যেতে নাহি দেব তবু যেতে দিতে হয়

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যে বিভিন্ন শহরে বাস করেন কিছু বাংলাদেশি। এই প্রবাস জীবনে তারা বেশির ভাগই নিজেদের মধ্য আনন্দ বেদনা, বিপদ আপদ, সামাজিক অনুষ্ঠান, সবকিছুতেই নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেন। তাদের মধ্যে বাপি-মৌসুমী ও ইমরান-পায়েল পরিবার অন্যতম। তারা দীর্ঘদিন ধরে অ্যারিজোনায় বসবাস করছিলেন। এই দুই পরিবার অ্যারিজোনার বাঙালি কমিউনিটির সকলের মধ্যমণি ও সবার খুব প্রিয় মুখ। কমিউনিটিতে এই দুই পরিবারের অবদান অপরিসীম।

এই দুই পরিবার অ্যারিজোনা থেকে চলে যাচ্ছেন যুক্তরাজ্যের অন্য অঙ্গরাজ্যে। এ উপলক্ষে তাদের জন্য সম্প্রতি আয়োজন করা হয় এক বিদায় সংবর্ধনার। চমৎকার একটি বিদায় সংবর্ধনার আয়োজন করেছিল তানমি, নির্ঝর, সাবেরা ও মুন্নি আপা। এই আয়োজনে সমবেত হয়েছিলেন স্থানীয় প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

বাপি ও মৌসুমী পরিবারের সঙ্গে প্রবাসীরা
বাপি ও মৌসুমী পরিবারের সঙ্গে প্রবাসীরা

বাপি-মৌসুমী বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। সহপাঠী (৯২ ব্যাচ) ছিলেন। বুয়েটে পড়াশোনা শেষে তারা পরবর্তীতে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন এবং দুজনই উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। এএসইউ থেকে মাস্টার্স করার পর চকারিসূত্রে অ্যারিজোনায় বসবাস শুরু করেন। গত ১৭ বছরে নিজ পেশায় তারা সাফল্যের চরম শিখরে পৌঁছান। এই দীর্ঘ সংসার জীবনে তাদের দুই পুত্র রাইদ ও জায়ান। সকল কাজের কাজি বাপি ও মৌসুমী ভ্রমণপিপাসু, শৌখিন আলোকচিত্রী, উচ্ছল প্রাণবন্ত, যেকোনো কাজে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে প্রথম সারির মুখ। স্থানীয় শিকড় বাংলা স্কুলের জন্মলগ্ন থেকে তাদের অবদান অসামান্য। বাপিকে ছাড়া কোরবানি ঈদের গরু জবাই চিন্তাই করা যায় না। মৌসুমীর আরও ভালো চাকরির অফারের কারণেই তারা ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা ক্লারাতে চলে যাচ্ছেন।

ইমরান ও পায়েল পরিবারের সঙ্গে প্রবাসীরা
ইমরান ও পায়েল পরিবারের সঙ্গে প্রবাসীরা

অন্যদিকে অতিথিপরায়ণ ইমরান ও পায়েলের আতিথেয়তার কথা লিখে শেষ করা যাবে না। ভালো রান্না, অমায়িক ব্যবহার, পরিপাটি গোছানো পরিবার। ফ্যাশন সচেতনতা, দেশি শাকসবজির বাগানপ্রেমী পরিবারটির কথা লিখে শেষ করা যাবে না। ইমরান টুসান থেকে মাস্টার্স শেষ করার পর প্রথম জীবনে আইটি পেশায় চাকরি করার পর পরবর্তীতে সফল আইটি ব্যবসায়ী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। গত ১৮ বৎসর অ্যারিজোনাতে বসবাসকারী ভ্রমণপিপাসু এই সদালাপী পরিবার দুই পুত্র জোভান ও আরমেলকে নিয়ে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চষে বেরিয়েছে। তারা যাচ্ছেন ওয়াশিংটন ডিসিতে।

ইমরান ও পায়েল পরিবারের সঙ্গে প্রবাসীরা
ইমরান ও পায়েল পরিবারের সঙ্গে প্রবাসীরা

তোমরা ভালো থেকো। তোমাদের সুস্থ ও সুন্দর ভবিষ্যৎ কামনায় আমরা অ্যারিজোনাবাসী। বাপি-মৌসুমী ও ইমরান-পায়েল, আমরা আশায় থাকব তোমরা আবার অ্যারিজোনায় ফিরে আসবে, অ্যারিজোনাবাসী তোমাদের পথ চেয়ে বসে থাকবে।

মাসুদ রেজা: অ্যারিজোনা, যুক্তরাষ্ট্র