শক্তিশালী অর্থনীতিতে জোর দেবে অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়ার অর্থমন্ত্রী স্কট মরিসন ফেডারেল সংসদে গত ৮ মে সন্ধ্যায় বাজেট পেশ করেন
অস্ট্রেলিয়ার অর্থমন্ত্রী স্কট মরিসন ফেডারেল সংসদে গত ৮ মে সন্ধ্যায় বাজেট পেশ করেন

অস্ট্রেলিয়ায় চলতি অর্থবছরের বাজেট প্রকাশ করা হয়েছে। দেশটির অর্থমন্ত্রী স্কট মরিসন ফেডারেল সংসদে গত ৮ মে সন্ধ্যায় বাজেট পেশ করেন। এটি আগামী ফেডারেল নির্বাচনের আগে সরকারের শেষ বাজেট। এ সময় দেশটির প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল থেকে বিরোধীদলীয় নেতা বিল শর্টেনসহ সকল গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধি সংসদে উপস্থিত ছিলেন। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে দেশটির অর্থনীতিকে আরও সমৃদ্ধ করতে পরিকল্পনা করা হয়েছে। দেশটির মধ্যম আয়ের নাগরিকসহ ছোট ও মাঝারি ব্যবসার কর লাঘব করে দেওয়া এবং আরও কর্মসংস্থান তৈরিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে এবারের বাজেটে। পাশাপাশি বৃদ্ধ নাগরিকদের আরও দীর্ঘ সহায়তা প্রদানও গুরুত্ব পায় বাজেটের মূল অংশে। এ ছাড়া অবকাঠামোগত উন্নয়নের বেশ বড় কয়েকটি প্রকল্পও রয়েছে।

জীবনযাপনের ব্যয় হ্রাস ও বৃদ্ধ নাগরিকদের সহায়তা বৃদ্ধি

বাজেট প্রকাশকালে মরিসন দেশটির বার্ষিক আয়ের একটি সার-সংক্ষেপ পেশ করেন। তিনি জানান, গত অর্থবছরের চেয়ে এ বছর দেশটির বার্ষিক আয় ৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ বাড়বে। গত অর্থবছরে দেশটির গড় আয় ছিল প্রায় ৪৫৬ দশমিক ২ বিলিয়ন অস্ট্রেলীয় ডলার। এ বছর সরকার প্রায় ৪৮৬ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারের রাজস্ব আয় করার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী অর্থবছরে এ আয় বেড়ে ৫০০ বিলিয়ন পেরোবার সম্ভাবনার কথাও জানান অর্থমন্ত্রী স্কট মরিসন। তবে অস্ট্রেলিয়ার জীবনযাপনের ব্যয় কমাতে গড় খরচ ১৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনা হবে। গত অর্থবছরের জীবনযাত্রার ব্যয় ছিল ১৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। পাশাপাশি বৃদ্ধ নাগরিকদের আরও দীর্ঘ সহায়তা প্রদানের প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে এবং মেডিকেয়ারে নতুন কোনো কিছু আরোপ করা হবে না।

মধ্য ও নিম্নবিত্ত নাগরিকদের আয়কর হ্রাস ও কালো টাকা ঠেকাতে কঠোর ব্যবস্থা

অস্ট্রেলিয়ার ব্যক্তিগত আয়কর কমাতে সাত বছরের নতুন আয়কর পরিকল্পনা করেছে সরকার। মধ্য ও নিম্নবিত্ত নাগরিকদের জন্য এ পরিকল্পনা কার্যকর করা হবে। নিম্নআয় অর্থাৎ যাদের বাৎসরিক ৩৭ হাজার ডলার বা তার কম আয় তাদের আয়কর বছরে ২০০ ডলার পর্যন্ত এবং মধ্যম আয় যাদের আয় ৪৮ হাজার থেকে ৯০ হাজার ডলারের মধ্যে তাদের আয়কর ৫৩০ ডলার পর্যন্ত ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব রাখা হয় বাজেটে। এদিকে দেশটির কালো টাকা পাকড়াও করতে আয়কর ব্যবস্থা আরও কঠোর করার প্রস্তাব রাখা হয় বাজেটে। এতদসংক্রান্ত একটা টাস্কফোর্স গঠন করা হবে।

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ছোট ও মাঝারি ব্যবসার কর হ্রাস

ছোট ও মাঝারি ব্যবসাকে দেশের অর্থনীতির একটি বড় অংশ হিসেবে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার এবারের বাজেটে। তাই এ ধরনের ব্যবসাগুলোকে উৎসাহিত করতে ছোট ও মাঝারি ব্যবসার কর হ্রাস করার প্রস্তাব রাখা হয় বাজেটে। যেসব ব্যবসার বার্ষিক আয় ব্যয় ৫০ মিলিয়ন ডলার তাদের কর প্রদানের হার ৩০ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। বড় ব্যবসাকে গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত করতে এ খাতের করও কমিয়ে দেওয়া হবে।

প্রি-স্কুল উন্নয়ন ও সিডনির পশ্চিমাঞ্চলে বিমানবন্দর নির্মাণে বরাদ্দ

অস্ট্রেলিয়ার শিক্ষার মান আরও বৃদ্ধিতে করার বিষয়টি প্রাধান্য পায় বাজেটে। আগামী চার বছরের জন্য প্রায় ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ রাখা হয়েছে স্কুলগুলোকে উন্নত করতে। প্রি-স্কুল ও কিন্ডারগার্টেনের জন্য আরও ৪ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ রাখা হয়। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৭৫ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে মেলবোর্ন বিমানবন্দর রেলওয়ে নির্মাণ ও ব্রুস হাইওয়ে, পার্থ মেট্রো এবং সিডনির পশ্চিমাঞ্চলে বিমানবন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

সূত্র: অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুলের প্রেরিত ইমেইল।