চীনে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বিরাট সুযোগ

প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত
প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত

বাংলাদেশে এমন অনেক শিক্ষার্থী আছেন যারা অনার্স শেষ করার পর কোনো ভালো চাকরি পাচ্ছেন না কিংবা প্রয়োজনীয় টাকা না থাকায় মাস্টার্সে ভর্তি হতে পাচ্ছেন না। আমার এই লেখা মূলত তাদের জন্য। তবে উচ্চমাধ্যমিক পাস করা শিক্ষার্থীদেরও রয়েছে চীনে বিনা খরচে অধ্যয়নের সুযোগ।

প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত
প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত

আমাদের দেশে অনার্স পাস একটা ছেলে বা মেয়ে সাধারণত ১২ থেকে ১৮ হাজার টাকা বেতনের চাকরি করে থাকেন। আবার এই বেতনের চাকরিও প্রায় সোনার হরিণ। তাই অনেকে বাধ্য হয়ে ৮-১০ হাজার টাকার চাকরি পেলে তা না করে উপায় থাকে না। কিন্তু ঢাকা শহরে এই বেতনে চাকরি করে নিজের পড়ালেখা ও থাকা-খাওয়ার খরচ জোগানো প্রায় অসম্ভব।
কিন্তু এই অবস্থা আর কত দিন? আপনার রেজাল্ট যদি ভালো থাকে কিংবা আপনার যদি IELTS বা TOFFEL সার্টিফিকেট থাকে তবে বিদেশে পড়ালেখা করার অফুরন্ত সুযোগ আপনার সামনে। শুধুমাত্র সঠিক দিকনির্দেশনার অভাবে আপনি পিছিয়ে আছেন।
চীন সরকার প্রতি বছর হাজার হাজার বিদেশি শিক্ষার্থীদের বিনা খরচে অধ্যয়নের সুযোগ দিয়ে থাকে। বিশেষ করে আমাদের দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকান শিক্ষার্থীদের। এমনকি মাস্টার্স, পিএইচডি ও চীনা ভাষা শিক্ষার শিক্ষার্থীদের মাসিক হাত খরচ হিসেবে প্রায় ৩৫-৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত দিয়ে থাকে। যা দিয়ে আপনি আপনার প্রয়োজনীয়তা মিটিয়ে প্রতি মাসে দেশে টাকা পাঠাতে পারবেন।

প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত
প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত


Chinese Govt. Scholarship (CSC), Confucius Institute Scholarship (CIS), China-Bangladesh Exchange Scholarship, The Belt and Road initiative Scholarship, ২০১৭-১৮ সালের জন্য Under-graduate, Masters, PhD, General/Senior Scholar, Chinese Language কোর্সের জন্য শিক্ষার্থীদের আবেদন করার এখনই সময়।

স্কলারশিপের পরিমাণ ও সুযোগ-সুবিধা।
১. রেজিস্ট্রেশন ফি, ইনস্যুরেন্স ফি, টিউশন ফি ও হোস্টেল ফি স্কলারশিপের আওতায় থাকবে।
২. Under-graduate-এর শিক্ষার্থীরা মাসিক কোনো খরচ পাবেন না।
৩. মাস্টার্স ও ডক্টরেট লেভেলের শিক্ষার্থীদের জন্য মাসিক হাত খরচ হিসেবে যথাক্রমে ৩০০০ ইউয়ান ও ৩৫০০ ইউয়ান প্রদান করা হবে। (১ ইউয়ান=১২ টাকা)।
৪. ল্যাবরেটরি ফি, ইন্টার্নশিপ ফি ও যাতায়াত খরচ নিজেদের বহন করতে হবে।
৫. Confucius Institute Scholarship (CIS)-এর আওতায় শুধুমাত্র চীনা ভাষা শেখানো হয়। চার বছর মেয়াদি এই কোর্স করার সময় শিক্ষার্থীদের কোনো প্রকার রেজিস্ট্রেশন ফি, ইনস্যুরেন্স ফি, টিউশন ফি কিংবা হোস্টেল ফি দিতে হয় না। বরং বিশ্ববিদ্যালয় প্রতি মাসে হাত খরচ হিসেবে ২৫০০ ইউয়ান এবং প্রতিবছর একবার করে দেশে আসার জন্য বিমান টিকিট দিয়ে থাকে। এই কোর্সের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে চাকরির নিশ্চয়তা। চার বছর মেয়াদি কোর্স শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই Confucius Institute ভালো বেতনের চাকরি প্রদান করে থাকে।
নোট: কমপক্ষে HSK LEVEL-2 (চীনা ভাষার ওপর এক ধরনের পরীক্ষা, অনেকটা IELTS-এর মতো) পাস করতে হবে।

লেখক
লেখক

শর্তাবলি
১. চীন ব্যতীত অন্য যেকোনো দেশের নাগরিক হতে হবে। অবশ্যই সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হবে।
২. অন্য কোনো স্কলারশিপ বা ফান্ডিংয়ের জন্য মনোনীত হওয়া যাবে না।
৩. স্নাতক প্রোগ্রামে আবেদনের জন্য উচ্চমাধ্যমিক পাস ও বয়স অবশ্যই ২৫-এর চেয়ে কম হতে হবে।
৪. মাস্টার্স প্রোগ্রামে আবেদনের জন্য স্নাতক ডিগ্রিধারী ও বয়স অবশ্যই ৩৫-এর চেয়ে কম হতে হবে।
৫. ডক্টরেট প্রোগ্রামে আবেদনের জন্য মাস্টার্স ডিগ্রিধারী ও বয়স অবশ্যই ৪০-এর চেয়ে কম হতে হবে।
৬. General Scholar প্রোগ্রামে আবেদনের জন্য ন্যূনতম ২ বছরের স্নাতক ডিগ্রিধারী ও বয়স অবশ্যই ৪৫-এর চেয়ে কম হতে হবে। Senior Scholar প্রোগ্রামে আবেদনের জন্য মাস্টার্স ডিগ্রিধারী অথবা সহযোগী অধ্যাপক (অথবা তার ওপরে) ও বয়স অবশ্যই ৫০-এর চেয়ে কম হতে হবে।
৭. জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে স্কলারশিপের রেজাল্ট প্রকাশ করে থাকে।
৮. Chinese Govt. Scholarship (CSC)–এর জন্য প্রায় MOE লিস্টেড ২৭৯টি ইউনিভার্সিটিতে আবেদন করা যায়।
৯. একজন শিক্ষার্থী একটার বেশি স্কলারশিপের জন্য মনোনীত হবেন না।

প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস
১. অ্যাপ্লিকেশন ফরম।
২. পাসপোর্ট।
৩. পাসপোর্ট সাইজ ছবি।
৪. সকল একাডেমিক সার্টিফিকেট ও ট্রান্সক্রিপ্টের নোটারাইজ কপি।
৫. স্টাডি প্ল্যান।
৬. রিকোমেন্ডেশন লেটার। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ জন প্রফেসরের কাছ থেকে রিকোমেন্ডেশন লেটার বা সুপারিশপত্র নিতে হবে।
৭. মেডিকেল রিপোর্ট।
৮. IELTS বা TOFFEL সার্টিফিকেট (যদি থাকে)।
নোট: বয়স গণনার ক্ষেত্রে তারিখ হবে ২০ মার্চ, ২০১৭।
আবেদনের সময়সীমা: মার্চ ২০১৭।

আরও বিস্তারিত জানার জন্য আমার সঙ্গে মেইল বা ফেসবুকে যোগাযোগ করতে পারেন।
ইমেইল: <[email protected]> ফেসবুক: SecurityCheckRequired