শক্তিশালী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সামাজিক সুরক্ষায় বড় নিয়ামক

উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সামাজিক সুরক্ষার ক্ষেত্রে রাজস্ব আদায়ের সক্ষমতা, সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা, রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রধান কয়েকটি নিয়ামক। উন্নয়নশীল দেশগুলো প্রবৃদ্ধি অর্জন ও দারিদ্র্য দূরীকরণে ভালো করলেও অসাম্য কমানোর ক্ষেত্রে তা করতে পারে না।
রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক ইন সেন্টারে গতকাল বৃহস্পতিবার এক সেমিনারে এ তথ্য তুলে ধরেন নেদারল্যান্ডসের ইরাসমুস বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল স্টাডিজের (আইএসএস) শান্তি ও সংঘর্ষের অর্থনীতি বিষয়ের অধ্যাপক সৈয়দ মানসুব মুর্শেদ। ‘উন্নয়নশীল দেশে সামাজিক সুরক্ষার রাজনৈতিক অর্থনীতি’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তিনি। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) তাদের নিয়মিত আয়োজনের অংশ হিসেবে সেমিনারটির আয়োজন করে।
অধ্যাপক সৈয়দ মানসুব মুর্শেদ তাঁর উপস্থাপনায় বলেন, শক্তিশালী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সামাজিক সুরক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় বাড়ানোর ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখে। সম্পদ বা রাজস্ব আহরণের সক্ষমতা ও দক্ষতা থাকায় ধনী দেশগুলো সামাজিক সুরক্ষায় বিনিয়োগ ও ব্যবস্থাপনা ঠিকমতো করতে পারে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি সামাজিক সুরক্ষা খাতে ব্যয় বাড়ানোর ক্ষেত্রে অন্যতম বাধা। তিনি বলেন, বেশি ঋণগ্রস্ত দেশ সামাজিক সুরক্ষায় সেভাবে নজর দিতে পারে না।
অর্থনীতির এ অধ্যাপক দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে শিক্ষায় বিনিয়োগের ওপর বেশি গুরুত্ব দেন। তাঁর মতে, সামাজিক সুরক্ষা খাতে ব্যয় ঠিকমতো করা না হলে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি হয় না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধির সংকট থাকলে এ খাতে মনোযোগ দিতে পারে না সরকারগুলো। দক্ষ মানবসম্পদ সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি চিন্তাধারা, কর্মক্ষমতা ও পেশাগত দক্ষতাকে চিহ্নিত করেন।
সৈয়দ মানসুব আরও বলেন, অসমতা অর্থনীতিকে অর্থনৈতিক সংকটের দিকে ধাবিত করে। আবার অসমতার ভেতরে সংঘর্ষের বীজ রোপিত অবস্থায় থাকে। অনেক সময় সামাজিক অস্থিরতা তৈরি হয় অসমতার কারণে।
বিআইজিডির নির্বাহী পরিচালক সুলতান হাফিজ রহমানের সভাপতিত্বে ওই সেমিনারে আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক আসিফ সাহান, নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, ব্র্যাকের মির্জা হাসান, শাহনেওয়াজ হোসেন প্রমুখ।