জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে ভয় দেখানো ঠিক নয়

.
.

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে ভয় না দেখাতে বিজ্ঞানী ও গবেষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। দেশের কৃষিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে জিএম (জিনগতভাবে পরিবর্তিত) ফসলকে সরকার গুরুত্ব দেবে বলেও তিনি জানান। গতকাল শনিবার বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের সমাপনী দিনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মতিয়া চৌধুরী এসব কথা বলেন।
রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী শস্যবিমার সমালোচনা করে বলেন, বেশ কয়েকটি পাইলট (পরীক্ষামূলক প্রকল্প) গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে শস্যবিমা সফল হচ্ছে না। ফলে এ ধরনের কার্যক্রমের ব্যাপারে সরকার আগ্রহী নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সম্মেলনের সমাপনী দিনের অধিবেশনে টেকসই ও জলবায়ুঘাত-সহিষ্ণু কৃষি বিষয়ে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এ কে এম এনামুল হক ও সাবেক সচিব জহুরুল করিম। তাঁরা বলেন, দেশের টেকসই কৃষির জন্য বৃষ্টিপাতের ধরন বদল, লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়াসহ জলবায়ু পরিবর্তনের নানা প্রভাব বাধা হিসেবে কাজ করছে। তাঁরা জলবায়ুঘাত-সহিষ্ণু কৃষিব্যবস্থা গড়ে তোলাকে আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেন। তাঁরা ১৫ দিন আগে বন্যা ও খরার পূর্বাভাসব্যবস্থা গড়ে তোলারও পরামর্শ দেন। এ ছাড়া পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলার উপযোগী ফসলের জাত উদ্ভাবনের ওপরে তাঁরা জোর দেন।
এ ছাড়া গত দুই দিনে চারটি কারিগরি অধিবেশনে দেশের কৃষি অর্থনীতি বিষয়ে ২৩টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কৃষি অর্থনীতিবিদেরা। সারা দেশ থেকে মোট ৫০০ জন কৃষি অর্থনীতিবিদ এই সম্মেলনে যোগ দেন। সম্মেলন কমিটির আহ্বানে ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (ইফপ্রি) ভারত শাখার গবেষণা ফেলো অবিনাশ কিশোর একটি গবেষণা প্রবন্ধ তুলে ধরেন।
অবিনাশ কিশোর বলেন, বাংলাদেশের কৃষির অনেক সফলতা আছে, যেগুলো থেকে ভারত ও নেপাল শিক্ষা নিচ্ছে। আবার ভারত ও নেপালের কৃষি থেকেও বাংলাদেশের অনেক শিক্ষা নেওয়ার সুযোগ আছে। এই অঞ্চলের কৃষি উন্নয়নে আঞ্চলিক সহযোগিতার ওপরে জোর দেন তিনি।
সমাপনী অধিবেশনে সভাপতির বক্তব্যে সরকারের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য অধ্যাপক শামসুল আলম জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা ও টেকসই কৃষিকে সমন্বিতভাবে দেখার আহ্বান জানান।