বাধায় ৮৩ জন মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি

সরকার ও সরকারি দলের বাধার কারণে দলের ৮৩ জন প্রার্থী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। আজ বুধবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ অভিযোগ করেন। 

রিজভী বলেন, ৮৩ জনের মধ্যে কেবল বাগেরহাট জেলায়ই ৩০ জন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রয়েছেন। আরও চার-পাঁচজনকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্যও অনেককে প্রাণনাশের হুমকি অব্যাহত আছে।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী গতকাল মঙ্গলবার বিভিন্ন স্থানে বিএনপির প্রার্থীদের মারধর, মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধা দেওয়ার ঘটনার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ধুলিয়া ইউপিতে বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুল জব্বার মৃধার সমর্থকদের আওয়ামী লীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা মারধর করে। হামলায় অন্তত ৫০ জন আহত হয়। এদের মধ্যে আটজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ সময় সন্ত্রাসীরা দুটি মোটরসাইকেল জ্বালিয়ে দেয়।
একইভাবে বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর ইউপিতে বিএনপির প্রার্থী আবিদুর রহমানের সমর্থক সরোয়ারকে সন্ত্রাসীরা ধরে উপজেলা নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে নিয়ে যায়। তিনি বিএনপির প্রার্থীর সমর্থনপত্রে সই করেননি—সেখানে তাঁকে এ কথা বলতে বাধ্য করা হয়। পিরোজপুরের তেলিখালী ইউনিয়নে মির্জা গোলাম কিবরিয়া ও দলের নেতা আতিকুর রহমানকে মারধর করে মনোনয়নপত্র ছিনিয়ে নিয়েছে সন্ত্রাসীরা। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিরাজুল ইসলাম এ হামলার নেতৃত্বে ছিলেন বলে দাবি করেন রিজভী।
রিজভী অভিযোগ করেন, ফেনীর ফুলগাজী উপজেলায় বিভিন্ন ইউপিতে বিএনপির প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে দিচ্ছে না ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীরা। নির্বাচন কমিশন কার্যালয় ঘিরে রেখে তারা বিএনপির প্রার্থীদের মারধর করে তাড়িয়ে দিচ্ছে।
রিজভী বলেন, ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনের মডেল অনুসরণ করে ইউপি নির্বাচনেও ভোট ডাকাতিসহ আওয়ামী লীগ ক্যাডার ও পুলিশের যৌথ তাণ্ডবের আলামত শুরু হয়ে গেছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ভোটারবিহীন সরকার এবং তার দোসর নির্বাচন কমিশন ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের যে মডেল খাড়া করেছে, পরবর্তীকালে প্রতিটি নির্বাচনে তা নিখুঁতভাবে অনুসরণ করে যাচ্ছে। ইউপি নির্বাচনেও ভোট ডাকাতিসহ বিএনপির প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলে বাধা, নেতা-কর্মীদের বাড়িঘরে হামলা এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য প্রার্থীদের প্রাণনাশের হুমকি অব্যাহতভাবে চলছে।
রিজভী প্রশ্ন তোলেন, নির্বাচনকালীন পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচন কমিশনের কর্তৃত্বেই থাকে। তার পরও প্রশাসন ও পুলিশের সহায়তায় কী করে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা নির্বাচনকে ঘিরে বাধা সৃষ্টি ও তাণ্ডব চালাতে পারে?