সিডনি মাতালেন মাকসুদ ও চিরকুট
অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে গানের তালে হই-হুল্লোড় আর জমজমাট আয়োজনের মধ্য দিয়ে হয়ে গেল বাংলাদেশিদের জন্য আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান—বাংলাদেশ নাইট ২০১৮। আর এ অনুষ্ঠানে দর্শক মাতিয়ে গেল জনপ্রিয় দুই ব্যান্ড দল চিরকুট এবং মাকসুদ ও ঢাকা। গতকাল শনিবার (১৩ অক্টোবর) বিকেলে সিডনির নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের সায়েন্স থিয়েটারে অনুষ্ঠিত হয় এ অনুষ্ঠান।
শনিবার ছিল সাপ্তাহিক ছুটির প্রথম দিন। বাংলাদেশিরা সাধারণত ছুটির দিনেই আয়োজন করেন নানা আনন্দ আয়োজন। কিন্তু সিডনিতে গতকাল ছিল বৃষ্টিস্নাত আবহাওয়া। এই আবহাওয়া উপেক্ষা করেই প্রিয় ব্যান্ডের গান শুনতে সিডনির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। আগত দর্শকদের বেশির ভাগকেই সপরিবারে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। ছোট বড় সকল বয়সী ভক্তদের আগমনে সরগরম ওঠে সায়েন্স থিয়েটার। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই জনসমাগমে কোলাহল শুরু হয়ে যায় থিয়েটারের ভেতর ও বাইরে।
অনুষ্ঠানে দুই প্রজন্মের মেলবন্ধন নজরে পরে। মাকসুদ ও ঢাকা ব্যান্ডের গানে গলা মেলাতে দেখা যায় আশি ও নব্বই দশকের শ্রোতাদের। আর চিরকুটের সঙ্গে গলা ছেড়ে গান ধরেন এ যুগের ছেলেমেয়েরা। একই ছাদের নিচে দুই প্রজন্মের শ্রোতাদের একসঙ্গে মেতে ওঠা ছিল এবারের আয়োজনের সবচেয়ে উপভোগ্য বিষয়।
অনুষ্ঠানে সপরিবারে আগত সিডনির ইঙ্গেলবার্নে বসবাসরত সেলিমা বেগম বলেন, ‘আমি মাকসুদের খুবই ভক্ত একজন মানুষ। তার সবগুলো ক্যাসেট একসময় আমার সংগ্রহে ছিল। আজ প্রবাসে জীবনের এতগুলো বছর পরেও মাকসুদের গানে গানে ফিরে গিয়েছিলাম সেই পুরোনো দিনে।
সিডনির রেন্ডউইকের বাসিন্দা আফসার খান জানালেন তার ভালো লাগার কথা। বললেন, ‘আমার বেড়ে ওঠার সময়ে যে ব্যান্ড দলগুলোর গানে মেতে থাকতাম প্রতিটা বিকেল, তার মধ্যে ফিডব্যাক ছিল অন্যতম। মাকসুদ ফিডব্যাক ছাড়লেন কিন্তু আমি ছাড়িনি তাকে। সেই ভালোবাসার পুনঃপ্রচার দেখলাম আজ এখানে’।
এ দিকে সিডনিতে আসা নতুন যুবক সোহান ফয়সাল জানালেন তিনি চিরকুটের জীবনমরণ ভক্ত। বললেন, ‘দেশে যখন ছিলাম, বন্ধুদের আড্ডার মাঝে চিরকুটের গান গাইতাম একসঙ্গে। সেই আড্ডার বিকেলটা খুব মিস করি পরবাসে। সেই অভাবটা অনেকটাই পুষিয়ে গেল এ অনুষ্ঠানে। ভালোবাসি চিরকুটকে।’
অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশিদের আনন্দ দিতে পেরেছে। এতে পরিশ্রম সার্থক বলে মনে করছেন বাংলাদেশ নাইটের আয়োজক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন লিসেন ফর-এর অন্যতম সদস্য মাহমুদ হোসেন ইমন। তিনি বললেন, ‘প্রবাসীদের দেশের প্রতি ভালোবাসাটা একটু তাজা করতে পারাটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। আশা করছি ভবিষ্যতেও এমনই ভালো কিছু দিতে পারব।’