ইসলামাবাদে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্প প্রদর্শনী

হস্তশিল্প সামগ্রী
হস্তশিল্প সামগ্রী

বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্পকে স্থানীয় সুধিমহলে তুলে ধরার লক্ষ্যে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে দিনব্যাপী ‘বাংলাদেশী হস্তশিল্প প্রদর্শনী’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইসলামাবাদের বাংলাদেশ হাইকমিশন আজ (১৭ ফেব্রম্নয়ারি) শনিবার স্থানীয় একটি পাঁচতারা হোটেলে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করে। পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার তারিক আহসান এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন।

মসলিন
মসলিন

প্রদর্শনীতে আগত অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে তারিক আহসান বলেন, বাংলাদেশের হস্তশিল্পের বৈশিষ্ট্য হলো এর আকর্ষণীয় গঠনশৈলী ও কারিগরদের আঙুলের অসাধারণ দক্ষতা। হস্তশিল্প সামগ্রীগুলো তাদের শৈল্পিক সৌন্দর্য, সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তি ও পরিবেশ বান্ধবতার গুণে সকলের কাছে প্রিয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশের হস্তশিল্পসামগ্রী যেমন মসলিন, সিল্ক, নকশিকাঁথা, গজদন্ত প্রভৃতি প্রাচীনকাল থেকেই বিশ্বব্যাপী পরিচিত ও সমাদৃত। তারিক আহসান আরও উল্লেখ করেন, ইউনেসকো বাংলাদেশের জামদানি ও শীতল পাটিকে যথাক্রমে ২০১৩ ও ২০১৭ সালে ‘ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটি’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই প্রদর্শনী দর্শকদের বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতি সম্পর্কে সম্যক ধারণা দিতে সক্ষম হবে।

পাটজাত পণ্য
পাটজাত পণ্য

দর্শকদের কাছে মোহনীয় করতে প্রদর্শনীস্থল আকর্ষণীয় ব্যানার, কারুকার্যময় রঙিন কুলা, তাল পাখা, মাটির পাতিল, উত্তরীয় এবং ঐতিহ্যবাহী জামদানি শাড়ি ও সিল্কের পাঞ্জাবি পরিহিত ম্যানিকিন বা মডেল পুতুল দিয়ে মনোরমভাবে সাজানো হয়।
প্রদর্শনীতে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ঐতিহ্যবাহী মসলিন, জামদানি, সিল্ক, চামড়া ও পাটজাত পণ্য প্রদর্শন করা হয়। এ ছাড়া কাঠ, কাঁসা-পিতল, চামড়া ও মাটি দিয়ে তৈরি বিভিন্ন সামগ্রীও প্রদর্শনীতে স্থান পায়। গ্রাম বাংলার নকশিকাঁথা, টেরাকোটা, পাটের তৈরি শিকা ও হাতব্যাগ, গয়নার বাক্স, পিতলের তৈরি নৌকা, রিকশা ও গরুর গাড়ি, বিভিন্ন ধরনের গৃহসজ্জা সামগ্রী এবং একতারা-বাঁশিসহ গ্রামীণ বাদ্যযন্ত্রসমূহ আগত দর্শকদের বিপুলভাবে আকৃষ্ট করে। তারা শস্যশ্যামল ও নদীমাতৃক বাংলাদেশের সমৃদ্ধ, অতুলনীয় ও জীবনঘনিষ্ঠ হস্তশিল্পের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

বক্তব্য দিচ্ছেন তারিক আহসান
বক্তব্য দিচ্ছেন তারিক আহসান

ইসলামাবাদের বিভিন্ন মিশনের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা, ইসলামাবাদের মেয়র, উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, সাংবাদিক, প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিক এবং বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সপরিবারে প্রদর্শনীতে যোগদান করেন।

বাদ্যযন্ত্রীদের পরিবেশনা
বাদ্যযন্ত্রীদের পরিবেশনা

প্রদর্শনী শেষে অতিথিদের পোলাও, বিরিয়ানি, গরু, খাসি ও মুরগির মাংস, মাছ, সবজি ও ডালসহ হরেক পদের সুস্বাদু বাংলাদেশি খাবার এবং রসগোল্লা, দই, পিঠা-পায়েসসহ বিভিন্ন ধরনের মিষ্টান্ন দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। এ সময় প্রখ্যাত বাদ্যযন্ত্রীরা অতিথিদের বাংলাদেশের কয়েকটি জনপ্রিয় লোকসংগীতের সুর বাজিয়ে শোনান।

অতিথিরা
অতিথিরা

অতিথিরা শীতের রোদ-ঝলমলে মনোরম পরিবেশে হস্তশিল্প প্রদর্শনী ও আপ্যায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের সুন্দর প্রতিচ্ছবি তুলে ধরার লক্ষ্যে বাংলাদেশ হাইকমিশনের এই উদ্যোগকে আন্তরিকভাবে অভিনন্দন জানান। বিজ্ঞপ্তি