মাকসুদুল আহসানের চিত্রকর্ম প্রদর্শনী

বাংলাদেশ ও ভারতের শিল্পীদের এবং তাঁদের শিল্পের সমন্বয় ঘটাতেই বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে ‘কনটেম্পরারি আর্ট অব বাংলাদেশ–ইন্ডিয়া’ শীর্ষক ১২ দিনব্যাপী চিত্রশিল্প প্রদর্শনী শেষ হলো ২১ নভেম্বর। ‘গ্যালারি ব্যাসিলিওর (আর্ট গ্যালারি) অধ্যক্ষ মাকসুদুল আহসানের পরিচালনায় গ্যালারি ব্যাসিলিও এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি যৌথভাবে জাতীয় আর্ট গ্যালারিতে এ আয়োজন করে। মাকসুদুল আহসান ওই প্রদর্শনীতে তাঁর নিজের তৈরি চিত্রকর্মসহ বাংলাদেশের ১২ জন এবং ভারতের ২৩ জন শিল্পীর শিল্পকর্মের সমন্বয় ঘটান। ২১ নভেম্বর ছিল প্রদর্শনীর শেষ দিন।

৯০ দশকের প্রথম দিকে স্বীকৃতি অর্জনকারী চিত্রশিল্পীদের মধ্যে একজন মাকসুদুল আহসান। সামাজিক ও শহুরে জীবন এবং এর আর্থসামাজিক দিকগুলোর পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী পরিবেশ তাঁর চিত্রে প্রভাব ফেলেছে। তাঁর কাজগুলো শৈশব, প্রকৃতি, সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যাধি, উপমহাদেশের ভাগ এবং তার প্রভাব, মানবসম্পর্ক, ব্যক্তিগত ক্ষতি, সামাজিক অবিচার, লিঙ্গবৈষম্য এবং আরও অনেক বিষয়ে গভীরতর হয়ে পড়ে। তাঁর পরীক্ষিত কর্মজীবনে তিনি নানান বিষয়ের সঙ্গে নানান মাধ্যমে বিভিন্ন ধারাবাহিক কাজ করেছেন। সামাজিকভাবে সচেতন চিত্রশিল্পী হিসেবে মাকসুদের চিত্রগুলো সব সময় সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং মানুষের মনস্তাত্ত্বিক ব্যাধিকে তুলে ধরে। একই সঙ্গে তাঁর প্রাণবন্ত রঙের ব্যবহারে রোমান্টিকতা এবং প্রকৃতির অদেখা সৌন্দর্য উঠে আসে।

আয়োজনের প্রতিটি চিত্রকর্মে ছিল নিজস্ব বৈচিত্র্য ও শৈলী। ভারতের এম এফ হুসেইন, যোগেন চৌধুরী, পরিতোশ সেন প্রমুখের সঙ্গে বাংলাদেশের আবদুস–শাকুর শাহ, আবদুল মান্নান, মনিরুল ইসলাম প্রমুখের চিত্রের সমন্বয়ে আর্ট গ্যালারির রূপ যেন বহুগুণে বেড়ে গিয়েছিল।

মাকসুদুল আহসান বলেন, ‘বাংলাদেশ–ভারতের শিল্পকলার এই প্রদর্শনী আমার নতুন কোনো উদ্যোগ নয়। ২০০৪ সালে প্রথম এ ধরনের আয়োজন করি। ওই প্রদর্শনীতে আমি এমন কিছু শিল্পীর কাজ তুলে ধরেছিলাম, যা এর আগে এ দেশের মানুষ দেখেনি।’ তিনি মনে করেন, এ ধরনের আয়োজনে উভয় দেশের শিল্পপ্রেমী ও শিল্প–সংস্কৃতি কিছুটা হলেও উপকৃত হয়েছে। ‘আজকাল অনেকেই শিল্পের পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে উত্সাহী, আমি তাঁদের অভিবাদন জানাচ্ছি’—বলেন মাকসুদুল আহসান।
আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে মরিশাসে মাকসুদুল আহসানের একটি একক চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। দেশটির সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে মরিশাসের সংস্কৃতি অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ হাইকমিশনের যৌথ উদ্যোগে এ প্রদর্শনী হবে।