আড্ডা আর উচ্ছলতায় মুখরিত এক সন্ধ্যা

পুরোনো বন্ধুদের আড্ডা।
পুরোনো বন্ধুদের আড্ডা।


ফেসবুকে বন্ধুসভার পুরোনো বন্ধু মামুনের মেসেজ। তা থেকে জানা গেল, ১৩ মে সন্ধ্যায় কারওয়ানবাজারের সিএ ভবনে বসছে নতুন–পুরোনো বন্ধুদের নিয়ে এক মিলনমেলা। মেসেজটা দেখার পরই চোখের সামনে ভাসতে লাগল পুরোনো বন্ধু জেরিন, বন্যা, শুভ্রা, রনিসহ অনেকের মুখ। কতদিন দেখা হয় না। আড্ডা দেওয়া হয় না। মনে মনে ভাবলাম, সবাইকে চমকে দিতে কাউকে কিছু না জানিয়েই অনুষ্ঠানের দিন হাজির হব।
ঢাকায় আসার আগে থেকেই বন্ধুসভার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর বন্ধুসভার সঙ্গে। বন্ধুসভার প্রতি তখন থেকেই এক ভালোবাসা–ভালোলাগা কাজ করত। এখনো করে।
২০০৯ সালে ঢাকায় এসে যুক্ত হই ঢাকা বন্ধুসভার গানের দলের সঙ্গে। মূলত একজন তবলা শিল্পী হিসেবে। দলের প্রতিটি বন্ধুই ছিল আন্তরিক ও মজার।
ব্যস্ততার কারণে এখন তেমন একটা যাওয়া হয় না বন্ধুসভার প্রাঙ্গণে। যেখানে সবাই মিলেমিশে রিহার্সেল করা,খাওয়া–দাওয়া, মজার–মজার কথা বলা,আরও কত কী! ফেসবুকে অনেক বন্ধুর সঙ্গেই যুক্ত আছি। কথা হয়। তাঁদের পোস্ট দেখা হয়। বিশেষ করে বন্ধুসভার ফেসবুক পেজ থেকে æলাইভ দেখি। সেখান থেকে জানতে পারি নতুন পুরোনো বন্ধুদের ভালো সব কাজের খবর। অজানা সব তথ্য।
সেদিনের বিকেলটা সত্যিই ছিল খুব আনন্দের। ১৩ মে। আয়োজনের নাম ছিলæ‘পুরোনো বন্ধুদের আড্ডা’।
নতুন–পুরোনো শত শত বন্ধু নিয়ে এক মিলনমেলা। সেদিন পুরোনো অনেক স্মৃতিই যেন তাড়া করে ফিরছিল বন্ধুদের মনে। আর বন্ধুদের সামনে পেয়ে সবাই হয়ে পড়েছিল ভীষণ নষ্টালজিক। দূরত্ব যে কখনোই প্রাণের বন্ধুত্বে কোনে ছেদ ফেলে না, তা আবারও সেদিনের মিলনমেলায় আগত বন্ধুদের কাছে প্রমাণিত। সেদিন মিলিত হওয়া বন্ধুদের দেখে বোঝা গেল সম্পর্কে আন্তরিকতা, বিশ্বস্ততা, শ্রদ্ধাবোধ ও ভালোবাসা থাকলে প্রাণে প্রাণ মিলবেই। বন্ধু জেরিন যেমনটা বলল, æ‘কতদিন পর তোমাকে দেখলাম! তোমাদের খুব মিস করি।’
বন্ধুদের মধ্যে অনেকেরই সংসার হয়েছে। অনেকেই শুরু করেছেন কর্মজীবন। শত ব্যস্ততার মধ্যেও একটু সময় করে সবার অংশগ্রহণে আয়োজন হয়েছিল আরও মুখরিত। গান, কবিতা আর গল্পে পুরো আয়োজন হয়ে উঠেছিল প্রাণবন্ত। চেনা–অচেনা, নতুন–পুরোনো বন্ধুদের প্রাণবন্ত আড্ডা, উচ্ছলতায় সবাই যেন ফিরে যান স্মৃতিময় সেই দিনগুলোতে। ইফতার শেষে সবাই মেতে ওঠেন সেলফি তোলায়। গল্প আর আড্ডায় কখন যে রাত হয়ে আসে তা টেরই পাওয়া যায়নি! ধীরে ধীরে ঘনিয়ে আসে বিদায়ের ক্ষণ, অবসান হলো প্রাণের মেলার! কিন্তু, সবাই নিশ্চিত, এ আয়োজন হয়তো ফুরাল, কিন্তু প্রাণে যে মিলনের বান এসেছে তা তো সহজে ফুরাবার নয়! সবার বিশ্বাস, প্রাণের এই উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে যাবে সবার মাঝে। মিলনমেলায় যাঁরা মিলেছিলেন আর যাঁরা আসতে পারেননি, সবার সঙ্গেই আবার দেখা হবে। এই বন্ধন আরও দৃঢ় হবে। আবার দেখা হবে। বন্ধুদের বিদায় জানিয়ে বাসায় এসে ফেসবুক খুলেই দেখি সবার ফেসবুক পোস্টে আয়োজনের ছবি আর স্মৃতিকথার ঝড়।
পুরোনো বন্ধুদের হাতে হাত রেখেই নতুনেরা এগিয়ে নেবেন আমাদের প্রাণের সংগঠন বন্ধুসভাকে। সেই শুভ কামনা সবার জন্য।

নির্বাহী, ই–পেপার, প্রথম আলো