উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি বিস্ময় নয় বরং সময়ের দাবি

অনুষ্ঠানে আলোচকদের ফুল দিয়ে সংবর্ধিত করা হয়
অনুষ্ঠানে আলোচকদের ফুল দিয়ে সংবর্ধিত করা হয়

বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হওয়ার যোগ্যতা অর্জনের স্বীকৃতি কোনো বিস্ময় নয় বরং সময়ের দাবি। অটোয়ায় বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হওয়ার যোগ্যতা অর্জনের স্বীকৃতি উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানে কানাডার মন্ত্রী ও সাংসদেরা এভাবেই বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জিত সাফল্যের মূল্যায়নে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

বাংলাদেশ হাইকমিশন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে কানাডার ওন্টারিও প্রদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ ও বনবিষয়ক মন্ত্রী নাতালি দে রসিয়ের এবং অটোয়া ভানিয়ের ও নেপিয়ানের সাংসদ মোনা ফন্তিয়ে ও চান্দ্রা আরিয়া, প্রবাসী বাংলাদেশি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কূটনীতিক কমিউনিটির সদস্য, গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা।

শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন নাতালি দে রসিয়ের, মোনা ফন্তিয়ে ও চান্দ্রা আরিয়া
শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন নাতালি দে রসিয়ের, মোনা ফন্তিয়ে ও চান্দ্রা আরিয়া

বাংলাদেশে হাইকমিশনের মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি দুই পর্বে বিভক্ত ছিল। অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ‘Graduation of Bangladesh from LDCs: A way forward’ শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। দ্বিতীয় পর্বে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
আলোচনা অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। এরপর হাইকমিশনের কাউন্সেলর ও হেড অব চ্যান্সারি আলাউদ্দিন ভূঁইয়া আলোচনার শুরুতে স্বল্পোন্নত দেশের সংজ্ঞা, এ সংক্রান্ত বিভিন্ন উপাত্ত, উত্তরণের সূচক, বাংলাদেশের উত্তরণের পরিক্রমা সম্পর্কে বক্তব্য উপস্থাপন করেন।

বক্তব্য দেন মিজানুর রহমান
বক্তব্য দেন মিজানুর রহমান

আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্য থেকে নাতালি দে রসিয়ের, সাংসদ মোনা ফন্তিয়ে ও চান্দ্রা আরিয়া শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। নাতালি দে রসিয়ের কানাডায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের গঠনমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য বিশেষ ধন্যবাদ জানান।
প্রবাসীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন ড. মনজুর চৌধুরী ও অধ্যাপক ওমর সেলিম শেখ। মূল আলোচনায় অংশ নেন কানাডার স্বনামধন্য কার্লটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এলিওট টেপার, অটোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিপা ব্যানার্জি, ব্যাংক অব কানাডার পরিচালক সুব্রত সরকার, ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট অমিত চাকমা এবং গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক নির্বাহী পরিচালক ও বাংলাদেশে কানাডার সাবেক হাইকমিশনার রবার্ট ম্যাক ডুগাল। বক্তারা সকলেই এই প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।

সাংস্কৃতিক পরিবেশনা
সাংস্কৃতিক পরিবেশনা

সমাপনী বক্তব্যে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মিজানুর রহমান বাংলাদেশের অর্জিত সাফল্যের এক তুলনামূলক বিশ্লেষণ ও স্বাধীনতা পরবর্তী যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়াবার গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি সকলকে একযোগে কাজ করার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্বে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তিনি বাংলাদেশের উন্নয়নের এই অভূতপূর্ব অগ্রযাত্রায় কানাডার ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং দুই দেশের মধ্যকার বিরাজমান অর্থনৈতিক সম্পর্কের উন্নয়নে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি এ ধারা অব্যাহত রাখতে দুই দেশের সচেষ্ট থাকার গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
অনুষ্ঠানে আলোচকদের ফুল দিয়ে সংবর্ধিত করেন হাইকমিশনের প্রথম সচিব অপর্ণা পাল।

উপস্থিতির একাংশ
উপস্থিতির একাংশ

দ্বিতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে কখন আপনি শীর্ষক সমবেত সংগীতের মাধ্যমে এবং এরপর একে একে পরিবেশিত হয় নজরুল সংগীত, দেশাত্মবোধক ও পল্লিগীতি। অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী যন্ত্রসংগীত বাঁশি বাদনের মাধ্যমে। এই পর্বে অংশগ্রহণ করেন শিশির শাহনেওয়াজ, ডালিয়া ইয়াসমীন, ফারহানা আহমেদ চৌধুরী ও সাখাওয়াত হোসেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে আমন্ত্রিত অতিথিদের নৈশভোজে আপ্যায়িত করা হয়।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন হাইকমিশনের কাউন্সেলর ফারহানা আহমেদ চৌধুরী। সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন আলাউদ্দিন ভূঁইয়া। বিজ্ঞপ্তি