সাম্প্রতিক হত্যার দ্রুত, কার্যকর তদন্ত চায় যুক্তরাষ্ট্র

নিশা দেশাই বিসওয়াল
নিশা দেশাই বিসওয়াল

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক নৃশংস হত্যার ঘটনায় কার্যকর ও দ্রুত তদন্ত করে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল।
গতকাল বুধবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ও সচিব মো. শহিদুল হকের সঙ্গে বৈঠকে দিশা দেশাই এই আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তিনি সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার কথা বলেন।
নিশা দেশাই গতকাল সকালে ঢাকায় আসেন। সকালেই রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলীর সঙ্গে এবং দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহিদুল হকের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় নিশার সঙ্গে ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট, ডেপুটি হেড অব মিশন ডেভিড মিল, পলিটিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কাউন্সেলর আন্দ্রে ব্রুইলেট-রদ্রিগেজ।
বৈঠক শেষে দুই পক্ষের কেউ এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেননি। তবে নিশা দেশাই পরে টুইটারে লিখেছেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সচিবের সঙ্গে জঙ্গিবাদ মোকাবিলা ও দ্বিপক্ষীয় অংশীদারত্ব নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে।
এ বৈঠকের পর নিশা দেশাই নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করবেন। এর আগে সকালে মানবাধিকারকর্মীদের সঙ্গে কথা বলবেন। দুপুরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বৈঠক হবে।
একাধিক কূটনৈতিক সূত্রে জানা যায়, ঢাকায় সমকামীদের অধিকার রক্ষা কর্মী ও মার্কিন সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডির কর্মকর্তা জুলহাজ মান্নান ও তাঁর বন্ধু মাহবুব তনয় হত্যার পরিপ্রেক্ষিতে এখানে সন্ত্রাসবাদ ও মুক্তমত চর্চার স্বাধীনতার বিষয়ে মাঠের বাস্তবতা জানতে-বুঝতে বিশেষ দায়িত্ব নিয়ে এসেছেন নিশা দেশাই। গতকাল পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সচিবের সঙ্গে বৈঠকে নিশা দেশাই জুলহাজ হত্যাসহ সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মীয় সংখ্যালঘু, ব্লগার, বিদেশি নাগরিক হত্যা ও হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এসব ঘটনার ধীরগতির তদন্ত ও বিচার-প্রক্রিয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন। তিনি জুলহাজ হত্যার দ্রুত তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে জঙ্গিবাদ শিকড় গাড়ার আগেই তা মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পাশে থাকবে এবং একসঙ্গে কাজ করবে বলে জানান। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জঙ্গিবাদের বিষয়ে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি এবং অবিলম্বে এসব ঘটনার তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আশ্বাস দেওয়া হয়।
এর আগে গত ২৮ এপ্রিল বিকেলে ঢাকার কলাবাগানে জুলহাজ মান্নানসহ দুজনকে হত্যার পর ওই রাতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টেলিফোন করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। তিনি ওই হত্যার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে খুনিদের বিচারের মুখোমুখি করতে শেখ হাসিনাকে অনুরোধ করেন। টেলিফোনে জন কেরি বলেছিলেন, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা-সংক্রান্ত সহযোগিতা আরও এগিয়ে নিতে নিশা দেশাই বিসওয়ালকে বাংলাদেশে পাঠানো হবে।