শীতের দুটি কবিতা

ঘন কুয়াশায় ঢাকা বাংলাদেশের রাস্তা। ছবি: প্রথম আলো
ঘন কুয়াশায় ঢাকা বাংলাদেশের রাস্তা। ছবি: প্রথম আলো

বাংলাদেশের শীত

উড়ে আসা হিমালয়ের হিম হিম হাওয়া,
বাংলাদেশে শীত তাই বাতাসেই পাওয়া।
খুব ভোরে দেখা যায় কুয়াশার মেলা,
চারদিকে শুরু হয় ধোঁয়া ধোঁয়া খেলা।
মাঠে মাঠে গান গেয়ে ধান কাটার ধুম,
উৎসবে গ্রামবাসীর চোখে নাই ঘুম।
বউ ঝি দের ব্যস্ততা নিয়ে পুলি পিঠা,
নতুন খেজুর গুড়ে খেতে লাগে মিঠা।
সকালে ঠান্ডা ক্ষীর কী যে তার মজা,
ভালো লাগে নাড়ু মুড়ি চিনি মাখা গজা।
শীতে হয় শাক–সবজি ফল আর মূল,
পালং গাজর বাঁধাকপি পেঁয়াজের ফুল।
বেগুনি সাদা শিম ফুলে জাংলা ভরে যায়,
তাই না দেখে পল্লি বধূর মুচকি হাসি পায়।
খাল বিলে পানি কমে মাছ ধরা সুখ,
শোল কই সরপুঁটির স্বাদ চায় মুখ।
হলদে রঙা সরষে খেতের মুগ্ধ করা ঘ্রাণে,
কৈশোরের স্মৃতি কথা জেগে ওঠে প্রাণে।
পরিযায়ী পাখি আসে শীত শুরু হলে,
ডানা মেলে খেলা করে হাওরের জলে।
বাংলাদেশের আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়ে হেসে,
শীত ফুরালে উড়াল দেয় নিজ প্রিয় দেশে।

শীতকালে কানাডার রাস্তা ও জনপদ। সংগৃহীত
শীতকালে কানাডার রাস্তা ও জনপদ। সংগৃহীত

কানাডার শীত

উত্তর গোলার্ধ থেকে আর্কটিক হাওয়া এসে,
কানাডার বনাঞ্চলের গাছগাছালিতে মেশে।
শীতের ছোঁয়ায় একে একে বনের পাতা ঝরে,
গাছগুলি ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকে স্নো পড়ার তরে।
শীতের সূর্য হেলে পড়ে পুব আকাশের গায়,
সেই সুযোগে তাপমাত্রা হিমাঙ্কে নেমে যায়।
কনকনে এক ঠান্ডা হাওয়ার নিম্ন চাপ ধরে,
আকাশ জুড়ে জমানো মেঘ তুষার হয়ে পড়ে।
রাস্তাঘাট আর বাড়ির চাল শুভ্র সাদা হয়,
পায়ে হেঁটে চলতে গেলে পিছলে পড়ার ভয়।
তাপমাত্রা নিচে নেমে হয় যে মাইনাস থার্টি,
জমাট বাঁধা বরফগুলো দেখতে লাগে ডার্টি।
স্নো ক্লিনিং সল্ট ছিটানো যতটুকু যায় পারা,
সাবওয়ে বাসে ছোটে মানুষ নিয়ে কাজের তাড়া।
স্কুল অফিস ডে কেয়ার সব চলে নিয়ম মতো,
শীত এড়াতে জড়ায় গায়ে শীতের পোশাক যত।
বাড়িঘর সব রাখতে গরম চলে গ্যাসের হিটার,
উইক এন্ডে পার্টিও হয় বাজিয়ে সুরে গিটার।

রানা টাইগেরিনা: টরন্টো, কানাডা, ইমেইল: <rana. tigerina@yahoo. ca>