নিলেও জমিটি বুঝিয়ে দেননি। আদালতের আদেশে জমিটির মালিকানা পান শফিকুল্লাহ, যদিও নাহিদা কাসেমকে আদালত খুঁজে পাননি। পরবর্তীতে শফিকুল্লাহর পক্ষ থেকে আমমোক্তার নিযুক্ত হয়ে মো. ইব্রাহিম মিয়া নামের এক ব্যক্তি ১৯৯৮ সালে সম্পত্তিটি হাজি সেলিমের কাছে বিক্রি করেন। সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণ করে হাজি সেলিমের প্রতিষ্ঠান মদিনা গ্রুপ।

হাজি সেলিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর দুদকের অনুসন্ধানের সময় জমিটির সংশ্লিষ্ট কাউকেই খুঁজে পায়নি সংস্থাটি। জানা গেছে, মো. শফিকুল্লাহ বর্তমানে সপরিবারে কানাডায় রয়েছেন। আর ইব্রাহিম মিয়া ২০১৪ সালে মারা যান। নাহিদা  কাসেম আলীর কোনো খোঁজও পাওয়া যায়নি।
দীর্ঘদিন ধরে সরকারি দলের নেতা ও প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ নথিভুক্তির মাধ্যমে দায়মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থেকে দায়মুক্তি দেওয়া হয় বাগেরহাটের সাবেক পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানকে। মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলেও দুদকের একজন মহাপরিচালক ও পরিচালক অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। গত কয়েক মাসে দায়মুক্তি পেয়েছেন মিল্ক ভিটার ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুর রহমানসহ সাতজন, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক, সরকারদলীয় সাংসদ এনামুল হক, আসলামুল হক, শামীম ওসমান, সাইমুম সারোয়ার কমল, সাবেক সাংসদ এইচ বি এম ইকবাল, পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান হোসেন মনসুর প্রমুখ।