আসুন সুস্থ থাকি

আমরা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পৃথিবীতে এসেছি, কিন্তু শেষ অবধি সুস্থ নাকি অসুস্থভাবে কাটবে—সেটা পূর্বনির্ধারিত নয়। সুস্থতা সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করছে আমাদের জীবনযাপনের ধরনের ওপর। আজকাল আমরা সবাই কোনো না কোনো রোগব্যাধিতে ভুগছি। অল্প বয়সেই অনেকে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আয়-রোজগারের বড় অংশ ব্যয় হয়ে যাচ্ছে ওষুধ ও চিকিৎসা বাবদ। এক জরিপে দেখা গেছে, প্রতিদিন গড়ে আড়াই কোটি মানুষ হাসপাতাল-ক্লিনিকে দৌড়াদৌড়ি করে। তারপরও কেউ পুরোপুরি সুস্থ হচ্ছে না; কমবেশি অসুস্থতায় ভুগতে হচ্ছে! অথচ সামান্য কিছু নিয়ম মেনে চললে সারা জীবন সুস্থ থাকা যায়। আপনিই বলুন, রোগ হওয়ার পর প্রতিষেধক ব্যবস্থা গ্রহণের চেয়ে শরীরের প্রতিরোধক শক্তি বৃদ্ধি উত্তম নয় কি?

শরীর ও মন অসুস্থ হয় সঠিক যত্নের অভাবে। শরীরের যেমন যত্নের প্রয়োজন, মনেরও তেমনি পরিচর্যা দরকার। আপনার মুখ থেকে পায়ুপথের যথাযথ যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণের ওপরই নির্ভর করছে আপনার সুস্থতার আয়ু! এ জন্য জানতে হবে আদর্শ জীবনযাপনের কৌশল ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস। পাশাপাশি নিশ্চিত করতে হবে মনের সুস্থতাও।
আপনি যদি সুস্থ শরীর ও মন নিয়ে জীবনযাপন করেন, তো আমরা চাই আপনার এই সুস্থতা দীর্ঘস্থায়ী তথা চিরস্থায়ী হোক। কিন্তু আমাদের সবার বয়স ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে। এখনই সতর্ক না হলে ভেজালের ভিড়ে অদূর ভবিষ্যতে শারীরিক জটিলতা আরও বাড়তে পারে! তখন দিন কাটবে হাসপাতালের বিছানায় আর আপনার সারা জীবনের অর্জিত অর্থ ব্যয় হবে চিকিৎসায়! গত বছর সাড়ে ৫২ লাখ বাংলাদেশি নিঃস্ব হয়ে গেছে শুধু নিজেদের চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে!
আমরা সবাই ঠিকই শরীরের যত্ন নেওয়া শুরু করি, যখন শরীর আর যত্ন আশা করে না! এমনকি শরীর একটিবার বিগড়ে গেলে তাকে পুরোপুরি সুস্থতায় ফিরিয়ে আনাও কঠিন। বরং কিছু নিয়ম মেনে চললে আপনি ও আপনার পরিবার সারা জীবন ভালো থাকতে পারবেন।
অনেকেই মনে করেন, তিনি সুস্থ আছেন বিধায় খাওয়ার ব্যাপারে এত নিয়মকানুন মেনে চলার দরকার নেই! এটাই মস্তবড় ভুল ধারণা! আমরা চাই, আপনি আগেই সতর্ক হন; আদর্শ খাদ্যাভ্যাস শিখে নিয়মমাফিক জীবনযাপন করুন, যাতে অসুস্থতা আপনাকে ছুঁতেই না পারে। কিছু পরামর্শ মেনে চললে সংসারের দৈনন্দিন খাবার খরচও এক-তৃতীয়াংশ কমে যাবে! এর মাধ্যমে আপনি মুক্তি পাবেন একঘেয়েমি থেকে, লাভ করবেন অনাবিল প্রশান্তি, সার্বিক সুস্থতা ও কর্মজীবনে সাফল্য।
অনেক সময় শিশুরা ক্ষুধার কথা চিন্তা না করে সামনে যখন যা পায়, সেটাই খেতে চায়। এ ক্ষেত্রে পিতা-মাতার কর্তব্য শিশুকে উল্টোপাল্টা ও অনিয়মতান্ত্রিক খাবার গ্রহণ থেকে বিরত রাখা। এমনকি শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য যা কিছু ক্ষতিকর, সেসব থেকেও শিশুদের দূরে রাখবেন। আপনিও কখনোই ভরপেট খাবেন না। পাকস্থলীর এক-তৃতীয়াংশ পানি দ্বারা পূর্ণ করে নিয়ে এক-তৃতীয়াংশ খাবার খাবেন। বাকি এক-তৃতীয়াংশ নিশ্বাসের জন্য খালি রাখবেন। 
মনে রাখবেন, একবারে খাবার হজম হওয়ার আগে আবার খাদ্য গ্রহণ দুরারোগ্য ব্যাধির কারণ। পাকস্থলী সব সময় পরিপূর্ণ রাখা উচিত নয়। আবার খাবার যদি দূষিত হয়, পাকস্থলী অসুস্থ হয়ে যায়। অধিক আহার অকালবার্ধক্যেরও কারণ!