বিতর্কের জমজমাট আয়োজনে

একদল বলছে কঠোর আইন প্রয়োগের মাধ্যমে ফেরানো যাবে সড়কে শৃঙ্খলা। অপর দলের দাবি শুধু জনসচেতনতাই পারে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে। এ নিয়ে জমে উঠেছে বিতর্ক। যুক্তিবাণে মুখর চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তন। এ চিত্র চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত পুষ্টি–প্রথম আলো জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতার।

বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরাসহ অতিথিরা
বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরাসহ অতিথিরা


সারা দেশের মতো চট্টগ্রামেও ১৬ জানুয়ারি পুষ্টি-প্রথম আলো জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আয়োজনের শুরুতেই ছিল নৃত্য ও কথামালা। পরে বেলুন উড়িয়ে উদ্বোধন করা হয় প্রতিযোগিতার। জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় এ আয়োজন।

সকাল ১০টায় জাতীয় সংগীতের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের শুরু হয়। এরপর ‘প্রাণ ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে, মোরে আরও আরও আরও দাও প্রাণ’ গানের তালে তালে নৃত্য পরিবেশন করেন চট্টগ্রাম বন্ধুসভার সদস্যরা। পরে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন শিক্ষাবিদ হাসিনা জাকারিয়া। চট্টগ্রাম বন্ধুসভার সভাপতি শিহাব জিশানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক কবি ও সাংবাদিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী এবং টি কে গ্রুপের পুষ্টি কনজিউমার বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিক্রয় ব্যবস্থাপক ইফতেখার শাহেদ।

নৃত্য পরিবেশন করেন চট্টগ্রাম বন্ধুসভার সদস্যরা
নৃত্য পরিবেশন করেন চট্টগ্রাম বন্ধুসভার সদস্যরা


বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চট্টগ্রামের মিরসরাই, সীতাকুণ্ড, ফটিকছড়ি, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, সন্দ্বীপ ও হাটহাজারী উপজেলা এবং ডবলমুরিং, পাঁচলাইশ ও চান্দগাঁও থানার (শিক্ষা) অন্তর্ভুক্ত ২৪টি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। প্রতিযোগিতায় বিতর্ক ছাড়াও ছিল কুইজের আয়োজন। এতেও ওই সব বিদ্যালয়ের ১৫০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। সন্ধ্যায় বিতর্ক ও কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। বিতর্কে চট্টগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় চ্যাম্পিয়ন ও রাঙ্গুনিয়া আদর্শ বহুমুখী পাইলট উচ্চবিদ্যালয় রানার্সআপ হওয়ার গৌরব অর্জন করে। এ আয়োজনে শ্রেষ্ঠ বিতার্কিক হয় রাঙ্গুনিয়া আদর্শ বহুমুখী পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসাদুল হক। এ ছাড়া দুই ক্যাটাগরিতে ছয়জন শিক্ষার্থী বিতর্ক কুইজ প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠত্বের খেতাব অর্জন করে। আঞ্চলিক পর্যায়ের বিজয়ীরা ঢাকায় অনুষ্ঠেয় জাতীয় বিতর্ক উৎসবে অংশ নেবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষাবিদ হাসিনা জাকারিয়া বলেন, বাংলাদেশের সংবাদপত্রের ইতিহাস যদি লেখা হয়, তাহলে অবশ্যই প্রথম আলোর নাম সবার আগে আসবে। শিক্ষা, সংস্কৃতিসহ নানা ক্ষেত্রে এই পত্রিকাটি বিপ্লব এনেছে। তাই এটা নিছক একটি পত্রিকা নয়, একটি প্রতিষ্ঠান। পত্রিকাটি এমন এক কর্মযজ্ঞে ঠাসা, যার শুরু আছে শেষ নেই। সেই কর্মযজ্ঞের একটি অংশ এই প্রতিযোগিতার আয়োজন।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন শিক্ষাবিদ হাসিনা জাকারিয়া
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন শিক্ষাবিদ হাসিনা জাকারিয়া


প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের জন্য প্রথম আলোর পক্ষ থেকে আয়োজিত অনুষ্ঠানগুলোর হয়তো শেষ আছে, কিন্তু এর রেশ শেষ হয় না। এটা বোঝা যায় যখন দেখি আমাদের তরুণ গণিত অলিম্পিয়াডে স্বর্ণপদক পায়, আন্তর্জাতিক ফিজিকস অলিম্পিয়াডে পদক পায়। তরুণেরা যতই নিজেদের তৈরি করবে, মুক্তমনা হবে—ততই দেশটা উন্নত হবে।’

টি কে গ্রুপের পুষ্টি কনজিউমার বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিক্রয় ব্যবস্থাপক ইফতেখার শাহেদ বলেন, ‘দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, সুযোগ তৈরি হচ্ছে। এ জন্য আমাদের তরুণদের প্রস্তুত করতে হবে। পুষ্টির পণ্য এখন মানুষের ঘরে ঘরে চলে গেছে। আমরা চাই শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো কিছু করার। তাই প্রথম আলোর সঙ্গে এ প্রতিযোগিতার অংশ হতে পেরে আমরা গর্বিত।’

বিতর্কের আয়োজনকে সফল করে তুলতে সহায়তা করেন চট্টগ্রাম বন্ধুসভার বন্ধু তন্দ্রা বিশ্বাস, ফাহিম উদ্দিন, এ আর আছাদ, কায়সার আমিন, সাখাওয়াত হোসেন, ইব্রাহীম তানভীর, সাঈদ আল সোহেল, শারমিন আহমেদ, তানজিলা বিনতে শওকত, রুনা আক্তার, ঈশিতা বড়ুয়া, এনামুল হক, আকিল হাসান, সিরাজুল মোস্তফা, তাশফিকুর রহমান প্রমুখ।