নেদারল্যান্ডসে সীমানা পেরিয়ের বসন্ত উৎসব

অনুষ্ঠানের একটি দৃশ্য
অনুষ্ঠানের একটি দৃশ্য

বাংলাদেশের মতো পয়লা ফাল্গুনে না হলেও সপ্তাহান্তে পাঁচই ফাল্গুনে (১৭ ফেব্রুয়ারি) নেদারল্যান্ডসে বসন্তকে স্বাগত জানাতে বিভিন্ন শহর থেকে বাঙালিরা এসে সব সমবেত হয়েছিলেন আইন্ডহেভেনে। বেলজিয়াম আর জার্মানির কয়েকটি শহর থেকেও এসে যোগ দিয়েছিলেন কিছুসংখ্যক বাঙালি। বসন্ত উৎসব উপলক্ষে দেশ থেকে আনিয়ে নেওয়া নতুন জামা কাপড়ে জমে ওঠে বর্ণিল পরিবেশ। সবার হাসি, গান, গল্পে আনন্দে, মনেই হচ্ছিল না এ নেদারল্যান্ডস; মনে হচ্ছিল সকলে যেন দাঁড়িয়েছিলাম বাংলা একাডেমি কিংবা টিএসসির চত্বরে।

ভাষার মাসে সীমানা পেরিয়ে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বাংলা ভাষার পাশাপাশি অন্য সকল ভাষাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে অনুষ্ঠানে ভিন্ন ভাষা আর জাতীয়তাকেও প্রাধান্য দেওয়া হয়। মূল অনুষ্ঠানটি বাংলা ভাষায় হলেও, এর সঙ্গে নেপালি লোকনৃত্য, ডাচ গান, ইংরেজি নাচ ও ওডিশি নাচ—এসব ছিল অনুষ্ঠানটির মূল আকর্ষণ।
অনুষ্ঠানটি শুরু হয় সীমানা পেরিয়ের নিজস্ব শিল্পীদের পরিবেশনা—‘ফাগুনেরও মোহনায় মন মাতানো মহুয়ায়’ গানটির মাধ্যমে। এরপর চলে নানা শিল্পীদের বিভিন্ন রকম আনন্দঘন বিনোদনের পালা। বিখ্যাত কলাভবনের মনোমুগ্ধকর আয়োজন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘চণ্ডালিকা’ দর্শককে অনেকটা সময় নিশ্চুপ করিয়ে রাখে। এর সঙ্গে আরও ছিল এএলটি সেন্ট্রাল ব্যান্ডের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা, যা পুরো হলকে মাতিয়ে রেখেছিল। এলআরবি, শিলাজিত, অনুপম ও জেমসের গান নিয়ে পরিবেশনায় পুরো অনুষ্ঠানটি ফিরে গিয়েছিল টিএসসির নস্টালজিয়ায়।
ছোট্টমণিদের জন্য ছিল ফেইস পেইন্টিং, মেয়েদের জন্য মেহেদি লাগানোর ব্যবস্থা, জামা-কাপড়ের স্টল, বই এবং হাতে তৈরি ও এক্সক্লুসিভ কারুকাজের জিনিসের স্টল। সীমানা পেরিয়ের নিজস্ব পরিবেশনায় দুপুরের খাবারদাবারের আয়োজনের বাইরে আরও ছিল নানা রকম পিঠার বাহার—বসন্ত উৎসব না! পিঠা ছাড়া হতেই পারে না। এর বাইরে ‘ভূরিভোজ ঝংকার’ নিয়ে এসেছিল ফুচকা, চটপটি, চপ আর নানারকম সন্দেশ।
নানা রঙে, নানা বর্ণে-গন্ধে শেষ হলো এ বছরের বসন্ত আয়োজন। কুহু কুহু মন নিয়ে সবাই আবার অপেক্ষায় থাকব সামনের বছরের জন্য।

তানবীরা তালুকদার: আইন্ডহেভেন, নেদারল্যান্ডস।