কিগালিতে বাংলাদেশিদের ঈদ
গত কয়েক বছরের মতো এবারও বেশ আনন্দের সঙ্গেই কিগালিতে বসবাসকারী আমরা বাঙালি মুসলমানেরা ঈদুল ফিতর উদ্যাপন করেছি। বাংলাদেশের খুব বেশি মানুষ না থাকলেও কিগালিতে বসবাসকারী অন্য ধর্মাবলম্বী মানুষের অংশগ্রহণ এ আয়োজনকে বেশ আনন্দময় করে তুলতে সাহায্য করেছিল। যে কয়জন এই শহরে বা দেশে আছি ঈদ জামাত শেষে সবাই একত্র হয়ে যাই। পরে সেমাই-পিঠা খেয়ে অতঃপর বসে গল্পগুজব, ঈদ নিয়ে নিজেদের জীবনের বিভিন্ন স্মৃতিচারণা করে দিনটুকু বেশ ভালোভাবেই কাটানো হয়ে থাকে। এবারও এর ব্যতিক্রম কিছু হয়নি।
তবে এবারে বাড়তি যেটুকু সুবিধা পাওয়া, তা হলো শুক্রবারে ঈদুল ফিতর হওয়াতে এবং পরের দুই দিন সরকারি ছুটি থাকাতে বেশ ভালোভাবে উপভোগ করা সম্ভব হয়েছে। দেশে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলা গেছে প্রাণ খুলে এবং একেবারেই অফিশিয়াল কোনো ধরনের কাজের চাপ ব্যতিরেকেই।
ঈদ জামাতে একটি বিষয় মনে বেশ দাগ কেটেছে। যা সত্যিই অসাধারণ ছিল। ১০-১২ বছরের একটি ছেলে তার ৮ বছরের ছোট ভাইকে নিয়ে জামাতে অংশগ্রহণকারী ছোট শিশুদের মাঝে চকলেট বিতরণ করে এক অনন্যসাধারণ ভূমিকা পালন করল। ঈদ আনন্দ যে এরই মাঝে নিহিত আছে তাই যেন ছোট বাচ্চা দুটি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। নিঃসন্দেহে বলা যেতে পারে যে ঈদ জামায়াতে অংশগ্রহণকারী সকলেই বিষয়টিকে দারুণভাবে উপভোগ করেছেন।
ঈদ জামাত শেষে বাঙালি সকলের গন্তব্য ছিল আশার রুয়ান্ডার কেন্দ্রীয় কার্যালয়। কারণ সেখানে দুই বাঙালি বধূ মিলে নানা সব খাবারের আয়োজন করে রেখেছিলেন আগে থেকেই। আর তা মিস করতে কেউই রাজি ছিলেন না একেবারেই। বরাবরই তাদের হাতের খাবার খেলেও ওই দিনের খাবার ছিল যেন অমৃত। যার কৃতিত্ব তাদের না দিলে সত্যিই অবিচার করা হবে। তাদের এমন আন্তরিক পরিবেশনার জন্য ধন্যবাদ জানাই আফরোজা সিমিন ও শিরিন আক্তারকে। এমনভাবে খাবারের আয়োজন ভবিষ্যতেও চলমান রাখবেন এমনই আমাদের প্রত্যাশা।
সবশেষে আশার রুয়ান্ডার কর্তৃপক্ষকে তাদের অফিসে এমন আয়োজনের সুযোগ দেওয়ার জন্য সকলের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানিয়ে ঈদের দিনের আয়োজনের উদ্যাপনের সমাপ্তি টানা হয়।
জামিলুর রহমান চৌধুরী: কিগালি, রুয়ান্ডা।