মিশিগানের ঈদ

মিশিগানে ঈদের নামাজ। ফাইল ছবি
মিশিগানে ঈদের নামাজ। ফাইল ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যপ্রবাসী বাঙালি মুসলমানদের ঈদের প্রস্তুতি এখন প্রায় সম্পন্ন। রাজ্যের বৃহত্তর ডেট্রয়েট এলাকায় প্রায় ৪০ হাজার বাঙালির বাস। বাংলাদেশিদের পরিচালনায় এখানে ১৩টির বেশি মসজিদ রয়েছে। ঈদের দিন এই মসজিদগুলোতে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। স্থান সংকুলান না হওয়ায় কোনো কোনো মসজিদে একাধিক জামাতও অনুষ্ঠিত হয়।

দেশে যেমন দেখা যায় বাবার হাত ধরে ছেলে ঈদের নামাজ পড়তে মসজিদে যাচ্ছে, ঠিক তেমনি এখানেও দেখা যায় গাড়ি থেকে নেমে বাবার হাত ধরে পায়জামা-পাঞ্জাবি পরা ছোট্ট ছেলেরা রাস্তা পার হয়ে মসজিদে ঢুকছে। ঈদের দিন রাস্তার ফুটপাত, পার্কিং লট, পার্ক, বাড়ির বারান্দায় একে অপরকে কোলাকুলি করতে দেখা যায়। বাতাসে ভেসে বেড়ায় আতরের গন্ধ। এ যেন একেবারে দেশীয় আমেজ।
ঈদের দিন প্রবাসীরা বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে যান, কোলাকুলি করেন, কোর্মা, ফিরনি, সেমাই, পিঠা খান, জামা কাপড় উপহার দেন। ঈদের আগের দিন চাঁদ দেখা নিয়ে সবাই উদ্‌গ্রীব থাকেন। চাঁদ দেখা মাত্রই ফোন, টেক্সট, ইমেইলের মাধ্যমে কয়েক মিনিটের মধ্যেই সবাই জেনে যান আগামীকাল ঈদ।
রোজার মাঝামাঝি থেকে সবাই পরিবারের সদস্যদের জন্য শাড়ি কাপড়চোপড় কিনেছেন। শেষ দিকে বাঙালি মালিকানাধীন শাড়ি কাপড়ের দোকানগুলোতে প্রতিদিনই ভিড় দেখা গেছে। মধ্য রাত পর্যন্ত বাঙালি মালিকানাধীন দোকানগুলো খোলা ছিল। দোকানগুলোতে শোভা পাচ্ছিল বাহারি রং ও নিত্য নতুন ডিজাইনের জামা কাপড়। কেউবা তারাবি নামাজ পড়ে বাড়ি ফেরার পথে, কেউবা কাজ শেষে বাড়ি ফেরার সময় কেনাকাটা করেছেন।

মিশিগানে ঈদের নামাজ। ফাইল ছবি
মিশিগানে ঈদের নামাজ। ফাইল ছবি

ঈদ উপলক্ষে সবাই ছুটি নিয়ে রাখেন। ঈদের দিন বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট, কোম্পানি বা দোকানে আগে থেকেই সময় ঠিক করতে হয় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে। অনেকেই দেশের আত্মীয়স্বজনদের জন্য মানি এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে অর্থ পাঠান। কেউবা জাকাতের টাকা পাঠান। জুন জুলাই মাসে এখানের স্কুলগুলোতে গ্রীষ্মের বন্ধ থাকায় অনেকেই আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে দেশে চলে গেছেন।
ঈদের রেশ কাটতে না কাটতেই শুরু হয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের পক্ষ থেকে ঈদ পুনর্মিলনী। প্রবাসের এই ব্যস্ত জীবনে ঈদ পুনর্মিলনী উপলক্ষে একে অপরের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ হওয়ার একটা সুযোগ হয়। মিশিগানের প্রবীণ কমিউনিটি নেতা আশফাকুর রহমান চৌধুরী জানালেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এখন প্রবাসীদের অর্থনৈতিক অবস্থাটা ভালো, আর অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো থাকলেতো সবকিছুই ভালো হয়। সাংস্কৃতিক কর্মী মোহাম্মদ কামাল জানালেন, তার ঈদের কেনাকাটা প্রায় শেষ। বললেন, এবার ঈদের দিন আবহাওয়া ভালো থাকবে।
সবার ভালো কাটুক ঈদের দিন। প্রতি দিন হোক ঈদের দিন।

পার্থ সারথি দেব: মিশিগান, যুক্তরাষ্ট্র।