প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জাপান

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা। ছবি: দ্য আটলান্টিক
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা। ছবি: দ্য আটলান্টিক

জাপানে এবার মৌসুমি ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যা ও ভূমিধসে এ পর্যন্ত ২০০ জন মারা গেছেন। গত ৩০ বছরের মধ্যে এটা সর্বোচ্চ মৃত্যু সংখ্যা। জাপান সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে।

জাপান দেশটি এমনিতেই পাহাড়ে পাহাড়ে ভরা। সমুদ্রের মাঝে বসে থাকা এ দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে মানুষকে বাঁচতে হয়। কখনো বন্যা, কখনো ভূমিধস এবং কখনো ভূমিকম্পের কারণে এ দেশের মানুষ সীমাহীন দুঃখ-কষ্ট সহ্য করেন।
এর মধ্যে ২০১৬ সালের ভূমিকম্প দেখার অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে। কুমামতোতে গত এক শ বছরের মধ্যে এটা ছিল সবচেয়ে ভয়ংকর ভূমিকম্প। নৌকার মতো ভাসতে থাকা মাটির ওপর দাঁড়িয়ে থাকাও কষ্টকর ছিল। আমরা কান্নাকাটি করে দেশে ফিরে গেলেও জাপানিজদের এ নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া ছিল না। তারা এটাকে স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছেন।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা। ছবি: দ্য আটলান্টিক
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা। ছবি: দ্য আটলান্টিক

প্রাকৃতিকভাবে জাপান একটি দুর্যোগপ্রবণ দেশ। কিন্তু এ দুর্যোগ মোকাবিলা করার শক্তিই জাপানকে পাল্টে দিয়েছে। পাহাড় পর্বত কেটে তাদের রাস্তাঘাট বানানো দেখলেই বোঝা যায় তারা কতটা কষ্ট করতে জানেন। প্রাকৃতিক কষ্ট থেকে বের হওয়ার কৌশল যারা জানেন তাদের জন্য এগিয়ে যাওয়ার রাস্তা সব সময় সহজ হয়। তাইতো জাপান আজ সবচেয়ে উন্নত দেশগুলোর মধ্যে একটি।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা। ছবি: দ্য আটলান্টিক
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা। ছবি: দ্য আটলান্টিক

মজার ব্যাপার হলো এত দুঃখ কষ্টের মধ্যেও সরকারের বিরুদ্ধে জাপানিদের কোনো অভিযোগ নেই। সরকার ও জনগণের মধ্যে এই আস্থার সম্পর্ক একটি দেশের উন্নয়নের জন্য জরুরি। যত বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগই আসুক জনগণ নিজেরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন কাটিয়ে ওঠবার জন্য। সরকারি সাহায্যের আশায় বসে না থেকে স্থানীয়ভাবে সমস্যা সমাধানে তারা চেষ্টা করেন। ২০১১ সালের সুনামি ও ২০১৬ সালের ভূমিকম্প তারা ইতিমধ্যেই কাটিয়ে উঠেছেন। বন্যার কারণে সৃষ্ট দুর্ভোগ থেকেও জাপানের জনগণ দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবেন এ বিষয়ে সন্দেহ নাই।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা। ছবি: দ্য আটলান্টিক
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা। ছবি: দ্য আটলান্টিক
উদ্ধার কার্যক্রম। ছবি: দ্য আটলান্টিক
উদ্ধার কার্যক্রম। ছবি: দ্য আটলান্টিক
নিরাপদ আশ্রয়ে যাচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। ছবি: দ্য আটলান্টিক
নিরাপদ আশ্রয়ে যাচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। ছবি: দ্য আটলান্টিক
বাড়ির ছাদে দুর্গতরা। ছবি: দ্য আটলান্টিক
বাড়ির ছাদে দুর্গতরা। ছবি: দ্য আটলান্টিক

মো. ফজলুল করিম, পিএইচডি: শিক্ষক ও গবেষক, কুমামতো বিশ্ববিদ্যালয়, জাপান এবং মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ।