কোপেনহেগেনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত
বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত

ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে ভাবগাম্ভীর্য ও বিনম্র শ্রদ্ধায় ভাষাশহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে। ২১ ফেব্রুয়ারি বুধবার স্থানীয় সময় সকালে বাংলাদেশ দূতাবাসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী কর্মসূচির সূচনা হয়। জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন ডেনমার্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত।

বিকেলে বাংলাদেশ দূতাবাসের মিলনায়তনে বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আয়োজনে ডেনমার্কের সরকারি-বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বাংলাদেশিসহ প্রবাসী রাজনীতিক, শিল্পী ও বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার ব্যক্তিরা সপরিবার অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পড়ে শোনানো হয়। এ ছাড়া ভাষাশহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ওপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস নিয়ে কলম্বো ও এথেন্সের বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে নির্মিত দুটি ভিডিও ক্লিপিং দেখানো হয়। পরে ভাষা আন্দোলনসহ বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের সকল শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা এবং দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রবাসী বাংলাদেশিরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। বক্তারা তাঁদের আলোচনায় ভাষাশহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের বিভিন্ন দিক নিয়ে তাঁদের ভাবনা তুলে ধরেন।
রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত তাঁর বক্তব্যে ভাষাশহীদদের আত্মত্যাগ ও কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধুর অবদানের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের জন্য একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালিদের দেওয়া একটি বিশেষ উপহার। তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসে দিবসটির তাৎপর্যের ওপর আলোকপাত করে বলেন, মূলত এই দিনটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্তম্ভ রচনা করে দিয়েছিল।

উপস্থিতি
উপস্থিতি

মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত বলেন, একটি জাতির কৃষ্টি-কালচার তার মায়ের ভাষার মাঝে প্রোথিত থাকে এবং কোনো জাতির সমৃদ্ধি ও প্রগতি তার ভাষার সঠিক মূল্যায়নের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে। পৃথিবীর অনেক দেশের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, একুশের চেতনাকে সমুন্নত রাখার জন্য সর্বস্তরে নির্ভুল বাংলা ভাষার ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
পরিশেষে, তিনি প্রবাসে বেড়ে ওঠা বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের মাঝে বাংলা ভাষার সঠিক ব্যবহার ও প্রসারের মাধ্যমে বাংলাদেশের সমৃদ্ধ কৃষ্টি ও সংস্কৃতির সেতুবন্ধন রচনা করতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানান।
দূতাবাসের আয়োজনে দেশীয় খাবারের পরিবেশনায় সান্ধ্যভোজের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।