বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত নিয়ে টোকিওতে সেমিনার

মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকেই জাপান বাংলাদেশের সবচেয়ে কাছের বন্ধু। টোকিও বিগ সাইটে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ: ইয়োর আইটি ডেস্টিনেশন’ শীর্ষক সেমিনারে এ কথা বলেন বাংলাদেশ সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার। আজ (১০ মে) বিকেলে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের দক্ষ কর্মীর প্রচুরতা ও বাংলাদেশে বিনিয়োগের স্থিতিশীল পরিবেশ এবং সরকারের সহযোগিতার কথা তুলে ধরে মন্ত্রী জাপানি বিনিয়োগকারীদের বিশ্বে আইটির নতুন গন্তব্য বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। তিনি বলেন, আইসিটি বাংলাদেশের অন্যতম গতিশীল খাত যা বাংলাদেশের উন্নয়নকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ আজ স্যাটেলাইট যুগে প্রবেশ করছে, আজ কিছু সময় পরেই আমরা নিজেদের স্যাটেলাইট-‘বঙ্গবন্ধু-১’ উৎক্ষেপণ করব, যা তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের সম্ভাবনাকে বহুগুণ বৃদ্ধি করবে।

রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশ সরকার আইসিটি খাতে বিনিয়োগের ওপর অধিক গুরুত্ব দিয়েছে এবং কর অবকাশ ও অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে। বিদ্যমান জাপান-বাংলাদেশ চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের কথা তুলে ধরে রাবাব ফাতিমা দুই দেশের মধ্যে আরও গভীর ব্যবসায়িক সম্পর্ক গড়ে ওঠার আশা প্রকাশ করেন। তিনি মিয়াজাকি-বাংলাদেশ মডেল অনুসরণ করে বাংলাদেশ থেকে আইটি খাতে দক্ষ কর্মী নিয়োগ এবং বাংলাদেশ হাইটেক পার্কে বিনিয়োগের জন্য জাপানি ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান।
জাপানপ্রবাসী বাংলাদেশি আইটি ব্যবসায়ীদের দুই দেশের মধ্যে সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করার অনুরোধ করেন তিনি। অনুষ্ঠিত সেমিনারকে সময়োপযোগী মন্তব্য করে রাষ্ট্রদূত সেমিনারের সাফল্য কামনা করেন ও সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।

জাপান আইটি উইক ২০১৮-এর সঙ্গে সমন্বয় করে আয়োজন করা এই সেমিনারের উদ্যোক্তা ছিল টোকিওর বাংলাদেশ দূতাবাস; আইসিটি বিভাগ; বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথোরিটি ও বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল। এ ছাড়া সার্বিক সহযোগিতা করে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), জাইকা, জেট্রো ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান।
সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য উপস্থাপন করেন আইসিটি বিভাগ থেকে বাংলাদেশ হাইটেক পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সচিব হোসনে আরা বেগম; বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের পক্ষে বাংলাদেশ দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর হাসান আরিফ, বেসিসের তারেক ভূঁইয়া ও বাংলাদেশে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন প্রতিনিধি। মিয়াজাকি-বাংলাদেশ মডেল নিয়ে বিশদ আলোচনা করেন জাইকার ইয়াশুইকো ইউগি।

বক্তারা বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ভবিষ্যৎ ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোকপাত করেন। আলোচকেরা দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন, বাংলাদেশই হবে বিশ্বে আইটি খাতের পরবর্তী গন্তব্য। সেমিনারে জাপানের আইটি খাত সম্পর্কিত অনেক উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী ও তাদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে দুই দেশের ব্যবসায়ীরা নেটওয়ার্কিং করে নিজেদের মধ্যে কুশল বিনিময় ও পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। বিজ্ঞপ্তি