জেনেভায় পিঠা উৎসব

উৎসবে পিঠা
উৎসবে পিঠা

অগ্রহায়ণ মাস জুড়ে নতুন ফসল ঘরে তোলার দৃশ্য, নতুন শাক-সবজি, ফসল মাড়ানি, পৌষের নতুন চালের পিঠা-পায়েস, খেজুরের রস, নবান্নের গান—এত আমাদের আবহমান বাংলার চিরায়ত রূপ। বারো মাসের তেরো পার্বণের ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ আমাদের সংস্কৃতি। উপরিউক্ত চিত্রপট শুধু দেশের আবহে সীমাবদ্ধ হলেও প্রবাসে বাঙালিয়ানার ষোলোকলা পূর্ণ করা রীতিমতো কষ্ট সাধ্যও বটে। তবুও বিদেশের মাটিতে বসে প্রবাসীদের এই অদম্য উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা চোখে পড়ার মতো। তেমনি আমাদের মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে গত ২৩ ডিসেম্বর শনিবার সন্ধ্যায় জেনেভা বাংলা পাঠশালা আয়োজন করে বাংলার ঐতিহ্যবাহী আঞ্চলিক পিঠা উৎসব। গত বছরের মতো এবারও বাংলা পাঠশালা কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানটি উপস্থিত সকলকে কিছুটা সময়ের জন্য হলেও আপ্লুত করেছিল। পাঠশালায় অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ছাড়াও প্রবাসী বাংলাদেশিরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই পিঠা উৎসবে অংশগ্রহণ করেন।

সাংস্কৃতিক পরিবেশনা
সাংস্কৃতিক পরিবেশনা

উৎসবে প্রায় ৩০ রকম পিঠার প্রদর্শনী হয়। ভাপা পিঠা, পাটিসাপটা, নকশা পিঠা, বিবিখানা, পাকন, চিতই, ঝাল পিঠা, হাত সেমাই ও পায়েসসহ ছিল অনেক নাম না জানা পিঠা।
আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আত্মত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত বিজয়ের মাসে এ ধরনের উৎসব আয়োজনে বিদেশের মাটিতে নিজের দেশের প্রতিনিধিত্ব বা নিজেদের কৃষ্টি-সংস্কৃতি যেমন আমরা অন্যের সামনে উপস্থাপন করতে পারি তেমনি পানি নতুন প্রজন্মের কাছে বিশেষত যারা এই প্রবাসে বেড়ে উঠছে তাদের কাছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী বাহারি পিঠার নাম এবং স্বাদ দুটোই তুলে ধরতে। পিঠার খাওয়ার উন্মুক্ত পর্ব ও ধুমের পর শেষ পর্বে ছিল বাংলা পাঠশালার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রিয়াজুল হকের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীদের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনা। দেশাত্মবোধক গান, নাচ, আবৃত্তি এবং উপস্থিত আমন্ত্রিত অতিথিদের আলাপচারিতায় পিঠা উৎসবটি সর্বাঙ্গীণ সার্থক হয়।

সাংস্কৃতিক পরিবেশনা
সাংস্কৃতিক পরিবেশনা

বাংলা পাঠশালার সাধারণ সম্পাদক শাহাদত হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান এবং জেনেভায় জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গসংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা, সর্বস্তরের প্রবাসী বাংলাদেশি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাওহিদা জাহানের উপস্থিতি অনুষ্ঠানটি বাড়তি মাত্রা বহন করে।
তাওহিদা জাহান ও নাসিরা মাজিদের বক্তব্যে একটি কথায় ফুটে উঠেছে, দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে যেমন সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করেছিল, তেমনি আজও দেশের সার্বিক উন্নয়নে সকলের একসঙ্গে মিলে মিশে থাকার প্রচেষ্টা আবশ্যক।

অংশগ্রহণকারীদের একাংশ
অংশগ্রহণকারীদের একাংশ

অনুষ্ঠানে পিঠা বানানোসহ নানা সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন নাহিদা হক, মুক্তি মোল্লা, ইতি, রুমা, নূপুর, মিলি, নিশাত, কান্তা, টিপু, শাহি, আনোয়ারুল ইসলাম, বাপ্পী, মোল্লা নজরুল, আরিনুল হক, ফারানা হক, স্বর্ণা হক, বিল্লাল হোসেন ও মারুফ আনোয়ার প্রমুখ।

রাওদাতুল জান্নাত: জেনেভা, সুইজারল্যান্ড।

অংশগ্রহণকারীদের একাংশ
অংশগ্রহণকারীদের একাংশ