রাগ রঙের ব্যতিক্রমী সংগীতসন্ধ্যা

অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন দেবর্ষি ভট্টাচার্য
অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন দেবর্ষি ভট্টাচার্য

অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে বেশ খানিকটা সময় আগেই। ধন্যবাদ দেওয়ার পালাও শেষ। মঞ্চ থেকে শিল্পী ও যন্ত্রীরা নেমে এসেছেন। শুধু শ্রোতারাই কেমন যেন নড়াচড়া করছেন না। আসন থেকে উঠে হলের মধ্যেই দাঁড়িয়ে আছেন। যেন কিছুক্ষণের মধ্যেই শিল্পী আবার মঞ্চে উঠে সুর ধরবেন।-এমনি এক পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছিল গত শনিবার (২৩ জুন) কানাডার টরন্টোর দুর্গাবাড়ীতে—রাগ রঙের ‘নানা রঙের গানের’ আসর শেষ হয়ে যাওয়ার পরও। টানা কয়েক ঘণ্টা সুরের মূর্ছনায় ডুবে থেকেও যেন কারওরই পিপাসা মিটছিল না।

খ্যাতিমান সংগীতশিল্পী, শুদ্ধ গানের জন্যই যিনি মূলত সমধিক জনপ্রিয়, শিল্পী রনি প্রেন্টিস রয়ের সংগীত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রাগ রঙ-এর গ্রীষ্মকালীন পরিবেশনা উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছিল ব্যতিক্রমী এই সংগীতসন্ধ্যার।

অনুষ্ঠানের শিল্পীরা
অনুষ্ঠানের শিল্পীরা

প্রতিষ্ঠানের দুই শিল্পীকে নিবেদন করার পাশাপাশি একজন অতিথি শিল্পীর সমন্বয়ে সাজানো হয়েছিল এই নানা রঙের গানের আসর। শহরের খ্যাতিমান উপস্থাপক মেরি রাশেদীনের উপস্থাপনায় শুরুতেই সংগীত পরিবেশন করেন রাগ রঙের শিক্ষার্থী রিদিতা সাহা ও অভিনন্দিতা দাস। গুণী ওস্তাদের হাতে নবীনের প্রতিভার যে কী বিস্ময়কর স্ফুরণ ঘটতে পারে তারই প্রমাণ দিলেন অভিনন্দিতা আর রিদিতা। ওস্তাদ রনি রয় নিজে হারমোনিয়ামে সহায়তা করেন তাঁর মেধাবী দুই শিক্ষার্থীর পরিবেশনায়।
এর পরে শুরু হয় অতিথি শিল্পী, কলকাতা থেকে আমন্ত্রিত হয়ে আসা দেবর্ষি ভট্টাচার্যের সংগীত পরিবেশনা। তাঁর সঙ্গে তবলায় বোল তোলেন আরেক গুণী শিল্পী চিরঞ্জীব মুখার্জি। অনুষ্ঠানের নামের সঙ্গে মিল রেখে আক্ষরিক অর্থেই নানা রঙের গান গেয়েছেন শিল্পী দেবর্ষি। কিংবা বলা যায়, গানের, সুরের যে নানা রং আছে, তাই যেন উল্টে পাল্টে শ্রোতাদের সামনে তুলে ধরছিলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন চয়নিকা দত্ত
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন চয়নিকা দত্ত

নিজের বাছাই করা গানের পাশাপাশি শ্রোতাদের অনুরোধে নানা রঙের গান গেয়ে গেছেন দেবর্ষি। শ্রোতারাও পিনপতন নিস্তব্ধতায় নিজেদের আকণ্ঠ ডুবিয়ে রেখেছেন সেই গানের মূর্ছনায়। মাঝখানে কিছু কথা বলার জন্য মঞ্চে ডাকা হয়েছিল শিল্পী রনি প্রেন্টিস রয়, ব্যারিস্টার চয়নিকা দত্ত আর মন্দিরের পক্ষে সুশীতল চৌধুরীকে। শ্রোতাদের ধন্যবাদ জানানোর মধ্যেই নিজেদের বক্তব্যকে সীমিত করে তারা গানের প্রবাহকেই এগিয়ে নিতে সহায়তা করেছেন যেন।
ছিমছাম অনাড়ম্বর আয়োজনের নানা রঙের গানের এই আসরটিকে শিল্পীরাই তাদের পরিবেশনার দক্ষতা দিয়ে আড়ম্বরপূর্ণ করে তুলেছিলেন।

সোহেল সোহরাব: টরন্টো, কানাডা।