'ছাত্রশিবিরের' দুজনকে কুপিয়েছে ছাত্রলীগ

ছাত্রশিবিরের ক্যাডার সন্দেহে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রকে কুপিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। আজ শনিবার বেলা সোয়া দুইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহত ছাত্রদের উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
আহত ছাত্রদের নাম জি এম সাইফুল ইসলাম ও সুজাত হোসেন। তাঁরা দুজনই ইতিহাস বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর পরীক্ষা দিচ্ছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও হাটহাজারী পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, আজ শনিবার জি এম সাইফুল ও সুজাত হোসেনের পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা শেষে বেলা দুইটার দিকে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের সামনে আসেন। ওখানে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ১৫ থেকে ২০ জন নেতা-কর্মী অপেক্ষা করছিলেন। তাঁরা সাইফুল ও সুজাতকে আটক করে জীববিজ্ঞান অনুষদের বিজ্ঞান ওয়ার্কশপের সামনে নিয়ে যায়। সেখানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁদের কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দুজনকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যায়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রের চিকিৎসক টিপু সুলতান প্রথম আলোকে বলেন, আহত দুজনের সারা শরীরে কোপানোর চিহ্ন রয়েছে। তাঁদের আঘাত গুরুতর হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
হাটহাজারী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, দুজন ছাত্রকে কোপানোর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়ে। এ বিষয়ে এখনো কারও কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পাইনি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ইতিহাস বিভাগের দুজন ছাত্রকে একদল ছাত্র মারধর করেছে বলে খবর পেয়েছি। তবে তাঁরা কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত কি না জানা নেই। আহত ছাত্রদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পেলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবে।
আহত সাইফুল ও সুজাতকে যথাক্রমে ছাত্রশিবিরের ‘সদস্য’ ও ‘সাথী’ উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির সভাপতি আলমগীর টিপু প্রথম আলোকে বলেন, এই দুজন শিবিরের ক্যাডার রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বিশ্ববিদ্যালয়য় ছাত্রলীগের কর্মীদের বিভিন্ন মামলা দিয়ে পরীক্ষা দিতে দেওয়া হচ্ছে না। অথচ শিবিরের কর্মীরা দিব্যি পরীক্ষা দিচ্ছে, ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে। এ কারণে তাঁদের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে দুজনকে মারধর করা হয়েছে।
কোপানোর বিষয়ে জানতে চাইলে আলমগীর টিপু বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। কোপানোর কথা জানি না।’
আহত দুজনের বিষয়ে জানতে ফোন করা হলে শিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মুঠোফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।