লন্ডনে গানের স্কুল সুরালয়ের সংগীতসন্ধ্যা

সংগীত পরিবেশন করছে সুরালয়ের শিক্ষার্থীরা
সংগীত পরিবেশন করছে সুরালয়ের শিক্ষার্থীরা

ব্রিটেনে জনপ্রিয় বাংলা সংগীতশিল্পী গৌরি চৌধুরীর সংগীত স্কুল ‘সুরালয়’-এর শুভ উদ্বোধন উপলক্ষে হয়ে গেল এক ধামাকা সংগীতসন্ধ্যা। গত শনিবার (৪ নভেম্বর) পূর্ব লন্ডনের রমফোর্ডের মেফেয়ার ব্যাংকুয়েটিং হলে গুরু-শিষ্যের সুরের মূর্ছনায় ভাসেন আগত অতিথিরা। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা থেকে রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত গৌরী চৌধুরী ও তাঁর ছাত্র-ছাত্রীদের মিলিত সুরের মূর্ছনায় বিমোহিত ছিলেন হলভর্তি দর্শক-শ্রোতা। গৌরি যাদের গান শেখান, তাদের সকলেরই প্রথম ভাষা ইংরেজি। শিক্ষক হিসেবে গৌরির জন্য বিষয়টি যেমন বেশ কঠিন তেমনি বড় সম্মানেরও।

দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন
দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন

গৌরি চৌধুরী গান করছেন ছোটবেলা থেকে। ওস্তাদ ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রয়াত রাম কানাই দাস। গান করেন দেশে বিদেশে বাংলা টিভি ও রেডিওতে। তাঁর সুরেলা কণ্ঠ শ্রবণে বিমুগ্ধ হয়েছেন সংগীত পিপাসু শ্রোতারা। রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত, আধুনিক, পল্লিগীতি, ধ্রুপদি, ফোক সংগীতের সকল শাখায় রয়েছে তাঁর সমান পদচারণা। ১১ বছর বয়সে তিনি জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার অর্জন করেন। ১২ বছরে হন রেডিও বাংলাদেশের তালিকাভুক্ত শিল্পী। ১৬ বছর বয়সে সংগীতের শিক্ষক হিসেবে নিজের আত্মপ্রকাশ ঘটান গৌরি চৌধুরী। এই নামটি ধীরে ধীরে আজ একটি প্রতিষ্ঠান হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গৌরি চৌধুরী
গৌরি চৌধুরী

২০১৫ সালে লন্ডনের গ্যান্টসহিলে প্রতিষ্ঠিত হয় গৌরী চৌধুরীর গানের স্কুল ‘সুরালয়’। সাফল্যের সঙ্গে দুই বছর পার করেছে। বেশ যত্ন দিয়ে বিলেতে বেড়ে ওঠা বাঙালি প্রজন্মের কাছে বাংলা সংগীত ছড়িয়ে দেওয়ার কাজটি করে যাচ্ছেন। সুরালয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫৫ জন। গানের ভুবনে সর্বত্র বিচরণকারী এই বহুমাত্রিক গুণী শিল্পী যুক্তরাজ্যে বাংলা সংগীত ছড়িয়ে দেওয়ার কাজটি করে যাচ্ছেন বেশ সফলতার সঙ্গে। বাংলা গানের প্রতি শ্রোতাদের আগ্রহ বাড়িয়ে দিয়েছেন বহু গুন।

দর্শক
দর্শক

শনিবারের অনুষ্ঠানে লন্ডনের কয়েক শ শ্রোতার সমাগম ঘটে। সুরালয় দর্শক শ্রোতাদের নিয়ে গিয়েছিল সুরের জাদুকরী মূর্ছনায়। উপস্থিতিদের হর্ষধ্বনি ও করতালিতে তা বারবার ফুটে ওঠে। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা সাবলীলভাবে সংগীতের প্রতিটি শাখার গান গেয়ে যে দক্ষতার পরিচয় রাখে, তাতে সত্যিকার অর্থে গৌরি চৌধুরীর কষ্টের অর্জনই প্রতিফলিত হয়েছে।
উর্মি মাজহারের প্রাণবন্ত উপস্থাপনা অনুষ্ঠানে নিয়ে আসে ভিন্ন মাত্রা। গৌরিকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন তাঁর স্বামী, বন্ধু-বান্ধব ও গুরুজনেরা। তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন কমিউনিটি নেতা মাহমুদ হাসান এমবিই, উদীচী সভাপতি গোলাম মোস্তফা, জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী লুসি রহমান ও ছয়ফুল আলমসহ অনেকে। সকলেই তাঁর আগামীর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ও উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেন। সুরালয় যেন সুরে, সুরে আরও অনেক দূরে দ্যুতি ছড়ায় এমন প্রত্যাশাই ছিল সকলের কণ্ঠে।