নেদারল্যান্ডসে স্থায়ী শহীদ মিনারের নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দৃশ্য
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দৃশ্য

নেদারল্যান্ডসের রাজধানী দ্য হেগে স্থায়ী শহীদ মিনারের নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক গত সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দ্য হেগের জাউডারপার্কে শহীদ মিনারের নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

উল্লেখ্য, ১৯৫২ সালে বাংলা ভাষার জন্য সংঘটিত ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনকে অনুসরণ করে সারা বিশ্বে এখন ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়। দ্য হেগের বাংলাদেশ দূতাবাস গত কয়েক বছর ধরে দেশটিতে একটি স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছিল। এরই ধারাবাহিকতায় দ্য হেগের মিউনিসিপ্যাল কর্তৃপক্ষ স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণের অনুমোদন এবং গত বছর অক্টোবরে জাউডারপার্কে একটি জমি বরাদ্দ প্রদান করেছে। বর্তমানে সেখানে শহীদ মিনার নির্মাণের নকশা প্রণয়নের কাজ চলমান রয়েছে।
কর্মদিবসে বৃষ্টিপাত ও প্রচণ্ড ঠান্ডা উপেক্ষা করে নেদারল্যান্ডস ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। প্রবাসীরা ছাড়াও দূতাবাসের কর্মকর্তা, মিউনিসিপ্যাল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী কর্মকর্তা, স্থানীয় বাসিন্দা ও অন্যান্য অতিথিরা এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে ভাষাশহীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

বক্তব্য দিচ্ছেন মো. শহীদুল হক। তাঁর পাশে রাষ্ট্রদূত শেখ মুহম্মদ বেলাল
বক্তব্য দিচ্ছেন মো. শহীদুল হক। তাঁর পাশে রাষ্ট্রদূত শেখ মুহম্মদ বেলাল

মো. শহীদুল হক ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য জমি প্রদান করায় দ্য হেগের মিউনিসিপ্যাল কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সকল মাতৃভাষা সংরক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধ এবং বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা উল্লেখ করেন। তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন, বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনের গৌরবময় ইতিহাস এখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সুপ্রতিষ্ঠিত।
নেদারল্যান্ডসে নিয়োজিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শেখ মুহম্মদ বেলাল তাঁর বক্তব্যে শহীদ মিনার নির্মাণের পর তা রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনুরোধ করেন। তিনি ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে একাত্মতার মাধ্যমে বাঙালি জাতি যেভাবে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল সেই চেতনা ধারণ করে সবাইকে একত্রিত থাকার আহ্বান জানান।
দ্য হেগের উপমেয়র রবিন বালদেবসিং তার বক্তব্যে বলেন, শহীদ মিনার তথা ভাষা স্মৃতিস্তম্ভটি বাংলা ভাষা আন্দোলনের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত হলেও এই স্মৃতিস্তম্ভটি বিশ্বের সকল ভাষার চিত্র তুলে ধরেছে। হেগ মিউনিসিপ্যাল কর্তৃপক্ষ এই ঐতিহাসিক ঘটনার অংশ হতে পেরে আনন্দিত।

ভিত্তি ফলক
ভিত্তি ফলক

প্রতিকূল আবহাওয়া উপেক্ষা করে অমর একুশে ফেব্রুয়ারির জন্য ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য প্রায় এক শ জনেরও বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি এই অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। শহীদ মিনার নির্মাণের পর প্রবাসী বাংলাদেশিরা যথাযথ মর্যাদায় অমর ২১ ফেব্রুয়ারি পালন করতে পারবেন বলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। বিজ্ঞপ্তি