শিক্ষক যখন অভিভাবক

অলংকরণ: মাসুক হেলাল
অলংকরণ: মাসুক হেলাল

উচ্চমাধ্যমিকের রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেছে। পড়াশোনার বিশাল চাপ যাচ্ছে। নিয়মিত পড়াশোনার পাশাপাশি শুরু হয়েছে ব্যবহারিক পরীক্ষার আলাদা চাপ। এভাবেই চলে যাচ্ছে প্রত্যেকটা দিন। সামনেই টেস্ট পরীক্ষা, সেটা নিয়েই সবাই মহাব্যস্ত। আমি তখনো সাধারণ একজন ছাত্র হিসেবে প্রত্যেকদিন পড়তে যাই স্যারদের কাছে। স্যারেরাও তাদের যথাসাধ্য দিয়ে আমাদের সিলেবাস শেষ করিয়ে দিচ্ছেন টেস্ট পরীক্ষার আগেই। টেস্ট পরীক্ষা হয়ে গেল। তখন আর তেমন একটা কলেজ বা প্রাইভেটের চাপ নেই। পড়াশোনার পাশাপাশি মাকেও তাঁর কাজে মাঝেমধ্যে সাহায্য করি।

বাড়িতে পোষা একটা গাভি গরু ছিল। তার দুধ আমরা তিন ভাই পালাক্রমে বিভিন্ন বাড়িতে দিয়ে আসি। মাস গেলে তাঁরা একসঙ্গে টাকাটা দেন। এই সিস্টেমটাকে আমরা রোজানি বলতাম। এর বাইরে বাড়তি দুধটুকু বিভিন্ন চায়ের দোকানে গিয়ে বিক্রি করতে হতো। আর সেটা ছিল আমার জন্য খুবই কঠিন কাজ। আমি একেতো লাজুক উপরন্তু কথাও কম বলি, তাই বেশির ভাগ দিনই দুধ বিক্রি না করে ফেরত নিয়ে আসতাম। ওই সময়টায় আমি মানুষের এক অদ্ভুত গুণের সঙ্গে পরিচিত হয়েছিলাম। সেটা হচ্ছে মানুষ গায়ের রং বা পোশাক দিয়েই মানুষকে মূল্যায়ন করে। আমি যেহেতু সাধারণ পোশাকে তাঁদের কাছে দুধ বিক্রি যেতাম তাই তাঁরা বিভিন্ন ধরনের মজা করতেন। যেটা আমার মোটেও ভালো লাগত না। তবুও আমি অপেক্ষা করতাম যদি তাঁরা দুধটুকু শেষমেশ কেনেন সেই আশায়।
এমনই একদিন দুধ বিক্রি করতে শহরের দিকে যাচ্ছি। হঠাৎ এক ছেলে আমার সামনে এসে সাইকেলে হার্ডব্রেক কষে দাঁড়িয়ে গেল। এই তুমি ইয়াকুব না। এটাই ছিল তার প্রথম কথা। সঙ্গে চোখে ছিল বিস্ময়ও। কারণ আমি একহাতে তখনো দুধের টিনের জগ ধরে আছি। আমি ছেলেটাকে চিনি। জিলা স্কুলের একেবারে প্রথম সারির ছাত্র। আমি জিলা স্কুলে পড়তে পারিনি বলেই হয়তো তাদের প্রতি আমার বেশি আকর্ষণ কাজ করত। আমি তার প্রশ্নের উত্তরে হ্যাঁ বললাম। শুনে সে চিৎকার করে বলে উঠল, জানো তুমি টেস্টে প্লেস করেছ। আমি তখনো জানি না, টেস্টে প্লেস করা বলতে কী বোঝাতে চাইছে সে। আমার থতমত ভাব দেখে সে বলল তুমি আমাদের ব্যাচে নবম হয়েছ। কলেজের ক্যানটিনের নোটিশ বোর্ডে তোমার নাম আছে, গিয়ে দেখো।
আমি তখনো বুঝিনি, আমি আসলে কী অঘটন ঘটিয়ে ফেলেছি। পরদিন কলেজে যাওয়ার পর ব্যাচের যার সঙ্গেই দেখা হয়, সেই আমার নাম জিজ্ঞেস করে। কারণ নোটিশ বোর্ডে প্রথম যে দশ জনের নাম উঠছে, তাদের মধ্যে সবাই মোটামুটি ভালো ছাত্র হিসেবে আগে থেকেই পরিচিত ছিল, শুধু আমি ছাড়া। তাই আমি রাতারাতি সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছি। আমি আর আমিনুর নোটিশ বোর্ডের সামনে গিয়ে নামের তালিকা দেখে নিশ্চিত হলাম, না আসলেই আমার নাম ওখানে আছে। কিন্তু আমি কোনোভাবেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। কারণ কুষ্টিয়ার সব বাঘা বাঘা ছাত্রছাত্রীদের ভিড়ে আমি সত্যিই অতি সামান্য ছাত্র ছিলাম। তাই আমরা বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে গিয়ে আমার প্রাপ্ত নম্বরগুলো সংগ্রহ করতে শুরু করলাম। সবগুলো সংগ্রহ করে যোগ করে দেখি বোর্ডে উল্লেখ করা নম্বরের থেকে বিশ নম্বর কম। তখন বুঝলাম উত্তেজনায় আমিই হয়তো কোন বিষয়ের নম্বর তুলতে ভুল করেছি।
উচ্চ মাধ্যমিকের ফাইনাল পরীক্ষা শেষে ব্যবহারিক পরীক্ষা চলছে। রসায়নের ব্যবহারিক শেষ করে মৌখিক পরীক্ষা চলছে। ইতিমধ্যেই এক্সটারনাল স্যার, তিনি গোটা তিনেক প্রশ্ন করে ফেলেছেন। হঠাৎ কোথা থেকে যেন আতিয়ার স্যার হাজির হলেন। আমার দিকে চোখ পড়তেই এক্সটারনাল স্যারের দিকে চেয়ে আতিয়ার স্যার বলে উঠলেন, স্যার ধরেন। আমি তখনো বুঝিনি এর মানে কী? একটু পরেই বিষয়টা পরিষ্কার হলো। এক্সটারনাল স্যার এরপর অনবরত প্রশ্ন করে চললেন, কিন্তু কোথাও আটকাতে পারছিলেন না। সামান্য পরেই রসায়নের আমাদের আরও একজন প্রিয় স্যার নওরোজ স্যার এসে হাজির হলেন। তারপর দুজনে মিলে প্রশ্ন করে চললেন। একটু পরেই আবার আতিয়ার স্যার ফিরে এসে তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়ে তিনজনে তিন দিক থেকে প্রশ্ন করে চললেন। আমি কোনোমতে সামাল দিয়ে চলেছি।
এভাবে কতক্ষণ চলছিল সেটা আর ঠাহর করতে পারছিলাম না। শেষ প্রশ্নটাতে এসে আমি আর তৎক্ষণাৎ উত্তর দিতে পারলাম না। তখন তিনজনই বললেন আচ্ছা ঠিক আছে যাও। যেই চেয়ার ছেড়ে দাঁড়িয়েছি তখনই উত্তরটা মাথায় এল। কারণ আমি মনে মনে সেটা নিয়েই ভাবছিলাম। আর রসায়ন বিষয় যতটা না মুখস্থের তার চেয়ে বেশি বোঝার। অনেকটা অঙ্কের মতো। একটা বিক্রিয়া ঘটলে অন্যটাও ঘটবে। আমি দাঁড়িয়ে বললাম, স্যার উত্তরটা পারব। তখন এক্সটারনাল স্যার বললেন, আর পারা লাগবে না। আমি দুরুদুরু বুকে বাইরে এসে দেখি বন্ধুরা খুবই চিন্তিত, কারণ এর আগে সবাইকে মোটামুটি দশ পনেরো মিনিটে ছেড়ে দিলেও আমাকে নাকি আধঘণ্টা আটকে রেখেছিল।
একটু পরেই কলেজের দপ্তরি এসে আমাকে বলল, স্যার আপনাকে ডাকছেন। শুনে আমার আত্মারাম এবার খাঁচা ছাড়ার চেষ্টা শুরু করে দিল। অনেক ভয় নিয়ে স্যারদের সামনে গিয়ে এমনভাবে দাঁড়ালাম, যেন আমি আসলে ওখানে দাঁড়িয়ে নেই। আমার দিকে তাকিয়ে নওরোজ স্যার বললেন, তুমি ওই শিঙারাটা নাও। বলে পাশে রাখা প্লেটের দিকে নির্দেশ করলেন। কী ঘটছে আমি তখনো বুঝে উঠতে পারছি না ঠিকমতো। স্যারদের নাশতার জন্য শিঙাড়াগুলো আনা হয়েছে। সেটা আমি কেন নেব বুঝছি না। কাঁচুমাচু ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছি দেখে স্যার আবার বললেন, শিঙারাটা নাও আর ভবিষ্যতে রসায়নের কোনো বিষয়ে পড়াশোনা করো। আমি নিশ্চিত তুমি অনেক ভালো করবে। এবার হালে একটু পানি পেলাম। বুঝলাম আমার ভাইভা ভালো হয়েছে বলে স্যার খুশি হয়ে আমাকে শিঙারা দিচ্ছেন।
উচ্চমাধ্যমিক ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হয়ে গেছে। বন্ধুরা সবাই কোচিং করতে ঢাকায় চলে গেল। আমিনুরও ঢাকা চলে গেল কোচিং করতে। আমি হয়ে গেলাম একদম একা। মনে মনে ভাবছিলাম সবাই কোচিং করেও কোথাও চান্স পায় না। আর আমি কোচিংই করতে পারছি না। তখন আবার আমার সাহায্যে এগিয়ে এলেন হাবিব ভাই। তিনি তাঁর সানরাইজ কোচিংয়ের গাইডটা আমাকে দিয়ে দিলেন। এ ছাড়া আমাকে একটা টিউশনি ঠিক করে দিলেন, যে আমাদের এক বছরের জুনিয়র। ভাইয়া বললেন, শোন এই টিউশনি করলে দুইটা লাভ হবে। বেশ কিছু টাকা আসবে, কারণ ভর্তির সময় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরম তুলতে অনেক টাকা লাগবে। আর দ্বিতীয় যে উপকারটা হবে সেটা হলো তুমি তোমার ছাত্রকে পড়াতে গিয়ে বইগুলো আবার পড়বা, এতে করে তোমার কোচিং না করার ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে যাবে। বাস্তবেও তাই–ই হয়েছিল আমার। ভর্তি পরীক্ষার জন্য আলাদাভাবে পড়তে হয়নি। ছাত্রকে পড়িয়ে এসে চেষ্টা করতাম প্রত্যেকদিন একটা করে আগের বছরের প্রশ্ন সমাধান করতে।
পাশাপাশি বন্ধু শাহেদ ঢাকা থেকে প্রতি সপ্তাহে তাঁর কোচিংয়ের লেকচার শিটগুলো ফটোকপি করে আমাকে পাঠাতে থাকল। শাহেদ এখন পর্যন্ত আমার দেখা সবচেয়ে স্পষ্টবাদী মানুষ। একেবারে মুখের ওপর উচিত কথা বলে দেওয়ার অভ্যাস তাঁর বরাবরই, কিন্তু পাশাপাশি তাঁর মতো নিঃস্বার্থ পরোপকারী মানুষও দেখিনি। এভাবেই আমার কোচিং পর্বটা চলতে লাগল।
টিউশনি থেকে বেশ কিছু টাকা হাতে জমা হতে থাকল। আর তখন যেহেতু ফাইনাল পরীক্ষার আগের মতো পড়াশোনার খরচ ছিল না, তাই টিউশনির প্রায় পুরোটাই জমা হতে থাকল। তখন মা বললেন, টাকা বাসায় রাখার চেয়ে ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলে সেখানে রাখলে নিরাপদে থাকবে। আতিয়ার স্যারকে কথাটা জানাতেই তিনি বললেন, তুই সোনালি ব্যাংকের কুষ্টিয়া সদর শাখাতে একটা অ্যাকাউন্ট খুলে ফেল। আমি ব্যাংকে গিয়ে কথা বলে জানতে পারলাম অ্যাকাউন্ট খুলতে ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট আছে এমন একজনের সুপারিশ লাগবে। স্যারকে এসে বললাম ব্যাপারটা। বললেন, তুই ভাবছিস কেন? তুই ফরম নিয়ে আয় আমি সুপারিশের ঘরে দস্তখত করে দিচ্ছি। আমি ফরম পূরণ করে স্যারের সুপারিশ নিয়ে ব্যাংকে ফিরে গিয়ে একটা মজার অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হলাম। যিনি অ্যাকাউন্ট খোলেন তিনি আমাকে বললেন, আপনার ঠিকানা দেখছি বাড়াদি, এটা আমাদের জগতি ব্রাঞ্চের অধীনে। আপনাকে ওখানে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। আমি মনে অনেক কষ্ট নিয়ে স্যারের কাছে ফেরত এসে ঘটনাটা বলার পর তিনি বললেন, তুই কি জগতি ব্রাঞ্চে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবি। আমি বললাম, সুপারিশ কে করবে স্যার। স্যার কিছুক্ষণ ভেবে বললেন, তুই এক কাজ করতে পারিস। আমার কাছে মাস গেলে টাকাটা রেখে যেতে পারিস। পরে যখন লাগবে তখন নিলি। আমি খুবই খুশি হলাম এটা শুনে।
এরপর থেকে মাসে যখনই বেতন হাতে আসে স্যারের কাছে রেখে আসি। স্যার আমার জন্য আলাদা একটা খাতা বানিয়ে সেখানে কবে কত টাকা জমা রাখছি সেটা দিন তারিখসহ টাকার পরিমাণ উল্লেখ করে হিসাব তুলে রাখতে শুরু করলেন। ভর্তি পরীক্ষা শুরুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত জমানো এই টাকাগুলো ভর্তি পরীক্ষা থেকে শুরু করে বুয়েটে ভর্তি হওয়ার সব খরচে কাজে লেগেছিল। এভাবে না জমাতে পারলে টাকাগুলো বিভিন্ন কাজে খরচ হয়ে যেত। আতিয়ার স্যার একজন শিক্ষক থেকে তখন আমার অভিভাবকের ভূমিকা নিয়েছেন। আমার জীবনে এই সকল শিক্ষকদের অবদান আমার আব্বা মায়ের অবদানের প্রায় সমান।
বুয়েটে ভর্তি হওয়ার পর বুঝতে পারলাম ঢাকার জীবন আসলে কতটা কঠিন। একে তো নতুন পরিবেশে কাউকেই তেমন চিনি না, উপরন্তু আমার কথাতে তখনো কুষ্টিয়ার আঞ্চলিকতার টান। এরপর অনেকেই বিভিন্নভাবে সাহায্য সহযোগিতা করে আমার জীবনটাকে সহজ করে দিয়েছিলেন। সেই গল্প অন্য কোনো দিন। আজ শুধু আতিয়ার স্যারের কথা দিয়েই লেখাটা শেষ করব। স্যারের সঙ্গে মাঝেমধ্যে চিঠির মাধ্যমে যোগাযোগ হয়। স্যার আমার অবস্থা বুঝতে পেরে আমার জন্য একটা মাসিক বৃত্তির ব্যবস্থা করে দিলেন। আমাদের কলেজের বাংলা বিষয়ের শিরিন ম্যাডামের কোনো ছেলেমেয়ে ছিল না। স্যারের কাছে তিনি আমার কথা শুনে আমাকে মাসে মাসে একটা পরিমাণ টাকা পাঠাতে শুরু করলেন। শিরিন ম্যাডামের এই উপকার আমি জীবনের শেষদিন পর্যন্ত ভুলব না। জানি না শিরিন ম্যাডাম এখন কেমন আছেন। আশা করি খুব শিগগিরই তাঁর সঙ্গে কথা বা দেখা হবে।
আগের লেখা জীবনের বাইসাইকেল প্রকাশ হওয়ার পর ছোট ভাই অমিত আমাকে আতিয়ার স্যারের নম্বর জোগাড় করে দিল। আমি স্যারকে ফোন দিয়ে বললাম, স্যার আমি ইয়াকুব। আমি বুয়েটে ছিলাম। স্যার উত্তরে বললেন, ও, তুই কেমন আছিস? আমি জিজ্ঞেস করলাম, স্যার আপনি আমাকে চিনতে পেরেছেন? স্যার বললেন, কেন চিনব না? আমি ভরসা পাচ্ছিলাম না, কারণ প্রতি ব্যাচেই আমার মতো দু–একজন ইয়াকুব থাকে আর মাঝে কেটে গেছে দীর্ঘ বিশটা বছর সময়। তাই আমি অপেক্ষা করছিলাম স্যারের সম্পূরক উত্তরের জন্য। স্যার এরপর বললেন, তোর ছোট দুই ভাইয়ের খবর কি রে? ওরা এখন কোথায়? আর মেজোটা যে মাঝে লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে আবার শুরু করেছিল। স্যারের কথাগুলো সাতসমুদ্র তেরো নদীর ওপার থেকে বাতাসে ভেসে সিডনিতে আমার কাছে আসছিল। কিন্তু আসার সময় প্রশান্ত মহাসাগরের বুক থেকে কিছুটা জলীয় বাষ্প শুষে নিয়ে এসেছিল। সেই জলীয় বাষ্প আমার চোখে এসে জল হয়ে ঝরছিল। এরপর স্যারের সঙ্গে আরও অনেক কথা হলো। হলো অনেক স্মৃতিচারণ। দুজনই কিছুক্ষণের জন্য হারিয়ে গেলাম আমাদের সোনালি অতীতে। স্যারের সঙ্গে আবারও কথা বলার আশাবাদ ব্যক্ত করে কথা শেষ করলাম।
স্যারের সঙ্গে যতক্ষণ কথা হলো পাশে থেকে শুনলে যে কেউ ভাববেন, আমি আমার অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলছিলাম। আসলে আমাদের সেই সময়ে স্যারের সহজেই ছাত্রদের শিক্ষক থেকে অভিভাবক হয়ে উঠতেন। আমার সারা জীবনের যত অর্জন তার জন্য আমি সব সময়ই মনে মনে এই মানুষগুলোর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। আর এটা ভেবে নিজের জীবনকে সার্থক ভাবি, এই মানুষগুলোর অকৃত্রিম ভালোবাসা আমি পেয়েছি। তাই আমি পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকি না কেন তাঁদের জন্য মনে মনে সব সময় ওপরওয়ালার কাছে দোয়া করি, যেন তাঁরা ভালো থাকেন ও সুস্থ থাকেন। পৃথিবীর প্রত্যেক শিক্ষক হয়ে উঠুন তার ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবক, তাহলে আর কোনো ছাত্রছাত্রী জীবন চলার পথে পথ হারাবে না।

মো. ইয়াকুব আলী: সিডনি অস্ট্রেলিয়া। ইমেইল: <[email protected]>