গোপালগঞ্জ বন্ধুসভার বনভোজন
২ ফেব্রুয়ারি, শনিবার সুন্দরবনে আনন্দ সফরে যান গোপালগঞ্জ বন্ধুসভার সদস্যরা।
এখনো একটা অদৃশ্য ঘোরের ভেতরে মন বিরাজ করছে। উত্তেজনা নিয়ে ঘুম থেকে উঠে, শীত উপেক্ষা করে তৈরি হয়ে চলে গেলাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যলয়ের ক্যাম্পাসে। সকাল সাড়ে ৭টায় আমাদের বাস সুন্দরবনের উদ্দেশে রওনা হয়। পথের দুই ধারের অপূর্ব সৌন্দর্য দেখতে দেখতে পশুর নদের ঘাটে পৌঁছালাম ১০টায়। সেখানে নেমেই বন্ধুদের নিয়ে সকালের হালকা নাশতা সেরে নেওয়া হলো। তারপর ট্রলারে করে সুন্দরবনের ‘করমজল’–এর উদ্দেশে রওনা হলাম। প্রায় আট কিলোমিটার নদীপথ পাড়ি দিয়ে করমজলে যেতে লাগল ঘণ্টাখানেকের মতো। করমজল ঘাটে নেমে বন্ধুদের বনের মধ্যে চলাফেরার বিষয়ে কিছু দিকনির্দেশনা দেন সভাপতি ইনজারুল হক। তারপর ৪টি ছোট দলে বিভক্ত হয়ে ঘুরতে বের হই।
শুরুতেই আবদ্ধ অবস্থায় চিত্রা হরিণ দেখি। তারপর কুমিরের দেখা মেলে। একটা সংগ্রহ শালায় আমরা ইরাবতী শুশুকের কংকাল দেখতে পাই। সেখানে বনের একটি মানচিত্র, কুমিরের ডিম ও হরিণের চামড়া দেখতে পেলাম। এরপর বনের মধ্যে হাঁটতে গেলাম। পর্যটকদের সুবিধার্থে কাঠের তৈরি মাটি থেকে কিছুটা উচু পথের ব্যবস্থা রয়েছে। বনের ভেতর দিয়ে যাওয়ায় সময় আমরা বানর ও কিছু পাখির দেখা পাই।
নানা ধরনের পোকামাকড় ও ডাক পাখির ডাক আমাদের কানে আসছিল। একটা ওয়াচ টাওয়ারে উঠি। চারদিকে গাছ আর গাছ—যেন এক সবুজ রাজ্য।
মধ্যাহ্নভোজ করার পর সবাই একসঙ্গে বসে দুটি খেলা হয়। খেলা পরিচালনা করেন ইনজারুল, আশিক, সাইফুল ও মফিজুর। বিজয়ীদের পুরস্কারও দেওয়া হয়। তারপর আমরা দর্শনার্থীদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করি। বনে কোলাহল না করা, ময়লা দ্রব্য না ফেলা এবং বন্য প্রাণীদের যেন আঘাত না করা হয়, এ ব্যাপারে অনুরোধ করা হলো। এরপর আড্ডায় গান ও কবিতা আবৃত্তি করেন বন্ধুরা। এভাবেই দুপুর গড়িয়ে বিকেল, এবার ফেরার পালা। নদীর জলে পড়ন্ত বিকেলে সূর্যের শেষ কিরণ দেখতে দেখতে ফিরে আসি। বাসে বসে বন্ধুদের আনন্দ উল্লাসে ভ্রমণের সার্থকতা উপলব্ধি হয়।
বনভোজনে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি ইনজারুল হক, সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক শারজুল আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অনন্যা, প্রচার সম্পাদক মফিজুর রহমান, মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক কাজী সুরাইয়া, পাঠচক্র সম্পাদক সাইফুল, যোগাযোগবিষয়ক সম্পাদক সিকদার মাহবুব, আনিকা খান চৌধুরী, মৃণাল রয়, আরমান আলী, কাদের মাহমুদ রাজু, মেহেদী হাসান, তামান্না, রিফাত, মুহিদ, প্রান্ত দাস, সবুজ, মুসফিক, মুগ্ধ, প্রিয়া, মাসুম বিল্লাহ, ফাহিম, রিদম, তৃণা, আমিনুল, শান্ত, সাগর, মাসুম, জাকির, পারভেজ, আয়েশা, মেহেদী হাসান সাকিব, মিজানুর রহমান, কানন, মুরাদ, আরিফুজ্জামান লিমন, হিমেল, অনিক চৌধুরী, শুভ্র, আফরোজা বন্যা, শরিফুল ইসলাম, অঞ্জন, মেজবাউল হক, মিথিলা ফারজানা, মোহিন, কাজি তায়, শাওন, আঁখি।
বনভোজনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন সভাপতি ইনজারুল হক ও সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান।
সাহিত্য সম্পাদক, গোপালগঞ্জ বন্ধুসভা