পয়লা বৈশাখে বাঙালিয়ানা সাজে সিডনির লাকেম্বা
পয়লা বৈশাখে অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বাঙালিপাড়া খ্যাত লাকেম্বায় রোদ চিকচিক পিচঢালা রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে হয়তোবা ভুলেই যেতেন সাত সমুদ্দর তেরো নদী আর চৌদ্দ প্রহর দূরে কোথায় আছেন আপনি। কারণ সাজ সাজ রব রবে যে এক টুকরো রমনার বটমূল সেজেছিল সিডনির উপশহর লাকেম্বা। এক দেখায় ভুল করেছেন অনেকেই। এমনটি বলেছেন উৎসবে আগত অনিন্দিতা ও তার বন্ধুরা। বাংলা বর্ষবরণের দিনে স্বদেশি ঐতিহ্যে আঁকা রঙিন আলপনার মাঝে বড় করে ‘শুভ নববর্ষ’ লেখা দূরদেশে শিহরিত করেছে বাঙালি মন-প্রাণকে।
বর্ষবরণ উপলক্ষে লাকেম্বায় আয়োজন করা হয়েছিল দিনব্যাপী বৈশাখী উৎসবের। এ আয়োজন উপলক্ষে লাকেম্বার রেলওয়ে প্যারেডে দেশীয় বৈশাখ উদ্যাপনের অংশ হিসেবে রাস্তাজুড়ে আঁকা হয়েছিল রংবেরঙের বৈশাখী আলপনা। সাজানো হয়েছিল লোকজ গ্রামবাংলার এটা-সেটা মাটির কাঁখ, হাঁড়ি কিংবা পুতুল ও হাতপাখার মিষ্টি ছবির রঙিন ফেস্টুন দিয়ে। স্থানীয় বাঙালি স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে আলপনা আঁকেন চিত্রশিল্পী পার্থ প্রতিম বালা। রংবেরঙের আলপনা দেখতে প্রবাসী বাঙালিরা সকাল থেকে ভিড় জমান লাকেম্বায়। বাঙালির এ প্রাণের উৎসবের সঙ্গে একাত্ম প্রকাশ করে স্থানীয় কাউন্সিল বিকেল ৪টা পর্যন্ত রেলওয়ে প্যারেড রাস্তাটি বন্ধ রেখে উৎসবকে মিলনমেলায় পরিণত করে। এ মেলায় বসেছিল বই থেকে গুড় মুড়ি, পান্তা ইলিশ থেকে গামছা লুঙ্গির হাট। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে সিডনির এ রাস্তা হয়ে উঠছিল তারুণ্যের এক উচ্ছ্বাস।
আয়োজকদের অন্যতম মুনির বিশ্বাস বলেন, এবার শুরু হলো। দিনে দিনে বৈশাখের এ রং, উচ্ছ্বাস, তারুণ্য আরও শহরে ছড়িয়ে পড়বে। লাকেম্বার এ উৎসব খুব কম সময় নিয়ে আয়োজন করেছি। ভবিষ্যতে আরও ব্যাপক আকারে, আরও বৈচিত্র্যময় হবে।
গত শনিবার পয়লা বৈশাখে স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টা থেকে এ উৎসব শুরু হয়। লাকেম্বার এ বৈশাখী উৎসবে রেলওয়ে প্যারেডের রাস্তাজুড়ে নানা সামগ্রী নিয়ে বৈশাখী মেলা বসে। বৈশাখী মঞ্চে ‘এসো হে বৈশাখ’ গানের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী বর্ষবরণ উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়। যৌথভাবে এ উৎসব আয়োজন করে বাংলা হাব ও রেলওয়ে প্যারেড ব্যবসায়ী মালিক সমিতি। স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে প্রবাসী সংগঠন ওপেন ফ্রেন্ডস সার্কেল সহযোগিতা করে সার্বক্ষণিক।