২৫ মার্চের গণহত্যা বিংশ শতাব্দীর নিকৃষ্ট পাঁচটি গণহত্যার একটি

ব্যাংককের বাংলাদেশ দূতাবাসে গণহত্যা দিবস স্মরণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন সাইদা মুনা তাসনিম
ব্যাংককের বাংলাদেশ দূতাবাসে গণহত্যা দিবস স্মরণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন সাইদা মুনা তাসনিম

বাঙালি জাতিসত্তাকে সুপরিকল্পিতভাবে নিশ্চিহ্ন করার উদ্দেশ্যেই ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাতে গণহত্যা সংঘটিত হয়। এই গণহত্যা বিংশ শতাব্দীর নিকৃষ্ট পাঁচটি গণহত্যার একটি। এ গণহত্যাকে আন্তর্জাতিকীকরণের উদ্দেশ্যে থাইল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাস কম্বোডিয়ার গণহত্যা জাদুঘর ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের উদ্যোগ নেয়। গতকাল ২৫ মার্চ ব্যাংককের বাংলাদেশ দূতাবাসে গণহত্যা দিবস স্মরণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে থাইল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাইদা মুনা তাসনিম এ কথা বলেন।

উল্লেখ্য, একাত্তরের গণহত্যাকে আন্তর্জাতিকীকরণের উদ্দেশ্যে কারিগরি সহযোগিতার লক্ষ্যে গত ৪ ডিসেম্বর (২০১৭) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক কম্বোডিয়া সফরকালে কম্বোডিয়ার গণহত্যা জাদুঘর ও বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
সাইদা মুনা তাসনিম আরও জানান, ২৫ মার্চের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের লক্ষ্যে দূতাবাস ইতিমধ্যে ব্যাংককে ইউনেসকোর এশিয়া-প্যাসিফিক আঞ্চলিক কার্যালয়ের কাছে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছে। তিনি বলেন, যুগোস্লাভিয়া, রুয়ান্ডা ও কম্বোডিয়াসহ সাম্প্রতিক গণহত্যাগুলোর মতো ২৫ মার্চ জাতিগতভাবে বাঙালিদের গণহত্যার ঘৃণিত ইতিহাসও উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ উপস্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশ দূতাবাস থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ায় সেমিনারের আয়োজন করে গণসচেতনতা সৃষ্টি করবে।
রাষ্ট্রদূত মুনা জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন, জাতিসংঘের গণহত্যা কনভেনশন ও পূর্ববর্তী ঐতিহাসিক গণহত্যাগুলোর পাবলিক ক্যাম্পেইন স্ট্র্যাটেজির আলোকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিসরেও ২৫ মার্চের গণহত্যা দিবসকে প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার বিভিন্ন প্রচারমাধ্যম, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও মানবিক সংস্থার আঞ্চলিক দপ্তরগুলোর সঙ্গে এ বিষয়ে কাজ করে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। রাষ্ট্রদূত উপস্থিত প্রবাসীদের ২৫ মার্চের গণহত্যা দিবসকে স্বীকৃতির পক্ষে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ায় জনমত সৃষ্টির জন্য দলমত-নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দূতাবাসের সঙ্গে একযোগে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে ২৫ মার্চের কালরাতে গণহত্যার শিকার ও মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগকারী সকল শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে কোরআন তিলাওয়াত ও বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এ ছাড়া আলোচনার শুরুতে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞে নিহত শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে একাত্তরের গণহত্যার ওপর নির্মিত ‘৭১-এর গণহত্যা ও বধ্যভূমি’ শীর্ষক একটি বিশেষ প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
বাংলাদেশ দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ব্যাংককে বসবাসরত অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি