পূর্ব লন্ডনে স্বাধীন বাংলা পালা ২৫ মার্চ

টি এম আহমেদ কায়সার
টি এম আহমেদ কায়সার

যুক্তরাজ্যের পূর্ব লন্ডনের পপলার ইউনিয়নে আগামী রোববার সন্ধ্যা ছয়টায় মঞ্চস্থ হবে বাংলা পালাগান স্বাধীন বাংলা। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রাধারমণ সোসাইটির প্রযোজনায় অনুষ্ঠিতব্য এই বিশেষ আয়োজনে আনুষঙ্গিক ভিডিওচিত্র, স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের গান ও বাংলা লোকগানের মাধ্যমে বাঙালির উন্মেষ, সংগ্রাম ও সবশেষে একাত্তরের গণহত্যার ইতিহাস ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরা হবে।

পালাগান গ্রন্থনা ও পরিচালনা করেছেন কবি ও সংগঠক টি এম আহমেদ কায়সার। পরিবেশনায় রয়েছেন শিল্পী অমল পোদ্দার, গীতিকার দিলাউর রাহমান মুজিব, অমর বৈদ্য, মুহম্মদ কলন্দর তালুকদার, রাহেল চৌধুরী, নৃত্যশিল্পী সোহেল আহমেদ, পুষ্পিতা গুপ্তা, শিশুশিল্পী আনভিতা গুপ্তা, তানিশা চৌধুরী ও আরিশা চৌধুরী।
সংক্ষিপ্ত আলাপচারিতায় পালাগানের পরিচালক টি এম আহমেদ কায়সার জানান, এই পালাগানটি স্বভাবতই অন্যান্য পালাগানের মতো মিথ বা উপকথাভিত্তিক নয়। এতে রিচুয়ালের বদলে আছে শ্বাসরুদ্ধকর নৃশংস বাস্তবতার ধারাভাষ্য। পালাগানে মধ্যযুগের লোককবি ছাড়াও স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের গান, মুকুন্দ রাম, বাউল করিম, শফিকুন্নুর, আবদুল লতিফ, আবদুল গাফফার চৌধুরী ও গীতকার দিলাউর রাহমানের রচিত হৃদয়স্পর্শী গানগুলো পরিবেশিত হবে ইতিহাসের নানা অনুষঙ্গে।
কায়সার বলেন, আমাদের লক্ষ্য যেহেতু অবাঙালি, অভারতীয় দর্শকদের কাছে আমাদের লোকশিল্পের সৌকর্য পৌঁছে দেওয়া, আমাদের পরিবেশনাগুলোতে একটা প্রচারযোগ্য বিশ্বজনীন শিল্পমানের দিকে তো বাড়তি নজর রাখতেই হয়। স্বাধীন বাংলা পালাতেও কমপক্ষে চল্লিশ ভাগ অভারতীয় দর্শক থাকবেন বলে আমরা ধারণা করছি এবং সকলের কাছে বাংলার উন্মেষ, বাংলার গণহত্যা নিয়ে একটা হৃদয়স্পর্শী আখ্যান উপস্থাপন করার একটা সৎ চেষ্টা আমরা করেছি অন্তত, যাতে দর্শকেরা পালাগান শেষে বাঙালির ওপর সংঘটিত বর্বরতা নিয়ে বাকি বিশ্বের কাছে বলতে পারেন; জানিয়ে দিতে পারেন।
কায়সার আরও বলেন, আমাদের জন্য এই কাজগুলো খুব চ্যালেঞ্জিং। অন্য সকল সংস্কৃতির শিল্পীদেরই নিজেদের একটা গ্রহণযোগ্য দর্শক নেটওয়ার্ক রয়েছে। আমাদের কমিউনিটি অনুষ্ঠানগুলো ছাড়া যেকোনো শিল্প পরিবেশনাগুলোতে এখনো দেন-দরবার করে দর্শক নিয়ে আসার প্রবণতা আমাকে আহত করে। কমিউনিটি অনুষ্ঠানগুলোতে অবশ্য শিশু-কিশোর ও তাদের বাবা মায়েরা আত্মীয়স্বজনরা মিলে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন বা দল বেঁধে অনুষ্ঠান প্রচার করতে পারেন, তাতে অন্তত কমিউনিটি থেকে নানা পেশার কিছু মানুষজন উপস্থিত হন। কিন্তু আমরা প্রথমেই এই সব দর্শকদের টার্গেটের বাইরে রেখেছি। বিশ্ব-সংস্কৃতির আসর থেকে নতুন দর্শক টার্গেট করে একের পর এক এই পরিবেশনাগুলো চালিয়ে যাওয়া চ্যালেঞ্জিং বটে; তবে এতে আনন্দ কম নয়। আমাদের অনুষ্ঠানগুলোতে হলভর্তি মিশ্র বর্ণের দর্শকদের উপস্থিতি একটা প্রত্যয় ও প্রত্যাশার জায়গা ইতিমধ্যেই তৈরি করেছে। স্বাধীন বাংলা পালাগানেও এর ব্যত্যয় হবে না বলে আমার বিশ্বাস।

সুদীপ্তা চৌধুরী: লন্ডন, যুক্তরাজ্য।