সহিংস উগ্রবাদ ও মাদক থেকে তরুণদের দূরে রাখার প্রত্যয় নিয়ে মানিকগঞ্জে অনুষ্ঠিত হয়েছে তারুণ্যের জয়গান উৎসব। রোববার (১৭ ফেব্রুয়ারি) মানিকগঞ্জ সরকারি দেবেন্দ্র কলেজে দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, কিশোর আলো ও প্রথম আলো বন্ধুসভা যৌথভাবে এই উৎসবের আয়োজন করে।
সকাল সাড়ে ১০টায় মেয়েদের ঝুঁকিপূর্ণ ইন্টারনেট থেকে নিরাপদ রাখতে কলেজ মিলনায়তনে ‘নিরাপদ ইন্টারনেট’ ব্যবহারের ওপর কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালা পরিচালনা করেন লেখক রাজীব হাসান, কিশোর আলোর জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক পাভেল মহিতুল আলম। কর্মশালায় মানিকগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজসহ স্থানীয় কলেজের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালায় রাজীব হাসান তরুণদের জিজ্ঞেস করেন, ‘তোমরা কারা কারা স্বপ্ন দেখো’। এ সময় কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী সব তরুণ হাত উঁচিয়ে সম্মতি জানান। স্বপ্ন দেখতে চাওয়া তিনজন তরুণকে পুরস্কার হিসেবে ছয় মাসের কিশোর আলো বিনা মূল্যে সংগ্রহের কুপন তুলে দেওয়া হয়।
দুপুর ১২টায় বন্ধুসভার সদস্যদের অংশগ্রহণে প্রথমে জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়। পরে পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। বন্ধুসভার সদস্য ও স্থানীয় শিল্পীরা নাচ, গান ও আবৃত্তি করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলেন সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মো. কুদরত-এ-হুদা খোদা, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এইচ এম শফিকুল ইসলাম, দন্ত্যস রওশন, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের কর্মসূচি কর্মকর্তা শাহরিয়ার মান্নান, সহকারী অধ্যাপক মিজানুর রহমান, সহকারী অধ্যাপক মো. খায়রুজ্জমান, প্রগতি লেখক সংঘের জেলা শাখার সভাপতি শ্যামল কুমার সরকার।
সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের মাঠে ‘আলোর পথে, প্রীতির সাথে’ স্লোগানে তারুণ্যের জয়গান অনুষ্ঠানের মূল মঞ্চে বন্ধুসভার সদস্য ও স্থানীয় শিল্পীরা নাচ, গান ও আবৃত্তি করেন। এরপর দন্ত্যস রওশন, শাহরিয়ার মান্নান, স্থানীয় ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সংগঠক দীপক কুমার ঘোষ এবং প্রথম আলোর মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি আবদুল মোমিন উপস্থিত তরুণদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন।
প্রথম আলো মানিকগঞ্জ বন্ধুসভা অনুষ্ঠান আয়োজনে সহযোগিতা করে। সদস্যদের মধ্যে সভাপতি মাহবুব আলম রাসেল, সাধারণ সম্পাদক হাদিউজ্জামান, সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন ও শাহিনুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক চঞ্চল দাস ও আতিকুর রহমান, সাংগঠনিক আবু ইউসুফ, উপসাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, নারীবিষয়ক সম্পাদক ডলি আক্তার, প্রচার সম্পাদক ওমর ফারুক, দপ্তর সম্পাদক শাম্মী জামান, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক ইমন খান, পাঠাগার সম্পাদক রূপা আক্তার।
বন্ধুসভার জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি দন্ত্যস রওশন বলেন, ‘আজকের তরুণেরাই আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবে। তরুণেরাই সমাজ ও দেশকে আলোর দিকে নিয়ে যায়। এই তরুণেরাই আগামীর বাংলাদেশকে পরিচালনা করবে, দেশকে নেতৃত্ব দেবে। পরে তিনি তাঁর নিজের লেখা অণুকাব্য উপস্থিত তরুণদের সামনে উপস্থাপন করেন। আনন্দ আর উল্লাসে ফেটে পড়েন উপস্থিত তরুণ ও দর্শকেরা।
শাহরিয়ার মান্নান বলেন, ‘আমরা হিংসা-বিদ্বেষ পরিহার করে সম্প্রীতি গড়ে তুলব। সহিংস উগ্রবাদ পরিহার করব। সবার প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ সারা বিশ্বে আলোকিত দেশ হিসেবে মর্যাদা পাবে।’
আয়োজনে এই পর্বে প্রেরণাদায়ী বক্তা ওয়েডিং ডায়েরির সিইও প্রীত রেজার তরুণদের মাতিয়ে রাখেন। জাদুশিল্পী রাজীব বসাক জাদু দেখিয়ে উপস্থিত তরুণ ও দর্শকদের মুগ্ধ করেন। এরপর মঞ্চে আসে জনপ্রিয় ব্যান্ড দল ‘চিরকুট’। দলটি তাঁদের জনপ্রিয় গান ‘কানামাছি মিথ্যা, কানামাছি সত্য’সহ বেশ কয়েকটি গান গেয়ে উপস্থিত তরুণদের মাতিয়ে তোলে।