জঙ্গি আস্তানায় অভিযান ও আটকের ঘটনায় মামলা

রাজধানীর মিরপুর-১এ জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের প্রায় ২২ ঘণ্টা পর এই ঘটনায় রাজধানীর শাহ আলী থানায় একটি মামলা হয়েছে। শাহ আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিন মন্ডল প্রথম আলোকে এ কথা জানিয়েছেন।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, মামলায় পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। অবশ্য অভিযানস্থল থেকে ছয়জনসহ মোট সাতজনকে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। ভবন থেকে আটক ছয়জনের মধ্যে অবশ্য চারজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়েছে। এই চারজন ওই ভবনের আস্তানার পাশের ফ্ল্যাটে থাকত। মামলা হওয়া পাঁচজনের মধ্যে তিনজন গ্রেপ্তার আছেন। আর দুজনকে পলাতক দেখানো হয়েছে। পাশের ফ্ল্যাটের চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হতে পারে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

গত বুধবার মধ্য রাত থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল চারটা পর্যন্ত মিরপুর-১এর ৯ নম্বর সড়কের ৩ নম্বর বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। ভবন থেকে ছয়জনকে আটক করে পুলিশ। এর আগে বুধবার একজনকে আটক করা হয়, যাঁর কাছ থেকে তথ্য নিয়ে এই অভিযানটি পরিচালনা করা হয়। অভিযানে হাতে তৈরি ১৬টি গ্রেনেড (আইইডি-ইম্প্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস), দুটি ককটেল, বোমা বা গ্রেনেড রাখার একটি বিশেষ জ্যাকেট ও গ্রেনেড তৈরির প্রচুর উপকরণ উদ্ধার করা হয়েছে।

আজ সকালে প্রথম আলোকে পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, আটক সাতজনের মধ্যে অন্তত তিনজন জেএমবির গুরুত্বপূর্ণ নেতা। এঁদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেভাবে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আদালতে নিয়ে প্রত্যেকের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হবে। কত দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে, এখনো তা চূড়ান্ত হয়নি বলে জানান ওই কর্মকর্তা। অন্যান্য আসামিদের চেয়ে বেশি দিন রিমান্ড চাওয়া হবে। তিনি বলেন, আশা করছি, এঁদের কাছ থেকে জেএমবির বর্তমান তৎপরতার বিষয়ে তথ্য পাওয়া যাবে। সে অনুযায়ী এই জঙ্গি সংগঠনটির বিরুদ্ধে বড় পরিসরে অভিযান চালানো হবে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কর্মকর্তারা বলছেন, আগের রাতের একজনসহ আটক মোট সাতজনের মধ্যে তিনজন নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীনের (জেএমবি) গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। অন্য চারজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়েছে। এই চারজন পাশের ফ্ল্যাটে থাকত।

অবশ্য আটক জেএমবির তিন সদস্যের নাম-ঠিকানা প্রকাশ করেনি পুলিশ। ডিবির কর্মকর্তারা কেবল বলেছেন, তিনজনই বয়সে তরুণ। এঁদের মধ্যে একজন গ্রেনেড তৈরির মূল কারিগর।

তাঁর বাড়ি উত্তরবঙ্গে। তাঁরা ওই বাসাটি গ্রেনেড ও বোমা তৈরির কারখানা হিসেবে ব্যবহার করছিলেন। সেখানে লেদ মেশিনের যন্ত্র থেকে শুরু করে গ্রেনেড তৈরির প্রচুর সরঞ্জাম ও বিস্ফোরক পাওয়া গেছে, যা দিয়ে অন্তত ২০০ গ্রেনেড তৈরি করা সম্ভব।