আবুধাবিতে বঙ্গীয় সমাজের রবীন্দ্র-নজরুল সন্ধ্যা

নৃত্য পরিবেশনা
নৃত্য পরিবেশনা

কোথা থেকে করি শুরু! কোনটা রেখে কোনটা বলি। কাকে বলি সেরা। না, এবার আর নেই পিছুটান। পক্ষপাত আছে আমার। কাজেই বলতেই হয়, ছোটরাই সেরা। ওরাই ভালো করেছে। নাটক, সংগীত, নৃত্য সবকিছুতেই ওরা অনন্য।

বীর পুরুষ কবিতা পড়ল তানভি সেনগুপ্ত ও জাহ্নবী ব্যানার্জি। ছোটরা গান গাইল সমবেত কণ্ঠে। ওরা সুর তুলল—কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা। সত্যিই তাই, কে তাদের বাধা দেয়। গানের সুরের ডানা মেলে দেয় তারা। তেপান্তরের পাথার পেরিয়ে যেতে পথ ভুল করে। অবশ্য এ সুযোগে পারুল বনের চম্পাকে জানা হয়ে যায়। খর বায়ু বয় বেগের মধ্য দিয়ে তারা শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ রাখতে পেরেছে। শুভাঙ্গি সরকার কত সুন্দর করেই না কাঠবিড়ালি কবিতাটি আবৃত্তি করল। আহা, অভিনন্দন জানাল দর্শক। আর নাটক, নৃত্য এসবের কথা না হয় পরেই বললাম।
দিনটি ১৫ জুন শনিবার। সময়টি সন্ধ্যা।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবির বঙ্গীয় সমাজ সেদিন সে সময়ে রবীন্দ্র-নজরুল সন্ধ্যার আয়োজন করে। ভারতীয় দূতাবাসের সাংস্কৃতিক এ অনুষ্ঠানকে দর্শক-শ্রোতারা আলাদা মাত্রার বলে উল্লেখ করেন। আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন বাংলাদেশ স্কুলের অধ্যক্ষ মীর আনিসুল হাসান। সন্ধ্যায় প্রদীপ সেন শর্মা ও জয়দীপ চক্রবর্তী অতিথিকে নিয়ে প্রদীপ জ্বালালেন। এটাই ছিল অনুষ্ঠানের উদ্বোধন।
পরবর্তীতে এলেন ইন্ডিয়ান স্কুলের আল ওয়াদবা শাখার অধ্যক্ষ শিমন্তি ভৌমিক। মৌলিমা রায় সন্তানকে নিয়ে অতিথির হাতে তুলে দিলেন ফুলের তোড়া। গোটা অনুষ্ঠান ভাস্বর হয়ে উঠল।

নাটক
নাটক

মীর আনিসুল হাসান সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখলেন। তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা সাহিত্যের দুই কিংবদন্তি। আসলেই তাই। দুজনই বাংলাতে সাহিত্য, গান, কবিতা, গল্প ও নাটক রচনা করেছেন। তবে দুজনের কাজের ধরন সম্পূর্ণ আলাদা।
দুই কৃতির জীবন ও কর্ম থেকে আমরা এই সত্যটি দারুণভাবে প্রত্যক্ষ করি। কাজী নজরুল ব্রিটিশদের হয়ে যুদ্ধ করেছেন। আবার ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী কবিতা লিখে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়েছেন। তেমনি রবীন্দ্রনাথ ব্রিটিশদের হাত থেকে নোবেল পুরস্কার নিলেও জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের জন্য নাইটহুড উপাধি ফিরিয়ে দিয়েছেন।

সংগীত পরিবেশনা
সংগীত পরিবেশনা

কথা বলছিলাম শিমন্তি ভৌমিকের সঙ্গে। তিনি সন্ধ্যার এ আয়োজন সম্পর্কে বলেন, অপূর্ব। বিদেশের মাটিতে এমন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আমরা ঐতিহ্যকে ধরে রাখছি। এ উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে। আলোচনায় বেরিয়ে এল সাহিত্যিক প্রবোধ কুমার সান্যাল তাঁর মাতামহ। কথারা এগিয়ে যায়। একই সঙ্গে অনুষ্ঠানও উপভোগ করি।
শিল্পীরা সমস্বরে গেয়ে ওঠেন উদ্বোধনী গান। সবার আকর্ষণ কেড়ে নেয় মঞ্চ। আকাশ বিদারী কণ্ঠ—হে নূতন দেখা দিক আর-বার জন্মের প্রথম শুভক্ষণ। রিক্ততার বক্ষ ভেদ করে নিজেকে উন্মোচন করার আহ্বান এ গানে। এরপর সংগীত পর্ব। টানা ৫০ মিনিট মোহমুগ্ধ ছিলেন শ্রোতারা। এ অংশে মানব জীবনের চারটি পর্যায়—শৈশব, কৈশোর, যৌবন ও বার্ধক্য তুলে আনা হয়।
আমরা নূতন যৌবনেরই দূত।...যেখানে ডাক পড়ে জীবন-মরণ-ঝড়ে আমরা প্রস্তুত। কিংবা, বিধির বাঁধন কাটবে...তুমি কী এমন শক্তিমান! বিস্ময় দিয়ে শুরু কিন্তু আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান সে বাণী। জমে ওঠে আসর। প্রীতম সেন, মলয় মণ্ডল ও গৌর ব্যানার্জি কাঁপিয়ে দেন। শেষজন এই আয়োজনের একজন সমন্বয়ক। ৬৮ জন শিল্পীকে একসূত্রে গেঁথে সুন্দর একটি পরিণতির দিকে নিয়ে যাওয়া। এ প্রয়াস কম কথা নয় অবশ্যই। বলেন, টানাপোড়েন ছিল। মায়ের গর্ভে সন্তান লালিত হয়, এ বড় জ্বালা। আছে প্রসব বেদনা। তবে শেষ পর্যন্ত হাসি। অবলীলায় বলেন কথাগুলো।

সংগীত পরিবেশনা
সংগীত পরিবেশনা

রবীন্দ্র সংগীতের পর নজরুল সংগীত। গেয়েছেন মহুয়া মাইতি আর চৈতালি চট্টোপাধ্যায়। তাঁরা গানে দ্যোতনা তুললেন। এবার এল, আমি তোমার সঙ্গে বেঁধেছি আমার প্রাণ...। এগিয়ে চলে গান—ভালোবেসে সখী, নিভৃত যতনে আমার নামটি লিখো...। এ গানে ছিলেন অন্যদের মধ্যে দেবারতি মুখার্জি, দেবারতি কর ও কৌশিক রয়। দারুণ দারুণ সে আকুতি! এইভাবে রবীন্দ্র সংগীত আর নজরুল সংগীত দিয়ে সাজানো হয় গানের মালঞ্চ। কী নির্বাচন! আজও কাঁদে কাননে কোয়েলি কোয়েলি কিংবা আজি মধুর বাসরি বাজে কার না মনে কাড়ে! তৃষা চৌধুরী, বাসুপর্ণা মজুমদার, অদিতি চক্রবর্তী মন কেড়ে নেন শ্রোতার। ছোটরা মাতিয়ে রাখে উপস্থিতিকে। আরজুমান কর, আরাত্রিকা মুখার্জি, অভিপ্ৰীতি মাইতি, অহনা মজুমদার ও দেবাদৃত মণ্ডল জ্বলে ওঠে মঞ্চে।
বার্ধক্য ভাগে তিনটা পরিচ্ছেদ। জীবন যখন শুকায়ে যায়, গানের এ কথা থেকেই উসকোখুসকো ঢিলে জীবনের চিত্র ভেসে আসে। অন্যরা ছিলেন, ছিলেন চৈতালি রায়। অতঃপর এ অংশের সমাপ্তি ঘটে ‘মরণরে, তুহু মম শ্যাম সমান’ দিয়ে। কাকলি সেন শর্মা কণ্ঠ দেন এ গানে। সামনে এলেন দেবারতি মুখার্জি। এ পর্বের দায়িত্বে ছিলেন এরা দুজন। গানে কিংবা সাংগঠনিক কর্মে দুইয়ের পারঙ্গমতায় সংগীতের এ পর্বটি শ্রোতাদের ভূয়সী প্রশংসা কুড়ায়। এ পর্বে সম্পদ রয় ও প্রজ্ঞা পারমিতার ভাষ্য পাঠ অনুষ্ঠানে আলাদা ব্যঞ্জনা আনে।
প্রজ্ঞা পারমিতার সঙ্গে কথা বলি। ভাষ্য পাঠ একটি শিল্পিত অনুশীলন। এর মধ্য দিয়ে তিনি উপভোগ করেন জীবনকে। বলেন, এ এক সুখকর অনুভূতি। সম্পদ রয় জানান, উদ্বোধনী সংগীত ছাড়াও ১৩টি গানের অংশবিশেষ জুড়ে দেওয়া হয়েছে এ পর্বে। ছিল টুকরো কবিতা। সুখ, দুঃখ, হাসি, কান্নার মালা গাঁথা হয়েছে এখানে। সঠিক কথাটাই বলেছেন, মনোগ্রাহী এ উপস্থাপনা!

প্রদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন
প্রদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন

রবীন্দ্র-নজরুল সন্ধ্যার সর্বশেষ আকর্ষণ ছিল ‘ছন্দে আনন্দে’। নৃত্যের এই পর্বটি পরিচালনা করেন অবন্তি সেনগুপ্ত। তিনি বলেন, জীবন আনন্দময়। আনন্দময় এই পৃথিবী। নৃত্যের মাধ্যমে সেই অনুভূতিকে ঢেলে দেওয়া। তারও চমৎকার প্রকাশ!
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচনায় সাজানো হয় এ পর্ব। আনন্দধারা বহিছে ভুবনে...আসলেই পৃথিবী আনন্দের মনে হয়। গীত সুধারসে রাজ্ সমারোহে কিংবা রুদ্র আলোকে আসার আকুতি ব্যক্ত হয়। আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে...শত সুন্দরের মতো পরিবেশ দ্যুতি ছড়ায়। ভারতীয় ও ধ্রুপদি এ নৃত্য বিনোদন দেয় দর্শকদের। পরিচালকও একক নৃত্য করেন। বাহ্ সে কী সুষমা! অর্পিতা রাহা, মধুরা কর, পৌলমী ব্যানার্জি, সোনালি হালদার, সৌমি ঘোষ, সুদেষ্ণা সেনগুপ্ত, তুতুন নন্দী, সোনালী গুহ, রাখী রায় ও ঝুমা বিশ্বাস নৃত্য পরিবেশন করেন। তরুণীরা জ্বলে ওঠেন মঞ্চে। মঞ্চ স্বর্গে রূপ নেয়। পরিচালক কুড়ান অশেষ প্রশংসা।

ফুলের তোড়া দেওয়া হয় অতিথিদের হাতে
ফুলের তোড়া দেওয়া হয় অতিথিদের হাতে

মজার এক নাটক। রাজা সৌরেশ হালদার। তাঁর এক ধামা আলুর দম চুরি হয়ে যায়। চোরকে খুঁজে বের করতে মন্ত্রী পৃথ্বীশ বিশ্বাসসহ সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়েন। আয়ান রাহা ঢেরা পিটিয়ে চতুর্দিকে জানিয়ে দেন এই খবর। কেউ স্বীকার করে না। অতঃপর রাজা ঘোষণা করেন, চোরকে অর্ধেক রাজত্ব লিখে দেবেন। এবার দৃশ্যপট পাল্টে যায়। কবি সমাদৃত চক্রবর্তী বলেন, আমি চোর। পণ্ডিত কৃশ মুখার্জি, পাদানিসা মায়ুরিক রায়, খোঁচা খোঁচা অর্চিশা দে এসে ধরনা দেন রাজ প্রাসাদে। কারণ আর কিছুই না, নিজেকে চোর প্রমাণের জন্য। প্রহরী শ্রীজাও আসেন এই কাতারে। শুধু কী তাই? মন্ত্রী পর্যন্ত এই লোভ সংবরণ করতে পারেন না। একই লক্ষ্যে আসেন জুনিয়র ক্রিস্টোফার কলম্বাস যিনি একজন ব্রিটিশ। তবে বাদ ছিলেন কেবল লম্বু ধীমান ভট্টাচার্য। এতে অবস্থা বেগতিক হয়ে পড়ে।
রাজা ঘোষণা করতে বাধ্য হন, চোরদের ফাঁসিতে ঝোলানো হবে। এরই মধ্যে নতুন এক ঘটনা ঘটে যায়। রাজপুত্র আস্থা সাংহাই পেটের ব্যথায় কাতর হয়ে পড়েন। রাজা পড়েন বিপদে। সবাই বোঝেন, রাজপুত্রই চোর। তাহলে তাঁরই ফাঁসি হওয়া উচিত। এই দাবি সামনে রেখেই নাটকের সমাপ্তি ঘটে।
নাটকটি রাধারমণ ঘোষ লিখেছেন। কথা হচ্ছিল নাটকটির পরিচালক ছন্দা ভাদুড়ি সাংহাইয়ের সঙ্গে। তিনিই বলছিলেন, রাজার ছেলের আবার সাজা কীসের! রাজপুত্র দোষী হয় না কখনো। তারা অন্যের ঘাড় ভেঙে খায়। দোষ সাধারণের, তারাই মরে।
ছন্দা নাটকে অভিনয় করেন। এ নিয়ে তাঁর আছে সুনাম। এবার পরিচালনা করলেন। বললেন, ছোটদের নিয়ে কোনো কিছু করার মধ্যে আছে অপার তৃপ্তি। নাট্য পরিচালনায় সহযোগিতা করেন ঝুমা বিশ্বাস। আলাপকালে ছন্দা এই নামটি আনলেন গভীর ভালোবাসায়।
আয়োজনে নৃত্যে ছোটরা ভালো করেছে। কুন্দন মুখার্জির পরিচালনায় তারা মঞ্চে আলো ছড়ায়। প্রকৃতির বর্ষা রূপ উপস্থাপনা করে দর্শককে বিমুগ্ধ করেছে তাঁর ছাত্রীরা। তিনি একপর্যায়ে নিজে এলেন মঞ্চে। ওডিসি কত্থকের মিশ্রণ ছিল সে নৃত্যে। সমকালীন ভাবনা থেকে তাঁর এ নৃত্য। এ সময় ২০ জন ছাত্রী জয় করে নেয় মঞ্চ। তানিয়া, অমৃতা, অর্পিতা, ঈশিতা, রিপতা, শিল্পী ঝড় তোলে নৃত্যে।
ব্যস্ততার দৌড়। পৃথ্বীনাথ মুখার্জি নাটক শেষে ছুটতে ছুটতে বাইরে আসছেন। জিজ্ঞেস করলেন কেমন লাগল! আমি বরং তাঁর দিকে তাকিয়ে। কী করে প্রকাশ করি আমারই বিমুগ্ধতা! সময় নিলেন না। অসমান্তরাল, বললেন তিনি। দিব্যেন্দু দত্ত চৌধুরী চা খাচ্ছেন। তারও বিমুগ্ধতার প্রকাশ।
শুভংকর ঘোষ সামনে বসা। তিনি ইন্ডিয়া সোশ্যাল অ্যান্ড কালচারাল সেন্টারের ইস্টার্ন জোনের সাধারণ সম্পাদক। নৃত্য তখন চলমান, কথা হয় তাঁর সঙ্গে। সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হতে চলেছে অনুষ্ঠান, এ এক বিশাল অর্জন, বললেন তিনি। ডোনা মিত্র দুবাই থেকে এসেছেন। তিনি ফাইজার কোম্পানিতে চাকরি করেন। অর্থনীতি তাঁর বিষয়। অপূর্ব, অনুষ্ঠান সম্পর্কে তরুণীর মন্তব্য। আয়োজনের এক সংগঠক শিল্পী মুখার্জি বললেন, অনন্য একটি সময় পার করছি। সোম দত্ত বাগ এমন অনুষ্ঠানের সঙ্গে সব সময় আছেন। আজকের অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইংরেজিতে কৌশিক সেন ও বাংলায় সোহিনী বাগ। দ্বিতীয়জন তাঁরই কন্যা। দেখি, মুখে তাঁর হাসি।

সংগঠকদের কয়েকজন
সংগঠকদের কয়েকজন

বঙ্গীয় সমাজের নির্বাহী সংসদের সদস্য জয়দীপ চক্রবর্তীর সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, অনেক মেধার সংমিশ্রণ এই অনুষ্ঠান। নেপথ্য অবদানে দেবাশীষ মান্না, নীতা ঘোষ, সংঘ মিত্রা মিশ্র ও অর্ণব দত্ত নামগুলো আনলেন পরম শ্রদ্ধায়। নাট্য পরিচালক কৃতজ্ঞতার সঙ্গে জানালেন, মিউজিকে দুই শিল্পীর অবদানের কথা। সানি মজুমদার ও সঞ্জীব মহাজন সে নাম।
ভাবছিলাম, শিল্প সংস্কৃতি সাহিত্য বিজ্ঞান এসবের কোনো জাত-পাত ধর্ম-দেশ নেই। যাঁরা এসব সৃষ্টি করেন তাঁদেরও কোনো জাত-ধর্ম-দেশের সীমাবদ্ধতায় আটকে রাখা যায় না, এঁরা সারা বিশ্বের সব মানুষের কাছে সমান। এ জন্য রবীন্দ্রনাথ নজরুল এঁরা শুধু ভারত কিংবা বাংলাদেশের নয়, এঁরা সারা বিশ্বের মানুষের কাছে বরেণ্য। তাঁদের কাজ ও জীবন দর্শন আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে জানাতে হবে। বঙ্গীয় সমাজ সেই কাজটিই নিখুঁতভাবে করে যাচ্ছে।
রূপালী মান্না গানের প্রতিপাদ্য, নৃত্যের উপস্থাপনাকে বর্ণাঢ্য বলে উল্লেখ করেন। চৈতালি চট্টোপাধ্যায়, দেবারতি কর গান করেছেন। তাঁদের আজ মহাআনন্দ। বললেন, চমৎকার। পাশ দিয়ে চলেছেন কুমার চট্টোপাধ্যায়। বন্ধুত্বের হাত মেলে ধরি। একই জায়গায় বসা ছিলেন সোনা ব্যানার্জি, অদিতি হাজরা, লাকি হালদার উল্কা, ধীরা মুখার্জি। দুই পর্বের মাঝের সময়ে তাঁরা আড্ডা দিচ্ছেন। শুভেচ্ছা বিনিময় হয়। তাঁরা ছবি তোলেন। সময়টি আনন্দঘন হয়ে ওঠে।
লেখার শুরুটা ছিল ছোটদের নিয়ে। শেষ করব ওদের দিয়েই। দুই বাংলায় আজ বৃষ্টিকাল। ওরা নাচলও বর্ষাকে ধরে।
বাদল বাউল বাজেরে এক তারা।...পাতায় পাতায় টুপুর টুপুর নুপুর মধুর বাজে। সপ্তপর্ণা ব্যানার্জি, ত্রিপর্ণা রায়, সানভি মাইতি নাচে। নাচে সৃজিতা বিশ্বাস, দীপাশ্রী পাল, সুনাম হাজরা, দীক্ষা মজুমদার, আন্দ্রিয়া ভট্টাচার্য ও অন্বেষা রায়।
হ্যাঁ, আমরা যখন চলে আসি, ওদের নূপুরের শব্দই বাজছিল কানে। জয়তু ছোটরা, জয়তু রবীন্দ্র নজরুল সন্ধ্যা।

নিমাই সরকার: আবুধাবি, সংযুক্ত আরব আমিরাত।