মানব লোগো

বন্ধুসভা মানব লোগো, ছবি– হাসান মাহমুদ
বন্ধুসভা মানব লোগো, ছবি– হাসান মাহমুদ

৫ তারিখ খুব সকালে যখন অফিস ভবনের পাশ দিয়ে মূল মাঠের দিকে এগোলাম, রাস্তার দুই ধারে তখন দেয়ালিকার সারি। বন্ধুরা খুব ভোরেই তাদের নিজেদের দেয়ালিকার জায়গা বুঝে নিয়েছেন। কত বিচিত্র রং,পরিকল্পনার ছবি, কাজের ছবি, কবিতা, ছড়া। আর নিচে নিজেদের বন্ধুসভার নামটা খুব বড় করে সাজিয়ে লেখা। হঠাৎ সামনে চোখ আটকে গেল। রাশেদা কে চৌধুরী? সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা। তিনি দেয়ালিকার লেখাগুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়ছেন। সঙ্গে ওই বন্ধুসভার বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলছেন। মূল মাঠে প্রবেশ করতেই বাঁ পাশে দেখি দন্ত্যস রওশন। অনুকাব্যের জনক। তিনি বায়োস্কোপ দেখছেন। বন্ধুসমাবেশে বায়োস্কোপ। তিনি বায়োস্কোপে চোখ রেখেছেন আর পাবনা বন্ধুসভার বন্ধু জুয়েল তখন বায়োস্কোপের পর্দা ঘোরাতে ব্যাস্ত। পেছনে বন্ধুদের লম্বা লাইন। বন্ধুরা জানালেন, তাঁরা এই বায়োস্কোপটিকে পাবনা থেকে প্রথমে বাসের ছাদে করে, পরে লেগুনার ছাদে করে এখানে নিয়ে এসেছেন। এই বায়োস্কোপের মধ্যেই তাঁদের কবিতা, ছবি, পরিকল্পনা—সবকিছুই। একটু এগোতেই একটা বড় ধাক্কা খেলাম। মাঠের মাঝখানে একটা বড় জটলা, ভেতরে দুজন অসুস্থ রক্তমাখা রোগী। একটা অ্যাম্বুলেন্স থাকা সত্ত্বেও এঁরা এখানে কেন, এটা বুঝতে একটু সময় লাগল। পরে জানলাম, এঁরা আসলে বরিশালের বন্ধু। ‘সড়কে মৃত্যুর মিছিল বন্ধ করো’ স্লোগানের প্লাকার্ড হাতে নিয়ে বরিশাল বন্ধুসভার কল্লোল দাস ও কুমার কাঁকন উজ্জ্বল বন্ধুদের সচেতন করার চেষ্টা করছেন। এগোতেই দেখি বন্ধুসভার মানব লোগো তৈরি হবে, এটা তারই প্রস্তুতি। ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুরা তখন ব্যস্ত মানব লোগোর আকার-আকৃতি ঠিক আছে কি না, পূর্বের নির্ধারিত নকশা অনুযায়ী সবাই দাঁড়িয়েছেন কি না এটা দেখতে। এরই ফাঁকে পাবনার বন্ধু হাসান মাহমুদ ততক্ষণে ঠিকই পতাকা স্ট্যান্ড বেয়ে বেয়ে ওপরে উঠে গেছেন একটা ক্লিক দেওয়ার জন্য।