ভালোবাসা ও ভ্রাতৃত্ব

আলম দাদা ও তার পরিবারের সঙ্গে অমিত
আলম দাদা ও তার পরিবারের সঙ্গে অমিত

বিমানে ওঠার পর নির্দিষ্ট আসনে বসে অমিত ভাবিকে ফোন দিয়ে বলল, ভাবি, আমি যাচ্ছি, সবকিছুর জন্য ধন্যবাদ তোমাকে।

—অমিত, তোমাকে আমরা অনেক মিস করব! তুমি আসায় খুব ভালো লেগেছে। তুমি আবার এসো প্লিজ। আমিতো বিমানবন্দরে আসতে পারলাম না পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠানের জন্য। তোমার যাত্রা শুভ হোক, পৌঁছে মেসেজ দিয়ো। ভাবি বললেন।
—ওকে ভাবি, ভালো থেকো।
নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি বিমানবন্দর থেকে দুবাইয়ের উদ্দেশে বিমান যাত্রা শুরু করল। এটা অমিতের প্রথম আমেরিকা সফর। একটা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড (Engineering Leader-2016 from Plant & Control Engineering, USA) গ্রহণ করার জন্য অমিত আমেরিকা এসেছিল।
এ সময় অমিতের চোখে পানি দেখে তার পাশের সহযাত্রিণী জিজ্ঞেস করল, হ্যালো, শুভ সন্ধ্যা, তোমার কি মন খারাপ?
—আমি ভালো, ধন্যবাদ তোমাকে। তুমি কেমন আছ?
—আমি ভালো, তুমি কেমন আছ? যদি কিছু মনে না করো, আমি কি তোমার নাম জানতে পারি?
—অবশ্যই, আমি অমিত সাহা, খুব কঠিন মনে হলে, তুমি আমাকে সাহা ডাকতে পার।
—ওহ! সুন্দর নাম বলে সহযাত্রিণী একটু হাসি দিয়ে বিমানের জানালা দিয়ে বাইরে তাকাল।
—তোমার নাম কি জানতে পারি?
—আনিকা।
—সুন্দর নাম!
অমিত মুচকি হেসে আনিকার দিকে তাকাল।
—অমিত, তোমাকে একটা প্রশ্ন করতে পারি? যদি তুমি কিছু মনে না করো।
—প্লিজ বলো।
—তোমার দেশের নাম জানতে পারি?
—আমি বাংলাদেশি, দুবাইয়ে কাজ করি।
—ওহ! বাংলাদেশ। তোমরা ক্রিকেট অনেক ভালো খেলো, ঢাকার নাম শুনেছি, তোমার বাড়ি ঢাকায়?
—আমি খুব খুশি তুমি বাংলাদেশকে চিনো। আমার গ্রামের বাড়ি সন্দ্বীপ, এটা একটা দ্বীপ।
—দ্বীপ? তার মানে তুমি দ্বীপে থাক? আনিকার চেহারায় অনেক বিস্ময়, দ্বীপের ছেলের সঙ্গে সে কথা বলছে।
—হ্যাঁ, আমাদের দ্বীপ অনেক সুন্দর, তোমার যদি সময় হয় তুমি আসতে পারো, আমাদের দ্বীপ ঘুরে দেখবে।
—ধন্যবাদ, আমি তোমাকে জানাব। খুব ভালো লেগেছে তোমার দ্বীপের কথা শুনে। তবে আমি এই প্রথম একজন বাংলাদেশি হিন্দুর সঙ্গে সঙ্গে কথা বলছি। আমি আসলে জানতাম না যে এই দেশে মুসলিম ছাড়া অন্য ধর্মাবলম্বী মানুষ বসবাস করে। দুঃখিত, তোমার নাম ভারতীয়দের নামের সঙ্গে মিল আছে বলেই আমি ধরে নিলাম তুমি হিন্দু।

স্ট্যাচু অব লিবার্টি দেখার জন্য জাহাজে অমিত
স্ট্যাচু অব লিবার্টি দেখার জন্য জাহাজে অমিত

অমিত আনিকার এই ধরনের মন্তব্যে অবাক হলো না। কারণ একই প্রশ্ন অমিতকে প্রায়ই শুনতে হয় হতো অফিসের কোনো সহকর্মীর কাছে অথবা নতুন কোনো বন্ধুর কাছে।
—আনিকা তুমি হয়তো জান না, আমাদের দেশে অনেক ধর্মের মানুষ বসবাস করে।
—হয়তো, কিন্তু আমি প্রথমবার একজন বাংলাদেশির সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু তোমার নাম শুনেই আমি একটু দ্বিধায় পড়েছিলাম! কারণ আমি সব সময় শুনে এসেছি বাংলাদেশ মুসলিম দেশ। ওখানে অন্য কোনো ধর্মের লোকজন বসবাস করে আমি তা জানতাম না। আশা করি, তোমার সঙ্গে কথা বলে অনেক ভালো লাগবে। আমাদের পৌঁছতেও আঠারো ঘণ্টা লাগবে। আশা করি তোমার দেশ সম্পর্কে অনেক কিছু আমি জানতে পারব।
—আমি কিন্তু অনেক ভারতীয় মেয়েদের সঙ্গে কথা বলেছি। অনেকে আবার খুব ভালো বন্ধু।
কথাটা বলে অমিত হেসে আনিকার দিকে তাকাল। আনিকাও হেসে দিল।
—দুঃখিত, আমি ইন্ডিয়ান না! বলে আনিকা হেসে দিল।
—আনিকা, তোমাকে একটা প্রশ্ন করতে পারি? তুমি এত বিস্ময়ের চোখে তাকিয়েছিলে কেন যখন আমি বললাম আমি বাংলাদেশি?
—ওকে, আচ্ছা শোনো, তুমি বাংলাদেশি এটা শুনে আমি বিস্মিত হইনি। আমি বিস্মিত হয়েছি শুধুমাত্র এটা বুঝতে পেরে যে, বাংলাদেশে হিন্দু বসবাস করে! আমি খুব দুঃখিত, আমার হয়তো এভাবে প্রশ্ন করা ঠিক হয়নি।
—আনিকা, আমি তোমার বন্ধুসুলভ আচরণের জন্য খুব ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বাংলাদেশে হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সবাই একসঙ্গে বসবাস করে। হ্যাঁ, মুসলিম অধ্যুষিত দেশ তাই মুসলিম জনবসতি বেশি। তবে অন্য ধর্মের মানুষেরাও আছে আমাদের দেশে। আমি তোমাকে একটা ঘটনা বলব, যা বিমানে ওঠার আগে ঘটেছে কিছুক্ষণ আগে। হয়তো তুমি শুনেই বুঝতে পারবে আমাদের দেশে হিন্দু-মুসলিমের সম্পর্ক কত সুন্দর হতে পারে। হয়তো এটার মাধ্যমে তুমি আমাদের দেশের সমাজ, সংস্কৃতি এবং আমাদের জীবনব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে পারবে।
—অমিত, তুমি অনেক সুন্দর করে কথা বলতে পার। একটা বিষয় যা অনেক বেশি সংবেদনশীল সবার কাছে। হয়তো তোমার সঙ্গে ঘটে যাওয়া এই ঘটনার প্রভাব অনেক বেশি যা আমি তোমার চোখেই দেখতে পেয়েছি।
অমিত বিমানবন্দরে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা আনিকাকে শেয়ার করল। যা শুনে আনিকা বলল ধর্ম দিয়ে মানুষকে কখনো বিচার করা ঠিক নয়। মানবতা মানুষের শ্রেষ্ঠ পরিচয়। এই ঘটনাটা আনিকাকে খুবই প্রভাবিত করে। যেটা আনিকা পরে অমিতকে ইমেইলে জানিয়েছে। আনিকা আরও লিখেছে ওর অনেক ধারণা বদলে গেছে আমাদের দেশ নিয়ে।
এবার পড়ুন সেই স্মরণীয় ঘটনাটা। যা আপনার অনেক ধারণা বদলে দেবে। আপনি যদি মনে করেন এই ঘটনাটা আপনার মনে নাড়া দিয়েছে তাহলে আমার একটা অনুরোধ থাকবে আপনার আশপাশের সবার সঙ্গে শেয়ার করুন। বদলে দিন তাদের চিন্তা ভাবনা। আমাদের বেশি কিছু লাগবে না মিলেমিশে থাকার জন্য। শুধু চাই একটু ভালোবাসা ও আমাদের মানবিক চেতনা।
জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে বিমান রানওয়ে ছেড়ে আকাশে ওড়ার পর পনেরো দিনের ঘটে যাওয়া অনেক স্মৃতি অমিতের মনে এসে বাসা বাঁধল। এতসব স্মৃতির মধ্যে আলম দাদার সঙ্গে বিমানবন্দরে ঘটে যাওয়া স্মৃতিটা অমিতকে অনেক বেশি নাড়া দিয়েছিল।
অমিত ইমিগ্রেশন লাইনে দাঁড়িয়েছে। আলম দাদা বললেন, অমিত, লাইন থেকে বেরিয়ে এসো।
—দাদা, আমার ফ্লাইটের টাইম হয়ে গেছে। আমি বের হলে ইমিগ্রেশনে দেরি হয়ে যাবে!
—তুমি আসো, আমি দেখছি কী করা যায় তোমার ইমিগ্রেশনের জন্য।
অমিত একটু চিন্তায় পড়ে গেল। ৪৫ মিনিট পর ফ্লাইট। প্রায় ১০০ জনের কাছাকাছি মানুষ ইমিগ্রেশন লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। সব চিন্তা ছেড়ে অমিত ইমিগ্রেশন লাইন ক্রস করে চলে এল দাদার কাছে।
—দাদা আমার ফ্লাইট দেরি হয়ে যাবে। আমার সবকিছু ঠিক আছে, আপনি চিন্তা করবেন না।
দাদা অমিতের ডানহাত ধরে ডলারের একটা তোড়া দিয়ে বললেন, অমিত তুমি সামনের লাইনে যাও! অমিত ভাবতেও পারেনি দাদা এমন কিছুর জন্য ডেকেছেন। এখনকার ব্যস্ত দুনিয়ায় এ রকম কিছু হতে পারে অমিত বিশ্বাস করতে পারেনি।
চোখের পানিতে টলমলে অবস্থায়, অমিত দাদাকে জিজ্ঞেস করল, টাকা দেয়ার জন্য আমাকে আপনি ইমিগ্রেশন লাইন থেকে ডেকে এনেছেন দাদা?
—অমিত দেরি করো না, এগুলো দাদার আশীর্বাদ! বড় ভাই থাকলে এভাবে ছোট ভাইদের দিতে হয়। দেরি করো না সামনে যাও।
অমিত খুব দ্রুত হেঁটে ফার্স্ট লাইনে গিয়ে দাঁড়াল।
—আপনার ফ্লাইটে বোর্ডিং শুরু হয়ে গেছে অনেক আগে। আপনার বেশি সময় নেই, আপনি পাশের কাউন্টারে লাইনে দাঁড়ান প্লিজ। ইমিগ্রেশন অফিসার বললেন।
—ধন্যবাদ, আপনার সাহায্যের জন্য। আমি দুঃখিত, আমি দেরি করে এসেছি ইমিগ্রেশন কাউন্টারে।
—কোনো সমস্যা নেই, ডান দিকের লিফট দিয়ে বোর্ডিং প্ল্যাটফর্মে দ্রুত চলে যান। শুভ যাত্রা।
—ধন্যবাদ, স্যার!
অমিত ইমিগ্রেশন শেষ করে দাদাকে ফোন দিয়ে বলল, দাদা আমার ইমিগ্রেশন শেষ। আপনি চলে যান বাসায়।
—আমরা সবাই তোমাকে নিয়ে অনেক গর্বিত। তুমি এত দূর থেকে অ্যাওয়ার্ড নিতে এসেছ। তোমাকে আমি কতবার বলেছি আমেরিকাতে চলে আস, আমরা দুই ভাই একসঙ্গে থাকব। তুমি তো চান্স পেয়েও আসতে চাও না। সাবধানে থাকবে, পৌঁছে আমাকে জানাবে। আমরা মিস করব তোমাকে, তোমার ভাবি সব সময় তোমার কথা বলে।
—থ্যাংক ইউ দাদা, আমি জানাব।
—আমি যাচ্ছি, হ্যাপি জার্নি।

স্ট্যাচু অব লিবার্টির নাম ফলক
স্ট্যাচু অব লিবার্টির নাম ফলক

বলাবাহুল্য অমিতের কাছে আলম দাদা একজন অভিভাবক ও একজন বন্ধু। দাদা একজন মুসলমান পরিবারের সন্তান। পরিবারের আদর্শ দাদাকে আজ এমন একজন মানুষে পরিণত করেছে। তার কাছে মানবতা ও ভালোবাসার মূল্য সবচেয়ে বেশি। সব সময় আমার মনে হয়, দাদা একজন বড় ভাই, একই পরিবারের সহোদর |
মুন ভাবি দাদার সহধর্মিণী। ভাবির সঙ্গে অমিতের প্রথম দেখা গায়েহলুদ অনুষ্ঠানে। এক দশক আগে! মুন ভাবি অমিতের কাছে একজন বড় বোন, অভিভাবক ও বন্ধু।
‘সবার ওপরে মানুষ সত্য, তাহার ওপরে নাই’ এবং ‘মানুষ মানুষের জন্য’।
আমরা অনেকেই ওপরের কথাগুলো বিশ্বাস করি। আসলে এই বিশ্বাস রেখে জাতি-বর্ণ-ধর্ম নির্বিশেষে জীবনে পথচলা আমাদের মূলমন্ত্র। এই মূলমন্ত্র আদৌ আমাদের মধ্যে আছে কিনা আমি জানি না। আমার মনে সব সময় একটা প্রশ্ন জাগে, এই বিশ্বাস যদি আমাদের মূলমন্ত্র হয়, তাহলে আমাদের মধ্যে এত অশান্তি কেন? আমাদের মধ্যে এত জাতিভেদ, বর্ণভেদ ও ধর্ম বিবাদ কেন? হয়তো আমরা আমাদের বিশ্বাস করি না অথবা কেউ আমাদের খুব প্রভাবিত করছে। এই ধারণা শুধুমাত্র আমার। আপনাদের ভিন্ন মতামত থাকতে পারে। আলোচনার জন্য আমার ধারণা নিয়ে আমি বাকি কথাগুলো লিখছি। আমি এটাও বিশ্বাস করি, আমার ধারণা ভুল হতে পারে, কিন্তু জীবনে চলার পথে কিছু ঘটনা আমাকে আমার ধারণা ‘সঠিক’ বিশ্বাস করার অনুপ্রেরণা দিয়েছে। এভাবেই আমি মনে করি, আমরা আমাদের বিশ্বাস করি না, আমরা বিশ্বাস করি তাদের যারা আমাদের মনে তাদের জীবনদর্শন অনুসরণ করার বীজ বপন করেছে।
একটা কথা বলাবাহুল্য, আমি এখানে তাদের বলতে আমাদের চারপাশের সকলকে যারা এ রকম অনুর্বর জমিতে বীজ বপন করেন তাদের উদ্দেশ্য করে বলছি। উর্বর জমিতে খারাপ বীজ বপন করলেও সেটা ভালো ফসল দেয় | জীবনের তাগিদে আমাদের অনেকের সঙ্গে মিশতে হয়। এই মেলামেশার কোনো পরিধি নেই। এই পরিধি নির্ধারণের ক্ষমতাও আমাদের নেই। আমাদের শুধুমাত্র নিজেদের বিশ্বাস ও মানবতার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ভালো-মন্দ বুঝতে পারার ক্ষমতা আছে। দুর্ভাগ্যবশত, আমরা আমাদের ভুলে যাই, নিজেদের বুদ্ধি-বিবেচনা আমাদের সেভাবে প্রভাবিত করে না। এভাবে আমরা অন্যের মতাদর্শ চর্চা করে একে অপরকে ঘৃণা করি। ভুলে যাই আমাদের অস্তিত্ব। কিন্তু আমরা যদি দৈনন্দিন জীবনে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা খুব গভীরভাবে চিন্তা করি, তাহলে বুঝতে পারব মানবতার ভালোবাসা আমাদের আমাদের মধ্যে আটকে রাখে।
আমরা সবাই মানুষ। হয়তো জীবনের প্রয়োজনে আমাদের ধর্ম অনুসরণ করতে হয়। কিন্তু ধর্ম দিয়ে মানুষজাতিকে আলাদা করে দেখার কিছু নেই। মানুষ মানুষই থাকবে যত দিন পর্যন্ত মানুষের নতুন বোধোদয় না হয়। হিন্দু-মুসলিম ব্যবধান একপাশে রেখে আমাদের উচিত ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে একটা সুন্দর সমাজ তথা একটা সুন্দর দেশ গড়ে তোলা।
মানুষ মানুষের জন্য স্লোগানটি দিয়ে পৃথিবীকে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলা আমাদের সবার দায়িত্ব। দাদার এমন ভালোবাসা সিক্ত ব্যবহার অমিতের জন্য বিস্ময়ের ছিল না তবে এটি অমিতের হৃদয়ে মানুষের জন্য মানবতা এবং ভালোবাসার শ্রেষ্ঠ উপহার হিসেবে থাকবে।
কবির ভাষায়, গাহি সাম্যের গান, মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান!
মানবতার জয় হোক, ধর্মান্ধতার বিনাশ হোক।
আমেরিকায় অমিতের উল্লেখযোগ্য কিছু স্মৃতির মধ্যে ছিল প্রথম দিন শিকাগো বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন ইন্টারভিউ। এরপর মোবাইল সিম কিনতে গিয়ে সিম মেশিনে ডলার আটকে যাওয়া। কালো মার্কিন ট্যাক্সিচালকের ভয়ে ট্যাক্সি লাইনে এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকা। জীবনে প্রথমবার টিস্যু দিয়ে প্রাকৃতিক কাজ সারা। হোটেল গার্ডেনে এক মার্কিন যুবতীর সঙ্গে দুবাইয়ের গল্প। মাহবুব ভাইয়ের সঙ্গে শিকাগো শহরে রাস্তা খোঁজা ও কৃত্রিম জলাশয়ে রাখা জীবন্ত তেলাপিয়া কেনার অ্যাডভেঞ্চার।

আলম দাদা ও তার পরিবার
আলম দাদা ও তার পরিবার

অ্যাওয়ার্ড ডিনারে অনেক মানুষের সঙ্গে পরিচয়। মধ্যপ্রাচ্য থেকে একমাত্র অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী হয়ে বাংলাদেশি হিসেবে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা বিজয়ীদের সঙ্গে মঞ্চে উপস্থিতি।
বন্ধু প্রণয়ের সঙ্গে নেভাদা থেকে সানফ্রান্সিসকো লং ড্রাইভ অ্যাডভেঞ্চার। প্রণয়কে রাত ৪টায় বাসস্ট্যান্ডে দিয়ে বাসায় আসার পথে ঘরবিহীন অভিবাসীদের আক্রমণের ভয়। সানফ্রান্সিসকো শহরে উদ্দেশ্যবিহীন ঘোরাঘুরি। ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের বন্ধু আদিত্য, অমিত, হার্শালের সঙ্গে সানফ্রান্সিকো গোল্ডেন ব্রিজে বৃষ্টিতে ভেজা। সমুদ্রমুখী হোটেলে খাবার খাওয়া। এরপর তাদের সঙ্গে ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যে ঘুরে বেড়ানো।
সেভেনটিন মাইলস ড্রাইভে গাড়ি চালানোর সময় ভালোবাসার মানুষের অনেক স্মৃতির প্রতিফলন। তুষারপাতে আটকে পড়ে সানফ্রান্সিসকো থেকে নেভাদা না যেতে পারায় নেভাদা থেকে নিউইয়র্কের ফ্লাইট মিস করা। সব বন্ধুরা মিলে ক্যালিফোর্নিয়ার ঐতিহ্যবাহী ওয়াইন খাওয়া। নেভাদাতে প্রণয় ও বন্ধুরা মিলে জীবনে প্রথম ক্যাসিনো খেলে ১০ ডলার জিতে নেওয়া। মধ্যরাতে প্রণয়ের বিশ্বিদ্যালয়ে গিয়ে গল্প করা। পরের দিন ঘুমের কারণে আবার নিউইয়র্ক ফ্লাইট মিস করা।
১০ বছর পর দাদার বন্ধু আলম দাদাকে দেখার আনন্দ। বাসায় শাওন ভাবি, আদি, আলভী ও অহনাকে দেখার আনন্দ। দাদা-ভাবিসহ শপিং করার আনন্দ। শাওন ভাবি, দাদা ও পিচ্চিদের নিয়ে নিউইয়র্ক সিটি ও স্ট্যাচু অব লিবার্টি দেখা। আমেরিকার প্রথম ইমিগ্রেশন জাদুঘরে ঘোরাঘুরি। ছোট ভাই জুলফির সঙ্গে বাঙালি রেস্তোরাঁয় নাশতা খাওয়া। রাত জেগে দাদা ও ভাবির সঙ্গে গল্প করা।
শামা দিদির রান্না করা ১০ পদের খাবার। রোজিনা আন্টির বাসায় সুস্বাদু খাবারের আয়োজন। আমার অনেক দিনের ইরানি বন্ধু ইমান ও আপুসহ ম্যাক্সিকান হোটেলে নৈশভোজ। ছোট ভাই সৈকতের সঙ্গে স্বাস্থ্য খাতে মার্কিন সরকারের করণীয়, বিয়ে ও ক্যারিয়ার নিয়ে পাঁচমিশালি গল্প। শেষ মুহূর্তে বন্ধু অবদূত ও তার সহধর্মিণী প্রাচীর আগমন। বন্ধু প্রমোদ ও পিংকির সঙ্গে দেখা করতে না পাড়ার কষ্ট।


চন্দ্রধর প্রসাদ: সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইপ্রবাসী।