কেমন আছ আমার তিতাস?

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

কেমন আছ আমার তিতাস? মনে আছে তোমার আদৃত হৃদয়ে আমার শৈশব কেমন হেসে খেলে বেড়াতো! উন্মুক্ত প্রান্তরে দুরন্তপনায় কৈশোরের রাজত্ব--আর তরুণ বেলায়, তোমার পাড়েই আমার মন মুনিয়ার স্বপ্নগুলো আমাকে ভাসাত। আমার হৃদয় থেকে ভালোবাসার বৃষ্টিগুলো শান্ত দিঘির মতো প্রবাহিত হতে থাকে। আমি ভালোবাসতে শিখে যাই, আমার মন মন্দিরে জায়গা করে নেয় তিতাস নদী।

সেই নদীতে ভাসে রাখালিয়া সুর। একতারার টুং টাং। রংধনুর রুপালি হাসি। মায়াবী নদীর হাসিকান্না। কিছু অভিমান আর হৃদয়ছোঁয়া কাব্যগাথা। জোছনা যখন আলোর বিকিরণ ঘটায়, নদী জেগে উঠে সৃষ্টি করে নবপ্রাণ। দেয় কবিত্ব। সেই কবি তিতাস পাড়েই পায় সৃষ্টির অমরত্ব। যেখানে ঠাঁই নেয় সুন্দর আর সৃষ্টির গহিন সব তত্ত্ব।
আমার খুব প্রিয় কবি! তিনিও বসত করেন তিতাস-পাড়েই। আমার মন কথা তার মন বাড়িতেই জমা রাখি। আমার মন উঠোনে যখন কবি আসেন, আমি গাছ–গাছালির পাতা দিয়ে, একটি শীতল পাটি বানিয়ে তাকে বসতে দিই। তিনি হৃদয়ের কবি, হৃদয় মেরামতই তার আসল কাজ। অন্তর জমিনে যে কাঁদা ধুলো এক হয়, হিংস্রতা যখন কেড়ে নেয় মানবতা, কবি তখন কলম-তরবারি চালান মানুষের মনোরাজ্যে। সহসাই মানবতার জয়ধ্বনি অনুরণিত হয় নতুন প্রেরণায়। তার লেখনীতে একেকটি শব্দের খেলায় দেখি কিশোরীর হাঁটি হাঁটি পায়ে নান্দনিক বেড়ে ওঠা। অষ্টাদশীর উচ্ছলতা। নববধূর লাজুক হাসি। কিছু সহজ মানুষ। কিছু সবুজ আর এলোমেলো প্রাণ। কিছু আটপৌরে কত কথা। কিছু প্রেম, কিছু বিদ্রোহ, কিছু উদ্যম কিছু নব পরিকল্পনা।
কবিকে জাগায়!
কবি হয়ে ওঠেন জীবনের কবি। গান করেন, হাসেন, বাঁশি বাজান আমার মননে...রূপকথার রাজকুমার হয়ে যান নিমেষেই!

মুক্তা মাহমুদা, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র।