সাস্কাতুনে বাংলা উৎসব
কানাডার সাস্কাতুনে অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলা উৎসব (২০১৮)। এবারের বাংলা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘আলোকের এই ঝর্ণাধারায় ধুইয়ে দাও/ আপনাকে এই লুকিয়ে-রাখা ধুলার ঢাকা ধুইয়ে দাও।/...বিশ্বহৃদয়-হতে-ধাওয়া প্রাণে-পাগল গানের হাওয়া,/ সেই হাওয়াতে হৃদয় আমার নুইয়ে দাও।’ স্লোগানকে ধারণ করে।
এ উৎসবকে ঘিরে গত শনিবার (৭ জুলাই) সাস্কাতুনের সেন্ট পল চার্চ সন্ধ্যায় প্রবাসী বাঙালিদের মিলনমেলায় পরিণত হয়। আমাদের সময় জ্ঞান নিয়ে যারা প্রশ্ন তোলেন, সেই সব নিন্দুকের মুখে তালা দিয়ে যথাসময়ে ঠিক ৭টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রথম পর্বে আলোকচিত্র প্রদর্শনী উপস্থিত দর্শকদের আগ্রহের কেন্দ্র হয়ে দাঁড়ায়। ব্যতিক্রমী এ আয়োজন বিভিন্ন বয়সের দর্শকের চিন্তার খোরাক জুগিয়েছে।
এরপর শুরু হয় এবারের উৎসবের প্রধান ও মূল আকর্ষণ গীতি-আলেখ্য—‘কবি কহে, লহ প্রণাম’। প্রবাসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ওপর এই ধরনের গবেষণাধর্মী উপস্থাপনা খুব কমই দেখা যায়। অনির্বাণ সিংহের নির্দেশনায় গীতি-আলেখ্যটি মন্ত্রমুগ্ধের মতো পিনপতন নীরবতায় উপস্থিত দর্শকেরা উপভোগ করেন। সাস্কাতুনপ্রবাসীরা অনেক দিন মনে রাখার মতো একটি অনুষ্ঠান পেল।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে বিভিন্ন ধরনের বাদ্যযন্ত্র, গান, নৃত্য আর আবৃত্তি পরিবেশিত হয়। ইন্ডিয়ান স্কুল অব ড্যান্স অ্যান্ড মিউজিকের ছাত্রীরা নৃত্য পরিবেশনা করে। অত্যন্ত সুন্দর ও পরিকল্পিত অনুষ্ঠানসূচি উপস্থিত সকলকে মুগ্ধ করেছে। সাস্কাতুনের এই গরমে বাঙালিদের মিলনমেলায় শিঙারা, পেঁয়াজি, জিলাপি আর ঝাল মুড়ির মতো মুখরোচক খাবারের পাশাপাশি ছিল ৫০/৫০ লটারি। অনুষ্ঠান শেষে তৃপ্তির ঢেকুর তুলে সবাই ঘরে ফিরেছেন।
সাস্কাতুন বাংলা উৎসব হাঁটি হাঁটি পা পা করে আট বছরে পা দিল। শংকর দাসের অনুপ্রেরণায় বাংলা ভাষা আর বাংলা সংস্কৃতিকে বিদেশের মাটিতে বিকশিত করার যে যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০১০ সালে, আজ তা দৃশ্যমান। প্রচারবিমুখ এই মানুষটি আজও নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে চলেছেন। শংকর দাস উপস্থিত সকলকে ও স্বেচ্ছাসেবকদের বাংলা উৎসবের পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানেন।
অমিত উকিল: সাস্কাতুন, কানাডা।