কোপেনহেগেনে বাঙালি সংস্কৃতির প্রদর্শনী

অনুষ্ঠানের নানা দৃশ্য
অনুষ্ঠানের নানা দৃশ্য

ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে বাংলাদেশ দূতাবাস ও ডেনমার্কপ্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে জমকালো ও বর্ণিল বর্ষবরণ ও রসনা উৎসবের মাধ্যমে বাঙালি সংস্কৃতির এক প্রদর্শনী। বাল্টিক সাগরের তীরঘেঁষা বাংলাদেশ দূতাবাসের নয়নাভিরাম সবুজ চত্বরে গতকাল শনিবার (১২ মে) স্থানীয় সময় বিকেলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। নানা শ্রেণি-পেশার অনেক ডেনিশ ও ইউরোপিয়ান নাগরিক, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক কোরের সদস্য এবং বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাঙালিরা সপরিবার দূতাবাস প্রাঙ্গণে ভিড় জমান।তারা প্রাণভরে উপভোগ করেন বাংলাদেশি গান, নাচ, কবিতা আর আস্বাদ নেন হরেক রকম সুস্বাদু ও মুখরোচক বাংলাদেশি খাবারের।

চ্যানেল ২৪–এর সাবেক সংবাদ-পাঠিকা শেখ ফাতেমা ওয়ারার প্রাণবন্ত সঞ্চালনায় ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’ সমবেত সংগীত দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। ডেনমার্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত আর তাঁর সহধর্মিণী রুবি পারভীন আগত অতিথিদের নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান এবং অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা জানান। ‍রুবি পারভীন তাঁর স্বাগত বক্তব্যে মন্তব্য করেন, এ ধরনের বর্ণিল ও চমকপ্রদ আয়োজন শুধু বিদেশিদের কাছে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি বৃদ্ধি করবে না বরং তার সঙ্গে সঙ্গে প্রবাসে বেড়ে ওঠা বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের কাছে বাঙালির সমৃদ্ধ কৃষ্টি-কালচারকে পরিচয় করিয়ে দেবে।

অনুষ্ঠানের নানা দৃশ্য
অনুষ্ঠানের নানা দৃশ্য

রাষ্ট্রদূত মুহিত উল্লেখ করেন, দূতাবাসের এবারের এই উদ্‌যাপন বিশেষভাবে আনন্দদায়ক। কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের মহাকাশে বঙ্গবন্ধু-১ উপগ্রহ উৎক্ষেপণের সঙ্গে এই আয়োজন যুগপৎভাবে মিলে গেছে। উপগ্রহ উৎক্ষেপণ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন-পূরণের পথে আরেকটি সিঁড়ি অতিক্রমের অনন্য উদাহরণ।
বর্ষবরণ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় স্নাতক সঞ্চারী হালদারের অলংকরণ ও প্রবাসী চিত্রশিল্পী সুরভির সহযোগিতায় পুরো দূতাবাসকে বাঙালি সংস্কৃতির আদলে রঙিন সাজে সাজানো হয়। এই সাজ বিদেশি অতিথিদের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ ও ঔৎসুক্যের জন্ম দেয়। টানা চার ঘণ্টাব্যাপী মনোমুগ্ধকর অনুষ্ঠানে নাচ পরিবেশনায় ছিল অরণ্য, লিয়া, অপূর্বা, অহনা, টিনা, তুবা। এ ছাড়া রাষ্ট্রদূত ছাড়াও গান গেয়েছেন নুসরাত, অর্ণব, তুলি ও শোয়েব সাঈদ। স্কটিশ গায়ক জিম অ্যাকুস্টিক গিটার হাতে দর্শকদের মাতান তাঁর গানে।
চার শরও বেশি অতিথি তাঁদের রসনা তৃপ্ত করেন মুখরোচক বাঙালি খাবারের বিপুল সম্ভারে। দূতাবাস আর প্রবাসী বাংলাদেশিদের পরিবেশনায় ছিল বিভিন্ন রকমের পিঠা-পুলি, বিরিয়ানি, দই-মিষ্টি, সন্দেশ-রসগোল্লা, ফুচকা-চটপটি, ঝাল-নাশতাসহ আরও অনেক আয়োজন।

অনুষ্ঠানের নানা দৃশ্য
অনুষ্ঠানের নানা দৃশ্য

দূতালয় প্রধান শাকিল শাহরিয়ার তাঁর সমাপনী বক্তব্যে গতবারের মতো এবারও এই মাপের বিশাল আয়োজন সুন্দরভাবে সফল করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ দিয়ে অনুষ্ঠানের ইতি টানেন।
এই উদ্‌যাপন ছিল প্রবাসের মাটিতে সংস্কৃতি ও রসনা কূটনীতির একটি অনুকরণীয় উদাহরণ, যা ডেনমার্কের প্রবাসী বাঙালিসহ অনুষ্ঠানে আশা অনেক বিদেশি অভ্যাগতদের মনে একটি মধুর স্মৃতি হয়ে থাকার পাশাপাশি পরিচয় করে দিয়েছে এক নতুন ও ইতিবাচক বাংলাদেশকে। বিজ্ঞপ্তি