লিসবনে বৈশাখী উৎসব

মঙ্গল শোভাযাত্রা
মঙ্গল শোভাযাত্রা

বাংলা পঞ্জিকার প্রথম মাসের প্রথম দিন অর্থাৎ ১ তারিখ বাঙালি জাতির ঐতিহ্য অনুযায়ী বাংলা নববর্ষকে বরণ করা হয়। দিনটি বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের পশ্চিম বাংলাসহ আরও কয়েকটি দেশে নববর্ষ হিসেবে বিশেষ উৎসবের সঙ্গে পালিত হয়। শুধু বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিম বাংলার বাঙালিরাই নয় সারা বিশ্বে বসবাসরত বাঙালিরাও এই উৎসবে অংশ নিয়ে থাকেন। সে হিসেবে এটি বাঙালিদের একটি সর্বজনীন লোক উৎসব হিসেবে বিবেচিত।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে উদ্‌যাপন করা হয়েছে বৈশাখী উৎসব। গান, নৃত্য, মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে প্রথমবারের মতো লিসবনে পালিত হয়েছে বৈশাখী উৎসব। বাংলা নববর্ষ ১৪২৫ উদ্‌যাপন উপলক্ষে গত রোববার (২৯ এপ্রিল) লিসবনের ওরিয়েন্ত মিউজিয়ামে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় এক অনুষ্ঠানের। দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানটি বিপুলসংখ্যক দর্শক উপভোগ করেন।
দুই পর্বের এই অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় প্রথমে বাঙালি ঐতিহ্য অনুযায়ী অতিথিদের স্বাগত জানানো হয়। সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। প্রবাসী বাঙালি ও স্থানীয় পর্তুগিজরা টাগুস নদীর তীরে অনুষ্ঠিত এ শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন। এরপর ‘কালার অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক দেশীয় পোশাক ও চিত্রকলা প্রদর্শন করা হয়।

বাংলার ঐতিহ্যবাহী বিবাহ অনুষ্ঠানের নাটিকার একটি দৃশ্য
বাংলার ঐতিহ্যবাহী বিবাহ অনুষ্ঠানের নাটিকার একটি দৃশ্য

অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী বিবাহ অনুষ্ঠানের নাটিকা। দুপুরে উৎসবে আগত অতিথি ও প্রবাসীদের জন্য আয়োজন করা হয় দেশীয় পান্তা ভাত, হরেক রকমের ভর্তা, ইলিশ ভাজা আর মিষ্টান্ন। আর দ্বিতীয় পর্বে ছিল নাচ ও গানের জমজমাট আয়োজন। শুরু হয় সন্ধ্যা ৬টায় ওরিয়েন্ত মিউজিয়াম অডিটোরিয়ামে। এতে সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন প্রবাসী বাংলাদেশি শিল্পীরা।
এ ছাড়া দেশীয় শাড়ি ও পাঞ্জাবি পোশাকের ফ্যাশন শো অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন পর্তুগালে অধ্যয়নরত বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থী ও প্রবাসী বাংলাদেশিরা। অনুষ্ঠানে আগত সকল বিদেশি অতিথি বাংলাদেশি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য দেখে মুগ্ধ হয়েছেন। তারা বাংলাদেশ দূতাবাস লিসবনকে ধন্যবাদ দিয়েছেন বিশেষ করে মেহেদি দিয়ে হাত রাঙানো, শাড়ি পরা শেখার ব্যবস্থা ও বাঙালি খাবার পরিবেশন করার জন্য।
অনুষ্ঠান শেষে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রুহুল আলম সিদ্দিক দেশে ও প্রবাসে বসবাসরত সকল বাংলাদেশিকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে অনুষ্ঠান সফল করার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানান।

জহুর-উল-হক: লিসবন, পর্তুগাল।