আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও জমি দখলে নিতে বালু ভরাট

উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জমি দখলে নিতে বালু ভরাটের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য এই ভরাটকাজ করছেন বলে অভিযোগ।

উপজেলার ব্রাহ্মণগাঁও মৌজার তিনটি খতিয়ানে ২ দশমিক ৩৪ একর জমি বিক্রি ও আকার-আকৃতি পরিবর্তন না করার জন্য বিবাদীদের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের আদেশ রয়েছে। এই সম্পত্তিতে এ-সংক্রান্ত একাধিক গণবিজ্ঞপ্তির সাইনবোর্ড থাকলেও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা তা মানছেন না। তাঁরা জমিতে বালু ফেলছেন। এ ঘটনায় জমির মালিক দড়িকান্দি এলাকার মৃত আশরাফ উল্লাহর ছেলে মোশারফ হোসেন জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও রূপগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

ওই লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, মেসার্স আশমিনা ফেব্রিকস প্রা. লিমিটেড নামে একটি আধুনিক টেক্সটাইল মিল স্থাপনের জন্য মোশারফ হোসেন পাকা ভবন নির্মাণ করেছেন। ওই ভবনের পাশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমিতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে মুড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ আলমাছ এবং ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য রেহেনা আক্তারের নির্দেশে বালু ফেলা হচ্ছে। এর মাধ্যমে আশমিনা ফেব্রিকসের সম্পত্তিও ভরাট করে দখলে নেওয়ার পাঁয়তারা চলছে। আলমাছ বাহিনীর লোকজন এলাকায় প্রকাশ্যে শটগান নিয়ে ঘোরাফেরা করছেন। তিনি এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।

লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, নারায়ণগঞ্জের মাসদাইর এলাকার মো. সোহাগ উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমিসহ স্যামরন পেপার মিলের মালিক মোহাম্মদ হোসেনের কাছ থেকে ৮৭ শতাংশ জমি গত ২৪ আগস্ট কিনে নেন। এরপর তিনি ওই জমি ভরাটের দায়িত্ব দেন মুড়াপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান আলমাছ ও ইউপি সদস্য রেহেনাকে।

জমির মালিক মোশারফ হোসেন প্রথম আলোকে অভিযোগ করে বলেন, তিনি এই পৈতৃক সম্পত্তি প্রায় ৭৫ বছর ধরে ভোগদখল করে আসছেন। কিন্তু ওই সম্পত্তি দখলে নিতে জোর করে বালু ভরাট করছেন আলমাছ। এতে বাধা দিলে হত্যা, ডাকাতি, চাঁদাবাজি মামলায় জড়ানোর হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সম্পত্তির আশপাশে আলমাছের সন্ত্রাসী বাহিনী প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরা করে। সন্ধ্যা নামলেই ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে বালু ভরাট শুরু হয়। ভোররাতে মেশিন বন্ধ হয়। তিনি পরিবার নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ আলমাছ প্রথম আলোকে বলেন, ‘মোশারফ হোসেনের সঙ্গে জমি নিয়ে সোহাগ নামের এক ব্যক্তির বিরোধ রয়েছে। আমি মোশারফ হোসেনকে তাঁর জমির কাগজপত্র নিয়ে বসতে বলেছিলাম। কিন্তু তিনি না বসে বিভিন্ন জায়গায় আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিচ্ছেন। মোশারফ হোসেনের কোনো জায়গাই নেই।’

মহিলা ইউপি সদস্য রেহানা আক্তারের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়ায় এ বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলা যায়নি।

রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বালু ভরাটকাজ বন্ধ করে দিয়েছে। পুলিশ চলে আসার পর রাতে বালু ফেলা হতে পারে।