জাপানে আমরা গর্বিত শেকৃবিয়ান

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে জাপানের কাগাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে জাপানের কাগাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা

হাঁটি-হাঁটি, পা-পা করে ১৬ বছর পেরিয়ে ১৭ বছরে পদার্পণ করল রাজধানীর বুকে সবুজ শ্যামল গ্রাম—আমাদের প্রিয় শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি)। গত ১৫ জুলাই ছিল শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। যদিও এর গৌরবের ইতিহাস দীর্ঘ ৭৮ বছরের। ১৯৩৮ সালে দ্য বেঙ্গল এগ্রিকালচারাল ইনস্টিটিউট নামে যার যাত্রা শুরু হয়েছিল।

এই সুদীর্ঘ পথচলায় আমরা আজ দেশ-বিদেশে গর্বিত শেকৃবিয়ান। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে শুধুমাত্র জাপানের কাগাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ১১ জন শেকৃবিয়ান অধ্যয়ন করছেন। এভাবে জাপানের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা বিশ্বের নামীদামি অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন শেকৃবিয়ানদের বিচরণ। এটা গর্বের ও সম্মানের।
প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে আমরা একত্রিত হয়েছিলাম কাগাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদে। একসঙ্গে সবাই মিলে প্রিয় বাংলাদেশ আর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো নিয়ে ছবি উঠিয়ে কিছুটা হলেও তৃপ্তির ঢেকুর তুললাম। হাজার হাজার মাইল পথ দূরে থেকে আমরা যে প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়কে ভুলে যায়নি তারই স্বাক্ষর রাখলাম আমাদের আড্ডা ও গল্পে। আর আমাদের সঙ্গ দিতে এসেছিলেন কাগাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সহকারী অধ্যাপক ড. মোস্তফা জামাল ও তাঁর সহধর্মিণী রুবি জামাল।
আড্ডায় স্মৃতির পাতা হাতড়িয়ে আমরা স্মরণ করেছি আমাদের ফেলে আসা নানান দুরন্তপনার দিনগুলোকে। ব্যস্ততম ঢাকা শহরে দিনে ও রাতে শিয়ালের চেঁচামেচি কিংবা বানর দলের ডালে ডালে ঘুরে বেড়ানো—এ সব এখন অকল্পনীয় মনে হলেও এগুলোই ছিল আমাদের বাস্তবতার দিনলিপিতে। আম বাগান অথবা হর্টিকালচার গার্ডেন অথবা টাওয়ারের পাদদেশে এখন হয়তো আর আগের মতো আড্ডা জমে ওঠে না। প্রয়োজনের তাগিদে এখনকার ছেলেমেয়েরা হয়তো নতুন কোনো জায়গাকে বেছে নিয়েছেন।
ডিবেটিং সোসাইটির চ্যাম্পিয়নশিপ করতে গিয়ে কত রাত আমরা নির্ঘুমে ক্যাফেটেরিয়ার দোতলায় কাটিয়েছি প্রিয় ক্যাম্পাসকে মাথা উঁচু করে তুলব বলে। ১৫ বছর আগে রাত-বিরাতের বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় মেতে থাকা—এ সবই এখন গল্প। সময়ের তালে অনেক কিছুই হারিয়ে যাবে। আর নতুনেরা মেতে থাকবেন নতুন কোনো নেশায়।
প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়টি Centre of Excellence হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হোক, কৃষি ও কৃষকের কল্যাণে আরও বেশি নিবেদিত হোক, দেশ ও বিদেশে থাকা প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের এটিই প্রত্যাশা।

*তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন: সহকারী অধ্যাপক, কৃষি রসায়ন বিভাগ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা। বর্তমানে উচ্চ শিক্ষায় জাপানে অধ্যয়নরত।
ইমেইল: <[email protected]>