পাতা ঝরার দুটি কবিতা

প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত
প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত

রঙিন পাতা

হেমন্তের এক সাত সকালে শীতল হাওয়া এসে, 

বনের পাতা রাঙাতে বসে নিগূঢ় ভালোবেসে।
রং ছড়িয়ে শুরু করে নৃত্য গীতের খেলা,
মিষ্টি রোদে গাছে বসে রঙিন পাতার মেলা।
কমলা হলুদ কাতান শাড়ি জড়িয়ে নিয়ে গায়,
লম্বা আঁচল ঝুলিয়ে দিয়ে আলতা মাখে পায়।
জবা কুসুম সুগন্ধি তেলে মাথায় কালো চুল,
খোঁপায় গোঁজা ছোট বড় হরেক রকম ফুল।
লাল টুক টুক ঠোঁট জোড়াতে মুচকি হাসি হেসে,
কপালটিতেও টিপ দিয়ে দেয় সাজা হলে শেষে।
সেজেগুজে সাঁঝেরবেলায় লেকের পাড়ে যায়,
ঢেউখেলানো পানির ভেতর চাঁদের দেখা পায়।
খোলা লেকের হিমেল হাওয়া ভেসে আসে বনে,
ঝরে পড়ার ভয় লাগে যে রঙিন পাতার মনে।
গহিন বনের ঠান্ডা হাওয়া খিলখিলিয়ে হাসে,
ঝরার ভয়ে রঙিন পাতা চোখের জলে ভাসে।

প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত
প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত

ঝরা পাতা

ঋতুকালের অমোঘ নিয়মে ঠান্ডা হাওয়ায় হায়,
শীতের আগেই গাছের পাতা সাজতে বসে যায়।
হঠাৎ আসা পুব আকাশের ঝরো হাওয়ার তোড়ে,
একটি দুইটি তিনটি করে রঙিন পাতা পড়ে।
ভরদুপুরের ঝিরঝির হাওয়ায় গাছের শাখা নড়ে,
চারটি পাঁচটি ছয়টি করে ওকের পাতা পড়ে।
নিঝুম রাতে দমকা হাওয়ায় গাছ মড়মড় করে,
সাতটি আটটি নয়টি করে ম্যাপল পাতা ঝরে।
এমনি করে কমলা হলুদ মেরুন সিঁদুর লাল,
পাতা ঝরে নিঃশেষ হলো সকল গাছের ডাল।
শূন্য পাতার গাছগুলি তাই দাঁড়িয়ে অপেক্ষায়,
পড়বে তুষার করবে বরণ তার-ই প্রতীক্ষায়।
আকাশজুড়ে জমানো মেঘ শুভ্র হয়ে ঝরে,
ঝরা পাতার কান্না থামে তুষার পড়ার পরে।

রানা টাইগেরিনা: টরন্টো, কানাডা। ইমেইল <[email protected]>