শিরোনাম না হওয়ার গল্প

নীলুফা ইয়াসমীন
নীলুফা ইয়াসমীন

অনেক দিন থেকে কিছু বিষয় নিয়ে লেখার তাগিদ অনুভব করছি। তাগিদটা অন্য কারও নয়, আমার নিজের মনের তাগিদ। তাগিদটা লন্ডনে সামাজিক, সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে নানা আড্ডায় যে দিনগুলো কাটছে, তার লব্ধ অভিজ্ঞতা এবং সে আড্ডার প্রাণখোলা মানুষগুলোকে নিয়ে লেখা। আড্ডাগুলোতে যেমন রয়েছে ইতিবাচক দিক তেমন রয়েছে বহু নেতিবাচক দিকও। রয়েছে অনেক প্রাপ্তি, অনেক তিক্ততাও। রয়েছে অনেক মুগ্ধতা।

আমি যাদের গুণে মুগ্ধ কিংবা যাদের নিয়ে অনেকেরই মুগ্ধতা রয়েছে, তারা কেমন মানুষ বা তারা কেন মুগ্ধতার বিষয় তা আপেক্ষিক। কিন্তু কেন তারা ছাপিয়ে ওঠেন অনেকের মনে কিংবা দীর্ঘদিন মনে রাখার ও গল্প করার ব্যক্তি বা ব্যক্তিত্ব তারা। তবে এসব বিষয়ের মাপকাঠি যদিও নেই, তবুও মজার মজার স্মৃতি, ঘটনা আর তাদের গুণাবলি জড়িয়ে থাকে প্রাণে।

স্টেডিয়ামে নীলুফা ইয়াসমীন
স্টেডিয়ামে নীলুফা ইয়াসমীন

এমনি মুগ্ধতার একজন নীলুফা ইয়াসমীন হাসান। অত্যন্ত প্রাণখোলা মানুষ তিনি। এই মানুষটির প্রাণটা কেমন খোলা একবার তার কাছ থেকে ঘুরে আসতে তো মানা নেই। আমি কয়েক দিন আগে তাকে ফোনে মেসেজ দিলাম, ভাবি সময় করে আমাকে একটা ফোন করবেন। তিনি উত্তরে জানালেন, ঠিক আছে, ফোন করব।
আমার অপেক্ষা আর ফুরোয় না। ফোনতো আর আসে না। পরে আমিই ফোন করলাম। তিনি বিনয়ের সঙ্গে বললেন, পনেরো মিনিট পরেই ফোন করছি।
পরে ফোন করে বললেন, আমার বড় জায়ের সঙ্গে স্কাইপ-এ কথা বলছিলাম। আপনাকে সময় মতো ফোন করতে না পারার জন্য দুঃখিত। তিনি যেমনি বিনয়ী তেমনি উচ্ছল ও প্রাণবন্ত। তার বিনয় ভরা কথায় আমার মনের মধ্যে অপেক্ষার জমে ওঠা ক্লান্তি নিমেষেই মিলিয়ে গেল।

সুলতানা কামালের সঙ্গে নীলুফা ইয়াসমীন
সুলতানা কামালের সঙ্গে নীলুফা ইয়াসমীন

আমার যে এত কথামালা, তার মূল কারণ হলো, গত ২৭ অক্টোবর ছিল নীলুফা ইয়াসমীনের জন্মদিন। এই প্রিয় মানুষটি কারও নীলু আপা, কারও বা নীলু ভাবি, যদিও তার ভাষ্য, আমি ভাবি নই, আপা বা নাম ধরে ডাক শুনতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। সে যা হোক, নীলুফা ইয়াসমীন একজন সংস্কৃতিকর্মী ও সাংবাদিক।
তার জন্মদিনে ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সাংবাদিক ও সংস্কৃতিকর্মীরা নানা ধরনের শুভ কামনা ও শুভেচ্ছার নোট লিখেছেন। কিছুদিন আগে আমার জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাতে অন্যদের সঙ্গে নীলু হাসান দম্পতিও এসেছিলেন। আমি আমার জন্মদিনের কেক কাটার ছবি দিয়ে মজা করে ফেসবুকে লিখেছিলাম, ‘নীলু ভাবির জন্মদিনে আমরা মিষ্টি খাই/জন্মদিনে আমরা সবাই ছুটে যাই’, অমনি চারদিকে রব উঠল, আমরা কেন দাওয়াত পেলাম না। এটা তার জন্মদিনের ছবি নয়, তা বোঝাতে গিয়ে নীলুফা ইয়াসমীনের তো ঘর্মাক্ত অবস্থা। আমার জন্মদিনের ছবি দিয়ে তাকে বিপদে ফেলার প্রতিক্রিয়ায় বাড়তি কোনো গালমন্দ না করে বরং মজা হয়েছে বলে আমাকে ধন্যবাদ দিলেন। মজাটা ভালোই জমেছিল।
আমি তাকে অনুরোধ করে বললাম, ভাবি, আপনার জন্মদিনে অনেকের ভালোবাসার শুভেচ্ছা পেলেন, আপনাকে নিয়ে আমি কিছু লিখব। আমি আমার প্রিয়জনদের নিয়ে মনের ভাবনাগুলো শেয়ার করি। তিনি আমতা-আমতা করে সহজ সাবলীলভাবে কিছু ইতিবাচক কথা বললেন। তারপর খুবই বিনয়ের সঙ্গে বললেন, আমার গর্ব করার মতো কোনো কাজ নেই যে, আপনি লিখবেন। বাদ দেন, কোনো দরকার নেই লেখার। আমি শিশু ও কৈশোরে স্কুল-কলেজে পড়েছি, বড় হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি, পড়াকালেই বিয়ে, তারপর সন্তান লালনপালন, সাংবাদিকতা, সংসার আরও শত শত মায়ের মতোই আমি, ব্যতিক্রম কিছু নই। লন্ডনে সবার সঙ্গে আছি, সাহিত্য সংস্কৃতি ভালোবাসি, এর চেয়ে কিছু না। বরং এখানে যারা সাহিত্যে সংস্কৃতিতে উজ্জ্বল নক্ষত্র তাদের নিয়ে লিখেন। এ ছাড়া, আপনারও গর্ব করার মতো বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড রয়েছে, তা নিয়ে অন্যদের লেখা দরকার। আমার কথা বাদ দেন।

স্বামী আবু মুসা হাসানের সঙ্গে নীলুফা ইয়াসমীন
স্বামী আবু মুসা হাসানের সঙ্গে নীলুফা ইয়াসমীন

তার কথায় আমি প্রথমে মোটেই রাজি হইনি। আমারও অনুনয়-বিনয় চলে। আমার চেয়ে তার বিনয় এত ভারী হয়ে উঠল, আমার কথা চাপা পড়ে গেল, শেষে আমি হেরে গেলাম। বললাম, ঠিক আছে, লিখব না, বাদ দিলাম।
লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশনের সাবেক প্রেস মিনিস্টার সাংবাদিক আবু মুসা হাসানের সহধর্মিণী নীলুফা ইয়াসমীন। কিন্তু আবু মুসা হাসানের সহধর্মিণী হিসেবে শুধু নয়, নিজের নামেই তিনি সুপরিচিত। ফেসবুকে কিছুদিন আগে তিনি স্মৃতিজাগানিয়া কিছু ছবি দিলেন। আবিষ্কার করলাম তিনি জাতীয় প্রেসক্লাবে মিনি ম্যারাথনে সবাইকে পেছনে ফেলে ভালো দৌড়াতে পারতেন, ক্যারাম খেলতে পারতেন তাও জানলাম। ক্রিকেট খেলা যে তার খুব পছন্দের তা জানতাম আগে থেকেই। বাংলাদেশে বেড়াতে গেছেন, দেখা গেল মিরপুর ক্রিকেট স্টেডিয়ামে কপোত কপোতী বসে আছেন অর্থাৎ হাসান ভাই নীলু ভাবি গ্যালারিতে। শুধু মিরপুর ক্রিকেট স্টেডিয়াম নয়, বাংলাদেশ দল যুক্তরাজ্যে সফরে এলে, সব স্টেডিয়ামে ঘুরে ঘুরে টাইগারদের সমর্থন জুগিয়েছেন এই যুগল। শুধু তাই নয়, টিভিতে দেখেছিলাম আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিনের ক্রিকেট গ্যালারিতে বাঘ হাতে উল্লাস করছেন নীলু ভাবি।
সাহিত্য সাংস্কৃতিক অঙ্গনে আমাদের অনেক বিদগ্ধজন আছেন, অনেক ভালোবাসার মানুষ, প্রিয়জন রয়েছেন, কিন্তু আমরা লেখালেখি করি না তাদের গৌরবজনক অবদান কিংবা কাজকর্ম নিয়ে তেমন বলতে চাই না। যদিও তাদের কৃতকর্মে কৃতি ধন্য আমরা। ঋণ স্বীকার তো দূরের কথা নামও উচ্চারণ করতে, স্বীকৃতি দিতে এতই কুণ্ঠিত বা কুণ্ঠাবোধ করি যেন আমরা কারও নিকট থেকে কিছুই শিখিনি, কেউ শেখায়নি। সব অর্জন যেন নিজ থেকেই অহিপ্রাপ্ত হয়েছি।
নীলুফা বড় মাপের কেউ নন কিন্তু সংস্কৃতির প্রাণ বলতে যা বোঝায়, সেই প্রাণশক্তি তিনি। হাসিখুশির প্রাণোচ্ছল মানুষ। উদীচীর যেকোনো অনুষ্ঠান আয়োজন হলে বা আলতাব আলী পার্কে কোনো প্রতিবাদ সমাবেশ হলে ছুটে আসেন। বাংলাদেশে অপ সাংস্কৃতিক, প্রগতিবিরোধী কোনো ঘটনা ঘটলে প্রতিবাদী হন, লেখালেখি করেন। প্রতিবাদী মিছিলে কনকনে ঠান্ডায়ও ব্যানার ফেস্টুন হাতে খোলা মাঠে দাঁড়ান। উদীচী কিংবা ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও শাস্তি নিশ্চিতকরণ বিভিন্ন প্রতিবাদী কর্মসূচিতে, উদ্যোগ বাস্তবায়নে একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী। তিনি বেশ কয়েকবার লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবে নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। লন্ডনের সাংস্কৃতিক কর্মীদের সঙ্গে তার এতই মধুর সম্পর্ক, তাকে না ভালোবেসে পারার শক্তি কম। তার রচিত মমতার বাঁধন ছিন্ন করতে কে পারে?

শহীদ মিনারে নীলুফা ইয়াসমীন
শহীদ মিনারে নীলুফা ইয়াসমীন

বিলেতে উল্লেখ করার মতো একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস পালন। লন্ডনে আলতাব আলী পার্কে একুশে ফেব্রুয়ারিতে প্রভাতফেরি যেকোনো সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সকালবেলা আয়োজন করার প্রস্তাবক ও বাস্তবায়নে উদ্যোগী ব্যক্তিত্ব আবু মুসা হাসান ও নীলুফা হাসান। এর আগে প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারিতে শহীদ মিনারের পাদদেশে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান রাত ১২-১ মিনিটে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল। রাত ১২টায় পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ যথারীতি চলবে, তবে আমাদের ব্রিটিশ নতুন প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করার জন্য সকালবেলা এবং ছুটির দিনে সবে চেয়ে উপযুক্ত সময়। দুই বছর ধরে এ রকমই সকালবেলা আয়োজন চালু হয়েছে। নতুন প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করার এই নেপথ্য অনুঘটক এই দম্পতি।
নীলুফা ইয়াসমীন লন্ডনে বাংলা টিভি, বেতার বাংলাসহ সাপ্তাহিক পত্রিকায় বার্তা বিভাগে অনেক বছর কাজ করেছেন, বর্তমানে অনলাইন পত্রিকা সত্যবাণীর বার্তা সম্পাদক। তাঁর নিত্য নতুন ভাবনা, পাঠককে আকর্ষণ করার মতো বিষয় নির্বাচন এবং পরামর্শ দান উল্লেখযোগ্য।
নীলুফা ইয়াসমীনের মুগ্ধ করা প্রধান গুণ হলো তিনি ও আবু মুসা হাসান যেকোনো ভালো অনুষ্ঠান উপভোগ করতে ছুটে আসেন সুদূর পশ্চিম লন্ডন থেকে পূর্ব লন্ডনে। বাংলা নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রা হোক বা কবিতার আসর অথবা নাটক, সৌধের অনুষ্ঠান, রাধারমণ, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র, বিশ্বভারতী, ছান্দসিকের কিংবা উদীচীর যারই হোক। সাধারণত সংস্কৃতিকর্মী বা শিল্পীদের বেলায় সচরাচর এমনটা দেখা যায় না। আমরা দেখি, যারা গান গেয়ে থাকেন বা যে বা যিনি যে সংগঠন করেন এর বাইরে অন্যের অনুষ্ঠানে কম যান, শ্রোতা হন না। মনে করেন তিনি যা করছেন তা-ই যথেষ্ট। আমাদের এ সীমাবদ্ধ হয়ে থাকার সংস্কৃতির বাইরে নীলুফা ইয়াসমীন।
কদিন আগে ছিল নীলুফা ইয়াসমীন ও আবু মুসা হাসান দম্পতির মেয়ে তুনিয়ার জন্মদিন। আমি একটি কবিতা লিখে ফেসবুকে দিয়েছিলাম, জনমত পত্রিকার ডিজাইনার বিশ্বজিৎ রায় অপু পরে এটিকে তাদের ফটোগ্রাফিতে উৎকীর্ণ করে সুশোভিত রূপদান দেয়। এতে সুন্দর একটি পোস্টার হয়ে গিয়েছিল। এটিও আমি ফেসবুকে পোস্ট দিই এবং একখানা প্রিন্ট কপি দিয়েছিলাম। এতে তাঁর অপার আপ্লুত হওয়া কে দেখে? মুগ্ধ হয়ে যে কথাগুলো বলেছিলেন, তা চিরদিন মনে থাকবে।
ফোনালাপের সময় তিনি কথায় কথায় বলেছিলেন, ‘ছান্দসিক’ আবৃত্তি সংগঠনের কথা। এ সংগঠনটি গড়ার পেছনে আমি জড়িত। নন্দিত বাচিক শিল্পী মুনিরা পারভীন সংগঠনটির মূল সংগঠক। আমার দীর্ঘদিনের প্রণোদনার ফসল এ সংগঠনটি। তিনি বললেন, মুনিরা পারভীন তাঁর প্রিয় মানুষদের একজন, আবৃত্তিতে মুনিরা গোল্ড মেডেল পেয়েছে, তাঁকে নিয়ে আপনি লিখেন। আমি তার একজন মুগ্ধ শ্রোতা, তাকে নিয়েইতো লিখবেন, আমাকে নিয়ে নয়, আবার বিনয়।
আমি বললাম, অনেককে নিয়েই আমি লিখছি। সৌধের অন্যতম পরিচালক কবি টি এম কায়সার ও ছান্দসিকের আবৃত্তিকার তাহেরা চৌধুরী লিপিকে নিয়ে সম্প্রতি লিখেছি। এর দুই বছর আগে আমি বুকার পুরস্কারপ্রাপ্ত বাঙালি কন্যা কথাসাহিত্যিক তাহমিমা আনাম, সংগীতশিল্পী চন্দ্রা চক্রবর্তী ও সংস্কৃতিকর্মী স্মৃতি আজাদসহ মূলধারায় যুক্ত ব্রিটিশ বাঙালি শিল্পীদের নিয়ে প্রথম আলোয় লিখেছি।
গত বছর চেয়েছিলাম, মুক্তিযোদ্ধা আবু মুসা হাসানকে নিয়ে লিখতে। কিন্তু, এই লোকটিও নীলুফা ইয়াসমীনের মতো বলেছিলেন, মুক্তিযুদ্ধে আমার অবদান সামান্য, ভারতের তেজপুরে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের বিশেষ গেরিলা বাহিনীর ট্রেনিং নিয়েছি, ছোটখাটো অপারেশনে অংশ নিয়েছি। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের পরের দিন আমরা মুন্সিগঞ্জ থেকে ঢাকায় প্রবেশ করি। দখলদার পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক গুঁড়িয়ে দেওয়া ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে দাঁড়িয়ে রাইফেল উঁচিয়ে বিজয়োল্লাস করেছি, দেশ গড়ার শপথ নিয়েছি, এই তো। অনেক মুক্তিযোদ্ধার বিশাল বিশাল অবদান রয়েছে, অনেকে শহীদ হয়েছেন, তাদের নিয়ে লিখুন। বললেন, আমার সম্বন্ধে লেখার তেমন কিছু নেই। আমি বলেছি, বাংলাদেশের বিজয়ের চল্লিশ বছরের পূর্তি উপলক্ষে চল্লিশ টাকার স্মারক নোটে শহীদ মিনারে আপনাদের দেশ গড়ার শপথের ছবি রয়েছে, তাই আমরা আপনাকে নিয়ে গর্বিত।
সেদিন হাসান ভাই যেভাবে মানা করেছিলেন, আজ নীলু ভাবিও তেমনি না বললেন, দুজনের যেমনি মিল, তেমনি কথাও মিল খুঁজে পেলাম। আমার পীড়াপীড়িতে পেরে উঠতে না পেরে পরে বললেন, আমি তো কিছু না, শিরোনাম হওয়ার মতো কেউ নই। কেউ মনে করবে হয়তো আপনি আমার প্রেমে পড়ে গেছেন, তাই লিখেছেন। আমি হেসে বললাম, আমি তো আপনার প্রেমেই পড়েছি, যে গুণগুলো আপনার মাঝে আছে, এগুলো তো আর কারও মাঝে নেই। মানুষ তো গুণের প্রেমেই পড়ে। যারা সংস্কৃতিকে পুষ্টিদান করেন দর্শক বা শ্রোতা হয়ে, প্রণোদনা দেন নেপথ্যে থেকে, তাদের নিয়েই লিখতে চাই।
আমরা জানি, কাউকে নিয়ে লেখার জন্য অনেকেই মুখিয়ে থাকে। অনেকে টাকা পয়সা দিয়ে হলেও নানা গল্প ফেঁদে জীবনী লেখায়। আর তাঁদের নিয়ে লেখার আগ্রহ তাঁরা চেপে গেলেন, আসলে এই গুণটার-ই তো প্রেমে পড়েছি আমি।
তিনি কথায় কথায় বললেন, ছান্দসিক আবৃত্তি সংগঠনের কথা। এ সংগঠনটি গড়ার পেছনে আমি জড়িত। নন্দিত বাচিক শিল্পী মুনিরা পারভীন সংগঠনটির মূল সংগঠক।

হামিদ মোহাম্মদ : লন্ডন, যুক্তরাজ্য।