ভিয়েনায় বৈশাখী মেলা

বৈশাখী মেলায় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা
বৈশাখী মেলায় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা

বর্ণাঢ্য ও বর্ণিল আয়োজনে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে বৈশাখী মেলা। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সাড়ম্বরে বাংলা নতুন বছরকে বরণ করেছেন ভিয়েনাপ্রবাসী বাঙালিরা। ভিয়েনার ভিএইচএস গ্রওসফিল্ডসিডলুং হলে গত শনিবার (১২ মে) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান দুপুর ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলে। পুরোটা সময় সপরিবারে বৈশাখের আমেজে মেতে ছিলেন প্রবাসীরা।

হলটি সম্পূর্ণ দেশীয় আঙ্গিকে নানা রঙের পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন দিয়ে সাজানো হয়। আয়োজনে মন-মাতানো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়াও ছিল সাতটি স্টল। স্টলে ছিল নানা ধরনের পিঠা, ভর্তা ও পান্তা-ইলিশসহ বিভিন্ন রকম বাঙালিয়ানার স্বাদের খাবার। রঙিন শাড়ি আর রঙিন পাঞ্জাবিতে ভিন্ন আমেজে সবাই মেতে ওঠেন। জ্বলে ওঠে বাঙালি সংস্কৃতির চিত্র। ছিল হস্তশিল্প সামগ্রী। স্টলগুলোতে প্রবাসীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল লক্ষণীয়।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর

অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে সস্ত্রীক উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রিয়ায় নিযুক্ত ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, সিঙ্গাপুর, নামিবিয়া, আফগানিস্থান, আলজেরিয়া, আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, ইকুয়েডর, হাঙ্গেরি, ইরাক, জাপান, জর্ডান, মালয়েশিয়া, মরক্কো, মিয়ানমার, নাইজেরিয়া, পেরু ও সুদানের রাষ্ট্রদূতেরা। এ ছাড়া বাঙালি কমিউনিটির নেতৃস্থানীয়দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সর্ব ইউরোপিয়ান শাখার সহসভাপতি অস্ট্রিয়াপ্রবাসী এম নজরুল ইসলাম, অস্ট্রিয়া শাখার সভাপতি খন্দকার হাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ অস্ট্রিয়া ইউনিট কমান্ডের কমান্ডার বায়েজিদ মীর, জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আণবিক সংস্থার কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, সাবেক কর্মকর্তা ড. শহীদ হোসেন, জাতিসংঘের শিল্প উন্নয়ন সংস্থার (ইউনিডো) সিনিয়র আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ কাশফিয়া মনসুরসহ অনেকে।

অনুষ্ঠানে আগত কয়েকজন
অনুষ্ঠানে আগত কয়েকজন

জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর তাঁর স্বাগত বক্তব্যে সবাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, পয়লা বৈশাখ আমাদের সর্বজনীন ও অসাম্প্রদায়িক উৎসব। এ ধরনের অনুষ্ঠান কেবল আমাদের সংস্কৃতিকেই বাঁচিয়ে রাখবে না, বাঙালি সংস্কৃতিতে উজ্জীবিত হবে প্রবাসে আমাদের নতুন প্রজন্ম। তিনি স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ সম্পর্কে বিসারিত তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন অস্ট্রিয়াপ্রবাসী কণ্ঠশিল্পী নাহিদ খান সুমি, জান্নাতুল ফরহাদ ও ইয়াসিম মিয়া। এ ছাড়া সংগীতানুষ্ঠানে অংশ নেয় জুয়েল, মইন, রিক্তা, আলিন, আলিসা, ফারজানা, জাকিয়া, ঐশ্বর্য, প্রজ্ঞা, প্রভা, রামিতা, ইশিতা, অয়ন, অর্জন, পিয়ানা, মালিহা, জারা, সারা, শিমন, এথিনা, আনিকা, লিয়ানা, রাম, প্রদীপ্ত, রোদেলা, সারা খান, পিউল, আধরিয়া, বীথি, ফারা, অর্ণব ও জাকারিয়া প্রমুখ শিশুশিল্পী। নৃত্য পরিবেশন করে শিশুশিল্পী রামিতা সাহা, পূর্ণা, প্রজ্ঞা, প্রভা, অর্জন দাস, প্রথমা, ঐশিক, তুষার, উৎস ও আরোহী প্রমুখ।

শ্রোতাদের একাংশ
শ্রোতাদের একাংশ

তবলায় ছিলেন বিশ্বজিৎ ঘোষ। মিউজিকে ছিলেন আনন্দ। সঞ্চালনা করেন বন্নিমা খান, মুন হোসেন ও লতিফুর রহমান।
বাংলার গান ও মন ছোঁয়া নৃত্যে অনুষ্ঠানটি হয়ে ওঠে এক টুকরো বাংলাদেশ। অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে ছিল পুরস্কার বিতরণ। সংগীত ও নৃত্য পরিবেশনকারী সবাইকে এবং স্টলদাতা সংগঠনকে পুরস্কৃত করা হয়।

আনিসুল হক: ভিয়েনা, অস্ট্রিয়া।