একটি স্বীকৃতি
এ স্বীকৃতি অভাবনীয় নয়। তবে বিরল। ইফতেখার হোসেন বাবুল সেদিন সম্মাননা গ্রহণ করলেন। চলতি ২০১৮ সাল হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের জাতির জনক শেখ যায়েদ বিন সুলতান আল নাহহিয়ানের শততম জন্মবার্ষিকী। আমিরাত সরকার এই বছরকে ইয়ার অব যায়েদ ঘোষণা করেছে। একে স্মরণীয় করে রাখতে দেশটিতে বসবাসকারী এক শ দেশের নির্বাচিত ব্যক্তিত্বকে স্বীকৃতি দিয়েছে দুটি প্রতিষ্ঠান। আবুধাবি পুলিশ ও আহালিয়া গ্রুপ। বাংলাদেশি ইফতেখার হোসেন সেই নির্বাচিত ব্যক্তিত্বের একজন।
আবুধাবির সাত তারা হোটেল এমিরেটস প্যালেস। সম্প্রতি এখানেই অনুকরণীয় নেতৃত্ব হিসেবে তাঁকে সার্টিফিকেট অব এক্সিলেন্স সম্মাননা ক্রেস্ট দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে ছিল সনদ। এ সম্মাননা হস্তান্তর করেন দুই প্রতিষ্ঠানের দুই পুরোধা। আবুধাবি পুলিশের লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইয়িদ আল মানসুরি ও আহালিয়া গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ডাক্তার ভিএস গোপাল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান এবং বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সেলর ও মিনিস্টার মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন খান। আরও ছিলেন প্রায় এক শ দেশের রাষ্ট্রদূত। এ ছাড়া আমিরাত সরকার ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ছিলেন।
ইফতেখার হোসেন বঙ্গবন্ধু পরিষদ আবুধাবির সভাপতি। দলমত-নির্বিশেষে সবাই তাঁকে ভালোবাসেন। বিপুল গ্রহণযোগ্যতা আছে তাঁর। তিনি বাংলাদেশ স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা বোর্ডের সদস্য। সমাজের কল্যাণে মেধা ও শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন। আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে মানুষের সেবা করছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসী বাঙালির পাশে থেকে কল্যাণ কর্মে অবদান রেখে যাচ্ছেন।
ড. রেজা খান এ স্বীকৃতিকে জাতির জন্য গর্বের বলে উল্লেখ করেন। তিনি এই বিরল সম্মান প্রাপ্তিতে প্রাপককে ধন্যবাদ জানান। বলেন, এ সম্মাননা সমাজকর্মীদের কাছে অনুপ্রেরণার।
ড. হাবিব উল হক খোন্দকার বলেন, নেতৃত্বের পাশাপাশি ইফতেখার হোসেনের মানবিক গুণাবলি ঈর্ষণীয়। পর্দার অন্তরালে থেকে কাজ করে যান। দলের ভেতরেও বাইরে তিনি সমাদৃত। তাঁর সততা, ভদ্রতা, শিষ্টাচার উদাহরণ হয়ে থাকবে।
অধ্যাপক আবু তাহের বলেন, এই সম্মাননার মধ্য দিয়ে প্রকৃত অর্থে বাঙালি জাতি সম্মানিত হলো। তিনি এই দেশের সরকার এবং স্বীকৃতিদাতা দুই প্রতিষ্ঠানকে ধন্যবাদ জানান। অভিনন্দন জানান প্রাপককে।
জাহাঙ্গীর কবির বাপ্পী। কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রগতিশীল চিন্তাভাবনা লালন করেন এই মানুষটি। বঙ্গবন্ধু, একাত্তর এবং মুক্তিযুদ্ধ প্রশ্নে তিনি কখনো আপস করেন না।
ইমরাদ হোসেন ইমু। বঙ্গবন্ধু পরিষদ, আবুধাবির জ্যেষ্ঠ সভাপতি। বলেন, দল ও সরকারের জন্য তাঁর আছে নিরলস শ্রম। দীর্ঘদিন ধরে তিনি তাঁর মেধা এবং শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন সমাজের জন্য। তারই ফল এই স্বীকৃতি, বলেন তিনি।
সম্মাননা ক্রেস্ট গ্রহণকালে ইফতেখার হোসেন বাবুল আমিরাতের জনক এবং দেশের নেতৃত্বের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান জানান। বলেন, এ অর্জন আট লাখ প্রবাসী বাঙালির। মানবতার কল্যাণে কাজ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
এমিরেটস প্যালেস হোটেলের এ সন্ধ্যা ঝলমল করছিল। বোধ করি, সন্তানের স্বীকৃতি প্রাপ্তির আনন্দে জননী জন্মভূমির কোলটাও ভরে ওঠে। তখন দ্যুতি ছড়াচ্ছিল সম্মাননা ক্রেস্টগুলো। এমনি করে চকচক করে উঠুক বাংলাদেশের মানুষের মুখগুলো, এই কামনা।