দেশের সাফল্য স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপনকে অর্থবহ করেছে

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অতিথিরা
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অতিথিরা

স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে উল্লিখিত সমতা, মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়পরায়ণতার মতো মুক্তিসংগ্রামের আদর্শসমূহ বাংলাদেশকে স্বাধীন জাতি হিসেবে সামনের দিকে দৃঢ় পদক্ষেপে এগিয়ে যেতে পথ নির্দেশনা দিচ্ছে। এ সকল মূল্যবোধ অন্তরে ধারণ করে বাংলাদেশ একটি সহানুভূতিশীল ও দায়িত্ববান সদস্য হিসেবে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশের সাফল্যগাথা এ বারের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্‌যাপনকে সত্যিকারের অর্থবহ করে তুলেছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে ইসলামাবাদে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন, পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার তারিক আহসান।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তারিক আহসান
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তারিক আহসান

ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্‌যাপিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশন ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় স্থানীয় একটি পাঁচতারা হোটেলে এক সংবর্ধনার আয়োজন করে। হাইকমিশনার তারিক আহসান ও তাঁর সহধর্মিণী হাইকমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে আগত অতিথিদের অভ্যর্থনা জানান।
ইসলামাবাদের মেয়র, পাঞ্জাব প্রদেশের খনিজসম্পদ মন্ত্রী, সিনেট ও জাতীয় সংসদ সদস্য, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, বেসামরিক ও সামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সাংবাদিক, প্রবাসী বাংলাদেশি ও হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সপরিবারে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে তারিক আহসান সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। এরপর তিনি মেয়র, মন্ত্রী ও সার্কভুক্ত দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের সঙ্গে নিয়ে স্বাধীনতা দিবসের কেক কাটেন।

জাতীয় সংগীত পরিবেশনের সময় দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শন
জাতীয় সংগীত পরিবেশনের সময় দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শন

তারিক আহসান তাঁর বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন ও দেশের স্বাধীনতা অর্জনে আত্মোৎসর্গকারী শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানের কথাও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি আরও বলেন, ভূমি স্বল্পতা ও সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ জোরপূর্বক স্থানচ্যুত লাখ লাখ রোহিঙ্গা জনগণকে মানবিক কারণে আশ্রয় দিয়েছে এবং এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মাদার অব হিউম্যানিটি হিসেবে প্রশংসিত হয়েছেন।
অনুষ্ঠান চলাকালে এক নৃত্যানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দেশাত্মবোধক গানের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশি শাড়ি পরিহিত নারীদের পরিবেশিত নৃত্য অতিথিদের বিমোহিত করে।
সংবর্ধনাস্থল নানা বর্ণের ফুল ও লাল-সবুজ আলো দিয়ে আকর্ষণীয়ভাবে সজ্জিত করা হয়। এ ছাড়া, বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক নিদর্শন সংবলিত ব্যানার অনুষ্ঠানস্থলের শোভা বর্ধন করে। জাতির পিতা, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ছবিও টানানো হয়। বাংলাদেশের উন্নয়ন ও আকর্ষণীয় পর্যটনস্থানের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত ভিডিওচিত্র দুটি পর্দায় প্রায় সারাক্ষণ প্রদর্শিত হতে থাকে। এ ছাড়া অনুষ্ঠান চলাকালে দেশাত্মবোধক গান বাজানো হয়। বাংলাদেশি খাবারসহ নানরকম সুস্বাদু খাবার পরিবেশিত হয়।

অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশনা
অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশনা

এর আগে দিবসটি উদ্‌যাপন উপলক্ষে ২৬ মার্চ সকালে চ্যান্সারি প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন হাইকমিশনার তারিক আহসান। এর পরপরই সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করেন হাইকমিশনের কর্মকর্তারা।
শেষে বঙ্গবন্ধু ও দেশের স্বাধীনতার জন্য আত্মোৎসর্গকারী শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এ সময় মিশনের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি