পাটের সোনালি ভবিষ্যৎ নিয়ে জাপানে আলোচনা

আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সাবের হোসেন চৌধুরী
আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সাবের হোসেন চৌধুরী

বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল পাট দেশের সীমা ছাড়িয়ে বিশ্ব জয় করতে প্রস্তুত। জাপানে পাটের বাজার সৃষ্টির উদ্দেশ্য নিয়ে পাটের পরিবেশবান্ধব ব্যবহার ও পাটের অপার সম্ভাবনা সংক্রান্ত এক আলোচনা ও বিজনেস টু বিজনেস (বি-টু-বি) নেটওয়ার্কিং অনুষ্ঠানে বক্তারা এই আশাবাদ প্রকাশ করেন।

আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন রাবাব ফাতিমা
আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন রাবাব ফাতিমা

আজ মঙ্গলবার (২৯ মে) স্থানীয় সময় সকালে পরিবেশবান্ধব পাট এবং জাপানে বাংলাদেশের পাটজাত পণ্যের সম্ভাবনা নিয়ে এক গোলটেবিল আলোচনা ও বি-টু-বি নেটওয়ার্কিং সেশনের আয়োজন করে টোকিওর বাংলাদেশ দূতাবাস। দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে আয়োজিত এই আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরী, বাংলাদেশ থেকে আগত প্রতিনিধিদলের সদস্য ও ব্যবসায়ীরাসহ উল্লেখযোগ্যসংখ্যক জাপানি ব্যবসায়ী এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন কিয়োনরি নাকাজিমা
আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন কিয়োনরি নাকাজিমা

আলোচনার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। অনুষ্ঠানে যোগদান করায় তিনি অতিথিদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন বাংলাদেশ বিভিন্ন দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি স্থিতিশীল ও বিশাল বাজার বিদ্যমান। এ ছাড়া জাপানি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশকে নিয়ে যে জরিপ করেছে তাতেও বাংলাদেশকে ভবিষ্যৎ বিনিয়োগের গন্তব্য হিসেবে উল্লেখ করেছে। দেশে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ বিদ্যমান উল্লেখ করে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় পাট শিল্পখাতে জাপানি বিনিয়োগকারীদের অধিক হারে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান তিনি।

রাষ্ট্রদূতসহ বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্যরা
রাষ্ট্রদূতসহ বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্যরা

সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ এখন অনেক পরিবর্তিত, অনেক উন্নত, নতুন এক বাংলাদেশ যা বিশ্বের দ্রুত অগ্রসরমাণ রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে অন্যতম। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের শ্রমিক শুধু সহজ লব্ধই নয়, কর্মঠ ও উন্নয়নশীলও। তিনি মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক নির্দেশনা ও উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের মৃতপ্রায় পাট শিল্পের হারানো ঐতিহ্য ফিরে এসেছে। তিনি জাপানে পাটের নানাবিধ ব্যবহারের সুযোগের কথা উল্লেখ করে পরিবেশবান্ধব পাট শিল্পে জাপানি বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান। সাবের চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে পাটের অতীত ছিল ঐতিহ্যবাহী। তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন, আগামীতে পাটের ভবিষ্যৎ হবে উজ্জ্বল সোনালি।

পাটজাত পণ্যের প্রদর্শনী
পাটজাত পণ্যের প্রদর্শনী

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান বিজয় ভট্টাচার্য। বাংলাদেশের পাট শিল্প নিয়ে বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের পক্ষে উপস্থাপনা করেন উপসচিব সাদিয়া শারমিন ও জাপান এক্সটারনাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (জেট্রো) তাকাশি সুজুকি। আইডিই জেট্রোর পিএইচডি গবেষক কেন্মেই সুবোতা পাট সংক্রান্ত তাঁর গবেষণালব্ধ ফলাফল ও প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। অন্যদিকে বাংলাদেশে বিনিয়োগকারী পাট কোম্পানি মারসান সাঙ্গিওর প্রেসিডেন্ট কিয়োনরি নাকাজিমা বাংলাদেশের পাট ও ব্যবসার অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেন। তিনি জানান, বাংলাদেশের শ্রমিকেরা অত্যন্ত কর্মঠ ও সৎ।
পরে উন্মুক্ত আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্ব এবং বি-টু-বি নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়। ছোট পরিসরে বিভিন্ন রকমের ও বৈচিত্র্যময় পাটজাত পণ্যের একটি প্রদর্শনীও করা হয়।
কাল বুধবার থেকে টোকিওর বিগ সাইটে শুরু হবে ইন্টেরিয়র লাইফ-স্টাইল মেলা। যেখানে বাংলাদেশ থেকে আগত পাট শিল্প উদ্যোক্তারা তাঁদের উন্নত ও আধুনিক দ্রব্যাদির প্রদর্শন করবেন। বিজ্ঞপ্তি